নভেম্বর ১৬, ২০২৪

নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলার নরোত্তমপুর ইউনিয়নের ফলাহারী গ্রামে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি) আওতায় একটি নতুন সড়ক নির্মাণের ৭ দিনের মধ্যেই ভেঙ্গে গেল সড়ক। উঠেছে সিডিউল বহির্ভূত ভাবে সড়ক নিমার্ণ ও অনিয়মের অভিযোগ।

সড়ক নির্মাণে নিম্নমানের ইট-বালু ও ইটের খোয়া, শেওলা যুক্ত মরা পাথর ব্যবহার করা হয়েছে। এছাড়াও সড়কের পাশে থাকা গাইড ওয়াল গুলোও নিম্নমানের ইট দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে।

এলজিইডি কবিরহাট উপজেলা কার্যালয়ের তত্ত্বাবধানে এই সড়ক নির্মাণ হয়েছে। কাজ পেয়েছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স মুবিন এন্টারপ্রাইজ। তবে কাজটি করছেন মুকুল নামে এক ব্যক্তি।

এলজিইডি কবিরহাট উপজেলা কার্যালয়ের সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালের শুরুর দিকে ১ কোটি ৬১ লাখ টাকা ব্যয়ে কবিরহাট উপজেলার নরোত্তমপুর ইউনিয়নের করম বকস বাজার টু বানদত্ত বাজার সড়কের ২ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ কাজ শুরু হয়। যা শেষ হয়েছে এ বছরের ২৭ জুন।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, শিডিউলের তোয়াক্কা না করে ইচ্ছেমতো সড়কে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ করেছেন ঠিকাদার। কাজের শুরু থেকেই তদারকি প্রতিষ্ঠানের যোগসাজশে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান এসব অনিয়ম করেছে। এজেন্টে নিম্নমানের ইট, খোয়ার পরিবর্তে ব্যবহার করা হয়েছে একেবারে নিম্নমানের ইটের খোয়া, নিম্নমানের বালু, শেওলা যুক্ত মরা পাথর, নিম্নমানের বিটুমিন।

নিন্মমানের কাজের বিষয়টি স্থানীয়দের নজরে পড়লে স্থানীয় জনগণ সড়কের কাজে বাঁধা দেন এবং ওই সড়ক থেকে নিম্নমানের সামগ্রী সরিয়ে নিতে বলেন। তারপর কবিরহাট উপজেলা প্রকৌশলী বিভাগকে মৌখিক ভাবে জানিয়েও কোন ফল পাওয়া যায়নি।

নিম্নমানের পাথর দিয়ে বৃষ্টির মধ্যেই সড়কটি পিচ ঢালাই করা হয়েছে। বিক্ষুদ্ধ এলাকাবাসী বলছে, এই বর্ষায় সব উঠে যাবে। এত খারাপ রাস্তা করার কী দরকার? স্থানীয়রা তদারকি প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানান, উচ্চ পর্যায় থেকে কবিরহাট উপজেলার সকল ইউনিয়নের স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) নোয়াখালীর আওতায় বাস্তবায়িত কাজ গুলো সঠিক ভাবে তদন্ত করা হলে আরো অনেক অনিয়ম দুর্নীতির তথ্য বেরিয়ে আসবে।

কারণ তদারকি প্রতিষ্ঠানের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তারা সরকারি সিডিউল অনুযায়ী উন্নয়ন কাজের মান নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ। এটা অনেকটা ওপেন সিক্রেট।

সড়কের বিষয়ে জানতে ঠিকাদার মুকুলের মুঠোফোনে কয়েকবার কল করা হলে, তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

এলাকার লোকজনের অভিযোগের ভিত্তিতে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সড়কের ৫-৬ অংশ ভেঙ্গে গেছে। একটি অংশে সড়কের উপর বিদ্যুতের পিলার রেখেই পিচ ঢালাই করা হয়েছে, অপর অংশ ভেঙ্গে গেছে। এই অবস্থায় জরুরী অবস্থায় কোন গাড়ি কিংবা এ্যাম্বুলেন্স রোগী নিয়ে যেতে পারবেনা।

কবিরহাট উপজেলা প্রকৌশলী হরষিত কুমার সাহা বলেন, সড়কের যে অংশ গুলো ভেঙ্গে গেছে, সে গুলো আমরা দেখবো। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সড়ক নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে তিনি বলেন, এখন অনেক ঠিকাদার কাজ করতে চায়না, কারণ সব কিছুর দাম বেড়ে গেছে, বিটুমিনের দাম বেড়ে গেছে। তিনি আরও বলেন, এটা গ্রাম্য সড়ক। তারা অনিচ্ছা সত্ত্বেও কাজ করছে। আপনারা হাইওয়ে যে সড়ক গুলো হয় ওই গুলো দেখেন।

 

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...