দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জনের জন্য আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভারত, রাশিয়া, চীন, ভুটান, ফিলিপাইন, সিঙ্গাপুর, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, পাকিস্তান, ব্রাজিল এবং মরক্কো অভিনন্দন জানিয়েছে। সোমবার সকালে দেশগুলোর রাষ্ট্রদূতরা প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং জানিয়েছে, ঢাকায় নিযুক্ত এই বিদেশি রাষ্ট্রদূতরা ছাড়াও শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন আগা খান ডিপ্লোমেটিক রিপ্রেজেনটেটিভ-এর প্রতিনিধিরা।
রবিবার অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনে ২৯৯টি আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ ২২৪টিতে জয়লাভ করে সংখ্যা গরিষ্ঠতা অর্জন করেছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দলটি টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করতে যাচ্ছে। সাক্ষাৎকালে নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ বিজয়ী হওয়ায় দলের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে স্ব স্ব দেশের পক্ষ থেকে অভিনন্দন জানান রাষ্ট্রদূতরা। তারা বাংলাদেশের সাথে সহযোগিতা অব্যাহত রাখার দৃঢ প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। এসময় প্রধানমন্ত্রীও তাদের ধন্যবাদ জানান এবং বাংলাদেশের উন্নয়ন-অগ্রযাত্রায় সহযোগিতা কামনা করেন।
সোমবার সকালে গণভবনে শেখ হাসিনার সাথে দেখা করে ফুলের তোড়া দিয়ে শুভেচ্ছা জানান বাংলাদেশে দায়িত্বে থাকা ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা। এ সময় ভারত সরকার ও দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির পক্ষ থেকে নির্বাচনে বিজয়ের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে উষ্ণ শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান তিনি।
প্রণয় ভার্মা আশা প্রকাশ করেন, তার সরকারের নতুন মেয়াদে একে অপরের জাতীয় উন্নয়নের সমর্থনে দ্বিপাক্ষিক অংশীদারিত্বের গতি আরও শক্তিশালী ও প্রবৃদ্ধি হবে। তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের জনগণকে তাদের দীর্ঘদিনের বন্ধুত্বের দ্বারা পরিচালিত এবং মুক্তিযুদ্ধে তাদের যৌথ আত্মত্যাগের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে একটি স্থিতিশীল, প্রগতিশীল ও সমৃদ্ধশালী জাতির রূপকল্প বাস্তবায়নে সমর্থন অব্যাহত রাখবে।
একই দিন গণভবনে শেখ হাসিনার সাথে দেখা করে অভিনন্দন বার্তা পৌঁছে দেন ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন। এই সময়ে চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন একটি নৌকা উপহার দেন। এর আগে ২০১৮ সালেও তৎকালীন চীনের রাষ্ট্রদূতও প্রধানমন্ত্রীকে নৌকা উপহার দিয়েছিলেন।
চীনা দূতাবাসের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে রাষ্ট্রদূত জানান, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকারের সঙ্গে কাজ করার বিষয়ে চীন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। যাতে করে দুই দেশের বন্ধুত্ব ও কৌশলগত সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়। বাংলাদেশের আধুনিকায়নের জন্য চীন সবচেয়ে বিশ্বস্ত ও বিশ্বাসযোগ্য বন্ধু হিসেবে সবসময় কাজ করবে। চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিনপিং ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দুই দেশ পারস্পরিক শ্রদ্ধার একটি দৃষ্টান্ত বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
শেখ হাসিনার সঙ্গে আলোচনার সময় রাষ্ট্রদূত ওয়েন শেখ হাসিনাকে আশ্বাস দেন, বাংলাদেশের আধুনিকায়নের ক্ষেত্রে চীন সবসময় সবচেয়ে বিশ্বস্ত সহযোগী ও বাংলাদেশের নির্ভরযেগ্য বন্ধু হিসেবে ভূমিকা রাখবে।
সোমবার গণভবনে শেখ হাসিনার সাথে দেখা করে ফুলের তোড়া দিয়ে শুভেচ্ছা জানান ঢাকায় নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেক্সান্ডার মান্তিতস্কি। এ ছাড়া ভুটান, ফিলিপাইন, সিঙ্গাপুর, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, পাকিস্তান ও ব্রাজিলের রাষ্ট্রদূতরা এবং মরক্কোর রাষ্ট্রদূত ও ডিন অব দ্য ডিপ্লোমেটিক কোর আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন।
এদিকে আওয়ামী লীগের সভানেত্রীকে অভিনন্দন জানিয়ে বার্তা পাঠিয়েছেন ভুটানের চতুর্থ রাজা জিগমে সিগমে ওয়াংচুক। ভুটানে বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্টতা অর্জনের জন্য উষ্ণ অভিনন্দন জানিয়ে ভুটানের চতুর্থ রাজা উল্লেখ করেন যে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশে শান্তি, স্থিতিশীলতা, ও অভূতপূর্ব অর্থনৈতিক উন্নতি সাধিত হয়েছে। ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসেবে ভুটান এই অনন্য সাধারণ অর্জনে বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করছে। ভুটান ও বাংলাদেশের মধ্যে বিদ্যমান চমৎকার নৈকট্যপূর্ণ ও বিশেষ সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে বলে অভিনন্দনপত্রে প্রত্যয় ব্যক্ত করেন ওই দেশের রাজা।