উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ার পাল্টাপাল্টি ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের পর এমনিতেই কোরীয় উপদ্বীপে উত্তেজনা চলছে। এর মধ্যেই ব্যাপক সামরিক মহড়া চালিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র। এই পরিস্থিতিতে সিউল ও ওয়াশিংটনের বিরুদ্ধে নির্মম পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে উত্তর কোরিয়া।
একইসঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক মহড়ার সমালোচনাও করেছে দেশটি। সোমবার (৭ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দক্ষিণ কোরিয়া-যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক সামরিক মহড়া ‘খোলাখুলি উসকানি এবং বিপজ্জনক যুদ্ধ মহড়া’ ছিল বলে উত্তর কোরিয়ার সামরিক বাহিনীর বরাতে সোমবার জানিয়েছে দেশটির সরকারি সংবাদমাধ্যম দ্য কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সি (কেসিএনএ)।
দক্ষিণ কোরিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি ছয় দিনের বিমান মহড়া চালায়। এর জবাবে গত সপ্তাহে, উত্তর কোরিয়া সম্ভাব্য আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (আইসিবিএম)-সহ একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করেছে এবং সমুদ্রে কয়েকশ কামানের গোলা ছুঁড়েছে।
উত্তর কোরিয়ার সামরিক বাহিনী বলেছে, দুই দেশের মধ্যকার এই মহড়া ছিল পিয়ংইয়ংয়ের জন্য ‘উন্মুক্ত উসকানি’। ‘উদ্দেশ্যমূলকভাবে উত্তেজনা বাড়ানোর লক্ষ্যে’ খুব উচ্চ আক্রমণাত্মক প্রকৃতির বিপজ্জনক এই যুদ্ধ মহড়া চালানো হয়েছে।
উত্তরের সেনাবাহিনীর দাবি, শত্রুদের ক্রমাগত যুদ্ধের মনোভাব ধ্বংস করতে তাদের বিমান ঘাঁটি এবং বিমানের পাশাপাশি দক্ষিণ কোরিয়ার একটি প্রধান শহরে বিভিন্ন আক্রমণের অনুকরণে কার্যক্রম পরিচালনা করেছে তারা।
এছাড়া গত ২ নভেম্বর উলসানের জলসীমার দিকে দুটি দৃশ্যত পারমাণবিক সক্ষমতা সম্পন্ন ‘কৌশলগত’ ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে উত্তর কোরিয়া। মূলত দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলীয় এই শহরেই একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং বড় শিল্পাঞ্চল রয়েছে।
উত্তর কোরিয়ান পিপলস আর্মির (কেপিএ) জেনারেল স্টাফ সিউল এবং ওয়াশিংটনকে ‘আরও অস্থিতিশীল পরিস্থিতি’ সৃষ্টির জন্য অভিযুক্ত করেছে এবং ‘টেকসই, দৃঢ় এবং অপ্রতিরোধ্য বাস্তবিক সামরিক পদক্ষেপের’ মাধ্যমে তাদের মহড়া মোকাবিলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
কেসিএনএ’র প্রকাশ করা প্রতিবেদনে উত্তর কোরিয়ান পিপলস আর্মির বরাতে বলা হয়েছে, ‘শত্রুদের উসকানিমূলক সামরিক পদক্ষেপ যতই ক্রমাগতভাবে এগিয়ে যাবে, কেপিএ ততই পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে এবং নির্মম-নির্দয়ভাবে তাদের মোকাবিলা করবে।’
খবর: রয়টার্স