নভেম্বর ১৬, ২০২৪

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চলমান অভিযানের মধ্যে সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ দেশত্যাগ করলেও, বিচারে দোষী হলে তাকে দেশে ফিরতেই হবে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
আজ রোববার দুপুরে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেন, বেনজীর আহমেদ বিদেশে থাকলেও বিচার চলবে, দোষী সাব্যস্ত হলে তাকে দেশে ফিরতেই হবে। সরকার কোনো ছাড় দেবে না।

পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইপিজি) ও র‍্যাবের সাবেক মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদের বিপুল সম্পদ নিয়ে সম্প্রতি কয়েকটি গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ হয়। এরপর তদন্তে নামে দুদক। আদালতের মাধ্যমে কয়েকশো বিঘা জমিসহ বহু স্থাবর, অস্থাবর সম্পত্তি জব্দ এবং প্রায় তিন ডজন ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করা হয়েছে।

বেনজীর, তার স্ত্রী ও তিন মেয়েকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছে অনুসন্ধান কর্মকর্তা। কিন্তু এর আগেই বেনজীর আহমেদ স্বপরিবারে বিদেশে চলে গেছেন বলে গণমাধ্যমে খবর বেরিয়েছে।

এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, বেনজীর আহমেদের ঘটনা দুদক তদন্ত করছে। তার বিরুদ্ধে তদন্ত, মামলা, গ্রেফতার -সবকিছু আইনি প্রক্রিয়ার মধ্যে আছে। সরকার এখানে দুদককে এড়িয়ে আগ বাড়িয়ে কেনো ব্যবস্থা নেবে?

আর সরকারের দুর্নীতিবিরোধী যেসব সংস্থা আছে তাদের কোনো ব্যর্থতা থাকলে তারও বিচার হবে বলে জানান তিনি।

আওয়ামী লীগের সাধারণ প্রশ্ন তোলেন, বেনজীর যে এত এত অন্যায় করলো, গণমাধ্যম কী করেছে? একটা সংবাদও করলো না কেনো?

সেতুমন্ত্রী বলেন, এ দেশে পঁচাত্তর পরবর্তী সময় কোনো শাসক ও সরকার দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সৎ সাহস দেখাতে পারেনি। শেখ হাসিনার সরকার সেটা দেখিয়েছে। ব্যক্তি দুর্নীতি করতে পারে। দুর্নীতি করার পর সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি কি সেটা দেখতে হবে।

বিএনপি ক্ষমতায় থাকাতে দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি মন্তব্য করে তিনি বলেন, এ দেশ থেকে টাকা পাচারের সংস্কৃতি শুরু হয়েছে বিএনপির আমল থেকে। ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর দুর্নীতি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পায়। পরপর পাঁচবার দুর্নীতিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করে বিএনপির দণ্ডিত পলাতক নেতা তারেক রহমান বিদেশে বিলাসী জীবনযাপন করছে।

সরকারের সহায়তায় বেনজীর আহমেদ বিদেশে পালিয়েছে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলের এমন দাবি প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, সরকারের কারা গিয়ে তাকে বিমানে তুলে দিয়েছে? কোন অথরিটি গিয়ে তাকে তুলে দিয়েছে? অন্ধকারে ঢিল ছুড়বেন না।

তিনি বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী কোনো প্রকার দুর্নীতি করেন বা দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেন এমন অভিযোগ তার বিরুদ্ধে দেশে-বিদেশে কেউ দিতে পারেনি। শেখ হাসিনা আপাদমস্তক সৎ রাজনীতিক- এটা বিশ্বে স্বীকৃত। তার জনপ্রিয়তার মূলে তিনি অত্যন্ত পরিশ্রম ও সৎ জীবনযাপন করেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির প্রধান নেতাই দণ্ডিত পলাতক তারেক রহমান চিহ্নিত অপরাধী। এমন লোক যে দলে নেতৃত্ব দেয়, সেই দল জনগণের কল্যাণে কাজ করতে পারে না। জনগণের বিশ্বাসও রাখতে পারে না।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সবুর, উপ দপ্তর সম্পাদক অ্যাডভোকেট সায়েম খান সহ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...