অক্টোবর ১৮, ২০২৪

কলিকাতা প্রতিনিধি

সেই আজকের কথা তো নয় , দীর্ঘ ১২ বছর আগের কথা। ২০১০ সাল থেকে পতন চলছেই । তদন্ত কমিটি গঠন হলো , কতই না তদন্ত হলো। লাভ হলো কি ? বিনিয়োগকারীরা কি পুঁজিবাজারের সুদিন দেখতে পেলেন ?

২০১০ সালের ধস পরবর্তী সকল দোষ চাপানো হলো তৎকালীন পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রণ সংস্থার বড় কর্তার উপর । তাকে অপসারণ করিয়ে নতুন কর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হলো।  মাত্র কয়েকটি বছর যেতে না যেতেই তাকেও বিভিন্ন অভিযোগে অভিযুক্ত করা হলো। বিনিয়োগকারীরা তাকে অপসারণের জন্য রাজপথে নেমে তীব্র প্রতিবাদ করলেন। ফলাফল তাকেও অসম্মানিত হয়ে বিদায় নিতে হলো।

তবে বিদায় বেলা বড় কর্তাও বলে গেলেন তাকে স্বাধীন ভাবে কাজের পরিবেশ দেওয়া হয়নি , এমন কি বিভিন্ন কোম্পানিকে লিস্টিংয়ে চাপ সৃষ্টি করা হতো। তিনিও কাওকে  দোষ চাপিয়ে বিদায় নিলেন।

করোনা কালীন জটিলতায় ২০২০ সালে সরকারি নির্দেশনায় বেশ কিছু দিন পুঁজিবাজার বন্ধ রেখে নতুন কর্তাদের দায়িত্ব দেওয়া হলো। অনেকটা চাপের মধ্যে দায়িত্ব নেওয়ার পরও শুরুটা ভালোই যাচ্ছিলো। মার্কেট ট্রেড ভলিউম ৩০০০ কোটিতে পৌঁছে গিয়েছিলো। বিনিয়োগকারীরা নতুন করে বিনিয়োগমুখী হচ্ছিলেন। ২০২১ সালের শেষের দিকে বিশেষ এক বন্ডের যাত্রা শুরুর পরবর্তী বাংলাদেশ ব্যাংক এক্সপ্রোজার আইনে বন্ড কে অন্তর্ভুক্ত পরবর্তী কালো মেঘে ঢেকে যায় পুঁজিবাজার।

এখানে স্পষ্ট কোন্দল লক্ষণীয় ? বাংলাদেশ ব্যাঙ্ক এবং নিয়ন্ত্রণ সংস্থা দু পক্ষ দোষাদোষী করেই যাচ্ছিলেন  , উপরের মহল সব দেখেও ছিলেন নিচ্চুপ। ফলাফল নতুন করে বিনিয়োগ করে আবারো পথে বসতে হয়েছে বিনিয়োগকারীদের।

ইউক্রেন – রাশিয়া যুদ্ধ শুরু হলো , পতন ত্বরান্বিত হলো। ৩০০০ কোটি টাকার ট্রেড ভলিউম আজ চলে এসেছে ৩০০ কোটির নিচে। যুদ্ধের মধ্যেও ভারতের পুঁজিবাজারের সূচক উত্থানে নতুন মাত্রায় পৌঁছে গেলেও যুদ্ধকে দোষী করে পতনের ধারায় বাংলাদেশের পুঁজিবাজার।

দীর্ঘ ১২ বছর ধরেই পতনের ধারায় বাংলাদেশের পুঁজিবাজার। সংকটময় পরিস্থিতি মোকাবেলায় ফ্লোর প্রাইস নির্ধারণ করা হলেও একটি মহল অখুশি। বিনিয়োগকারীদের আরো পথে বসাতে চান চক্রটি , বিনিয়োগকারীদের দীঘদিনের লুটপাটের অভ্যাস বলে কথা। দীর্ঘ ১২ টি বছর একের পর এক আইপিও , রাইট শেয়ার ইস্যু , বোনাস শেয়ারকে বর্তমান ইনডেক্স থেকে বাদ দিলে ২০১০ সালের তুলনায় এখনো অনেক পিছিয়ে ।

সাধারন বিনিয়োগকারীদের লুটতে না পারার সকল দোষ চাপাচ্ছেন অবলা ফ্লোর প্রাইস এবং সেইদিন দায়িত্বের ভার নেওয়া কমিশনকে।

এখনো গঠনমূলক পরিবর্তন লক্ষণীয় নয় , বিদেশী বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে পারেনি। দেশের সাধারণ মানুষ মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন পুঁজিবাজার থেকে , পুঁজিবাজারের বিনিয়োগে আকৃষ্ট নন তারা । সাধারণ মানুষদের বার বার আহ্বান করে পথে বসানোর মানসিকতার ফল বিশাল জনগোষ্ঠী এখনও পুঁজিবাজার বিমুখ 

বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে দোষাদোষীর রঙ্গমঞ্চে সর্বস্ব হারাচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা । দিনের পর দিন কমছে তাদের বিনিয়োগকৃত অর্থ। সাধারণ বিনিয়োগকারীরা পুঁজিবাজারে নেতিবাচক প্রভাবের জন্য দায়ী করছেন বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে সমন্বয়হীনতা এবং পুঁজিবাজারে অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিভিন্ন মহলের অবাঞ্ছিত হস্তক্ষেপকে ।

সোনালি চক্রবর্তী

বাঁকুড়া  , পশ্চিমবঙ্গ 

 

 

 

 

 

 

 

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...