নভেম্বর ১৪, ২০২৪

অবশেষে থেমেছে গ্রামীনফোনের পাগলা ঘোড়া। টানা কয়েকদিন রুদ্ধশ্বাস দৌঁড়ের পর আজ পুঁজিবাজারে কমেছে দেশের সবচেয়ে বড় মোবাইলফোন অপারেটর গ্রামীণফোনের (জিপি) শেয়ারের দাম।

গত ৫ আগস্ট ঘটে যাওয়া রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকেই উর্ধমুখী ছিল গ্রামীণফোনের শেয়ারের দাম। লেনদেনও বেড়েছিল বিপুল পরিমাণ। একাধিক দিন এই শেয়ার ছিল লেনদেনে সবার শীর্ষে।

পর থেকে টানা বেড়ে চলেছে ব্লুচিপ কোম্পানিটির শেয়ারের দাম। লেনদেনও বেড়েছে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে। সোমবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) কোম্পানিটি লেনদেনে শীর্ষস্থান দখল করে নেয়। তবে আজ বৃহস্পতিবার লেনদেনে শীর্ষস্থানটি ধরে রাখতে সক্ষম হলেও মূল্যবৃদ্ধির ধারা থেকে ছিটকে পড়েছে।

গত ৬ আগস্ট থেকে গতকাল পর্যন্ত ৭ দিন লেনদেন হয়েছে পুঁজিবাজারে। এর মধ্যে ৬দিনই শেয়ারটির দাম বেড়েছে। আর একদিন ছিলো অপরিবর্তিত। এ সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম ২৪৭ টাকা ২০ পয়সা থেকে বেড়ে ৩৭৯ টাকা ২০ পয়সায় উঠেছিলো। এসময়ের মধ্যে গ্রামীণফোনের শেয়ারের দাম বেড়েছে ১৩২ টাকা বা ৫৩ দশমিক ৩৯ শতাংশ।

ডিএসইর পরিসংখ্যান অনুসারে, গত মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) গ্রামীণফোনের শেয়ারের দাম বেড়েছে ২১ টাকা ৬০ পয়সা (৮.৭৩%), পরদিন ২৩ টাকা ৫০ পয়সা (৮.৭৪%)। বৃহস্পতিবার শেয়ারটির দাম ২৫ টাকা ৫০ পয়সা (৮.৭২%) শতাংশ বেড়েছে। চলতি সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার ডিএসইতে শেয়ারটির দাম বাড়ে ২৭ টাকা ৮০ পয়সা। সোমবার বাজারে বড় দরপতনের দিনেও শেয়ারটি উর্ধমুখী ছিল, যদিও দরবৃদ্ধির হার ছিল আগের চারদিনের চেয়ে কম। এদিন শেয়ারটির দাম বেড়েছিলো ৯ টাকা ৯০ পয়সা (২.৮৬%)। মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) শেয়ারটির দাম ছিল অপরিবর্তিত। তবে বুধবার আবার শেয়ারটির দাম ২৩ টাকা ৭০ পয়সা (৬.৬৬%) বেড়ে ৩৭৯ টাকা ৫০ পয়সায় ওঠে।

চলতি সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার শেয়ারটির দর কমেছে। এদিন গ্রামীণের শেয়ার দর ২ টাকা ২০ পয়সা (০.৫৮%) কমে ৩৭৭ টাকা ৭০ পয়সায় নেমেছে।

বৃহস্পতিবার ডিএসই এদিন গ্রামীণফোনের ৮৫ কোটি ৫২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।

ক্ষুদ্রঋণদাতা প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ টেলিকম ও নরওয়ের টেলিনরের যৌথ উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণফোনকে গত ১৫ বছর ধরে প্রতিকূল পরিবেশে ব্যবসা করতে হয়েছে। গ্রামীণব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিরোধের কারণে বিদায়ী আওয়ামীলীগ সরকার সব সময় গ্রামীণফোনের প্রতি বিমাতাসুলভ আচরণ করেছে। ড. ইউনূসের প্রতি ক্ষোভ থেকে সরকার বারবার কোম্পানিটির উপর চড়াও হয়েছে। বকেয়া আয়কর দাবি, বকেয়া ভ্যাট দাবি, বিভিন্ন অজুহাতে জরিমানা করা, নতুন সিম ও প্যাকেজ বিক্রি বিক্রি বন্ধ রাখা ইত্যাদি উপায়ে কোম্পানিটির উপর রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করেছে সরকার।

গণঅভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামীলীগ সরকারের পতন এবং পরবর্তীতে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান করে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হলে স্রোত ঠিক বিপরীত দিকে ঘুরে যায়। এর প্রভাবে গ্রামীণফোনের শেয়ারের দাম বাড়তে থাকে। তবে মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে শেয়ারটির দাম ৫৩ শতাংশ বেড়ে যাওয়ায় অনেক বিনিয়োগকারী শেয়ার বিক্রি করে মুনাফা তুলে নেন। তাতে বৃহস্পতিবার শেয়ারটির মূল্য সংশোধন হয়।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...