নভেম্বর ১৬, ২০২৪

ফরচুন বরিশালের ব্যাটারদের বড় কোন বিপদেই ফেলতে পারেনি সাকিব আল হাসানের দল। ফলে বিপিএলের ১০ম আসরের শুরুটা জয় দিয়েই করল তামিম ইকবালের দল। ১৩৫ রানের সহজ লক্ষ্য তাড়ায় শুরুটা বেশ ভালোই করেন তামিম ইকবাল এবং ইব্রাহিম জাদরান। তারা দুজনে মিলে ফরচুন বরিশালকে ভালোভাবেই এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন। তবে তাদের জুটি বড় হতে দেননি সাকিব আল হাসান।

বোলিংয়ে এসে নিজের দ্বিতীয় বলেই ইব্রাহিমকে ফেরান বাঁহাতি এই স্পিনার। সাকিবের বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে শেখ মেহেদীকে ক্যাচ দিয়েছেন ১২ রান করা ইব্রাহিম। শুরু থেকেই আক্রমণাত্বক ব্যাটিং করা তামিমকে ফিরিয়েছেন মোহাম্মদ নবি। ডানহাতি এই অফ স্পিনারের চতুর্থ বলে ডাউন উইকেটে এসে ছক্কা মারেন তামিম। পরের বলে আবারও একই শট খেলতে গিয়েছিলেন বাঁহাতি এই ওপেনার। তবে ব্যাটে-বলে করতে না পারায় স্টাম্পিং হয়ে ফিরতে হয়েছে ২৪ বলে ৩৫ রান করা তামিমকে। পরের ওভারে ফিরেছেন সৌম্য সরকারও।

হাসান মুরাদের বলে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে টপ এজ হয়ে মিড উইকেটে নবিকে ক্যাচ দিয়েছেন। সৌম্য আউট হয়েছেন মাত্র ১ রানে। তামিম ও সৌম্যকে দ্রত হারালেও মেহেদি হাসান মিরাজ ও মুশফিকুর রহিমের ব্যাটে একশোর পথে হাঁটতে থাকে বরিশাল। তাদের ব্যাটের দলীয় ১০০’র পথেও হাঁটছিল বরিশাল। কিন্তু হাসান মুরাদকে স্লগ সুইপ মারতে গয়ে ব্রেন্ডন কিংয়ের হাতে ধরা পড়েন মিরাজ। ১৮ বলে ২০ রান করে আউট হন এই অলরাউন্ডার।

এরপর আউট হন মুশফিকও। সাকিবের বলে বোল্ড হয়ে তিনি ফিরলেও ক্রিজে এসে শোয়েব মালিককে নিয়ে দলকে জয়ের পথে নিয়ে যাওয়ার কাজটা সহজ করে দেন মাহমুদউল্লাহ। ১৯ম ওভারের প্রথম বলে হাসান মাহমুদকে ছকা হাঁকিয়ে ব্যবধান কমিয়ে আনেন মাহমুদউল্লাহ। এরপর অবশ্য পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি বরিশালকে, মাহেদিকে ছক্কা হাঁকিয়ে এই জুটিতেই ৫ উইকেট হাতে তামিম ইকবালের দলের জয় নিশ্চিত করেন মাহমুদউল্লাহ।

এর আগে নিজেদের প্রথম ম্যাচে আগে ব্যাটিং করতে নেমে মোহাম্মদ ইমরান ও খালেদ আহমেদের তোপের মুখে পড়েছিল রংপুর রাইডার্স। তারা দলীয় ৩১ রানের মধ্যে হারিয়ে ফেলে ৪ উইকেট। এরপর নুরুল হাসান সোহান, শামীম পাটোয়ারি ও শেখ মেহেদীর ব্যাটে ভর করে ১৩৪ রানের পুঁজি নিশ্চিত করে দলটি। ৪ উইকেট নিয়ে রংপুরকে একাই অনেকটা ধসিয়ে দিয়েছেন খালেদ।

এই ম্যাচে টস জিতে বোলিংয়ে নেমে ফরচুন বরিশালকে দারুণ এক শুরু এনে দেন ইমরান। ইনিংসের প্রথম বলে বাঁহাতি এই পেসারের দুর্দান্ত এক ইয়র্কারে বোল্ড হন ব্রেন্ডন কিং। প্রথম বলে উইকেট পেলেও পরের পাঁচ বলে ১৩ রান দিয়েছেন ইমরান। পরের ওভারে বোলিংয়ে এসে রংপুরের দুই উইকেট তুলে নিয়েছেন সৈয়দ খালেদ আহমেদ। ডানহাতি এই পেসারের অফ স্টাম্পের বাইরের শর্ট লেংথ ডেলিভারিতে কাভারের উপর দিয়ে উড়িয়ে মারতে চেয়েছিলেন রনি তালুকদার।

প্রত্যাশার চেয়ে বেশি বাউন্স হওয়ায় ঠিকঠাক শট খেলতে পারেননি ডানহাতি এই ওপেনার। যার ফলে টপ এজ হয়ে থার্ডম্যানে ধরা পড়তে হয় ৫ রান করা রনিকে। ইনিংসের শেষ বলে সাকিব আল হাসানকেও ফিরিয়েছেন খালেদ। ডানহাতি এই পেসারের দারুণ এক ডেলিভারিতে বোল্ড হয়েছেন তিনি। সাকিব আউট হয়েছেন মাত্র ২ রানে। প্রথম দুই ওভারে ৩ উইকেট হারানোর পর রংপুরকে টেনে তোলার চেষ্টা করেন নুরুল হাসান সোহান ও আজমতউল্লাহ ওমরজাই।

তাদের জুটি অবশ্য বড় হতে দেননি দুনিথ ওয়াল্লালাগে। বাঁহাতি এই স্পিনারের লেংথ ডেলিভারিতে মিড অফ দিয়ে খেলেছিলেন ওমরজাই। তবে একটু দ্রুত সরে গিয়ে ফিরতি ক্যাচ নিলে হয় ওমরজাইকে। পাওয়ার প্লেতে ৩৭ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর সোহান ও শামীম পাটোয়ারির কাঁধে দায়িত্ব ছিল জুটি গড়া। তারা দুজনে চেষ্টা করলেও খুব বেশি বড় করতে পারেননি।

শোয়েব মালিকের অফ স্টাম্পের অনেকটা বাইরের বল খেলতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন সোহান। অনেকটা সরে গিয়ে দারুণ দক্ষতার সঙ্গে মুশফিকুর রহিম ক্যাচ লুফে নিলে ২৩ রানে ফিরতে হয় রংপুরের অধিনায়ককে। এরপর বরিশালকে ব্রেক থ্রু এনে দিয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। তিনি আউট করেছেন মোহাম্মদ নবিকে। মিরাজের ফুলার লেন্থের বলে স্কয়ার লেগে মালিককে ক্যাচ দিয়েছেন এই আফগান ব্যাটার।

একপ্রান্ত আগলে রাখা শামীম পাটোয়ারিকেও আউট করেছেন মিরাজ। তার অফ স্টাম্প বরাবর বল সুইপ করতে চেয়েছিলেন শামীম। বল ব্যাটের কানায় লেগে সোজা আঘাত হানে স্টাম্পে। ফলে ৩৩ বলে ৩৪ রান করে ফিরতে হয় শামীমকে। ইনিংসের শেষ দিকে রংপুরকে পথ দেখিয়েছেন শেখ মেহেদী। যদিও শেষ ওভারে খালেদের বলে ডিপ কাভারে ইব্রাহীম জাদরানের ডাইভিং ক্যাচে ফিরেছেন। পরের বলেই খালেদ আউট করেছেন হাসান মাহমুদকে। লেংথ বলে পুল করতে গিয়ে হাসান ধরা পড়েছেন ডিপ মিড উইকেটে রাকিবুল হাসানের হাতে। সালমান ইরশাদ ৮ ও হাসান মুরাদ ৭ রান করে অপরাজিত থেকে মাঠ ছেড়েছেন।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...