নভেম্বর ১৫, ২০২৪

চীনের স্বায়ত্তশাসিত দ্বীপ ভূখণ্ড তাইওয়ানে প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্ট নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। শনিবার সকাল থেকে রাজধানী তাইপেসহ দ্বীপটির বিভিন্ন এলাকায় শত শত ভোটকেন্দ্রে ভোটাররা ভোট দিচ্ছেন বলে জানিয়েছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম।

নির্বাচনে মূলত প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে তাইওয়ানের দুই বড় রাজনৈতিক দল ডেমোক্রেটিক প্রগ্রেসিভ পার্টি (ডিকেকে) এবং কুওমিনটাংয়ের মধ্যে। তবে সেখানকার রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ক্ষমতসাীন ডিকেকের জয়ের সম্ভাবনা বেশি। যদি ডিকেকে কাঙ্ক্ষিত জয় পায়, সেক্ষেত্রে টানা তৃতীয়বারের মতো সরকার গঠন করতে পারবে দলটি।

শনিবার বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলবে তাইওয়ানে। ভোটারকে ব্যালট পেপার ব্যবহারের মাধ্যমে সব ভোটারকে ভোট দিতে হবে। কোনো ভোটকেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন রাখেনি তাইওয়ানের নির্বাচন কমিশন। আজই শেষ হবে ভোটগ্রহণ এবং নির্বাচন কমিশন আশা করছে, দ্বীপ ভূখণ্ডটির ১ কোটি ৯৫ লাখ ভোটারের অধিকাংশই ভোট দেবেন। সন্ধ্যার দিকে ভোটের ফলাফল প্রকাশ করা হবে।

কয়েক দশক ধরে চলা সামরিক আইন ও কর্তৃত্ববাদী শাসনের অধ্যায় শেষ করে ১৯৯৬ সালে গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় প্রবেশ করে তাইওয়ান।

৩৬ হাজার ১৯৭ বর্গকিলোমিটার এই দ্বীপ ভূখণ্ডটির সঙ্গে চীনের সম্পর্ক বেশ জটিল। একসময় চীনের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে যুক্ত তাইওয়ানকে গত ৭ দশকেরও বেশি সময় ধরে নিজেদের বলে দাবি করে আসছে চীন। এই ইস্যুতে চীন বরাবর ‘ওয়ান চায়না’ নীতিতে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাসী। দেশটির প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং সম্প্রতি বলেছেন, চীনের মূল ভূখণ্ডে তাইওয়ানের অন্তর্ভুক্তি কেউ ঠেকাতে পারবে না।

নির্বাচনে ডিকেকের পক্ষে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হয়েছেন তাইওয়ানের বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম লাই। অন্যদিকে বৃহত্তম বিরোধী দল কুওমিনটাংয়ের পক্ষে প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন দলটির শীর্ষ নেতা হোন-ইউ ইহ। এই দুজন ছাড়াও নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তাইপের সাবেক মেয়র এবং তাইওয়ান পিপলস পার্টির (টিপিপি) শীর্ষ নেতা কো ওয়েন জে।

তাইওয়ানের সংবিধান অনুসারে, কোনো নাগরিক সেখানে টানা দুই বারের বেশি প্রেসিডেন্ট পদে থাকতে পারেন না। তাই এবারের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেননি ভূখণ্ডটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট সাই ইং ওয়েন।

অন্যদিকে তাইওয়ান সবসময়ই নিজেদের স্বাধীন ও সার্বভৌম বলে দাবি করে আসছে। তবে এই দাবিকে এখনও স্বীকৃতি দেয়নি বিশ্বের অধিকাংশ দেশ।

ডিকেকে বরাবরই ব্যাপকভাবে বেইজিংবিরোধী এবং বেইজিংকে তাইওয়ানের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের সবচেয়ে বড় হুমকি বলে প্রচার করে আসছে। দলটির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী উইলিয়াম লাইকে ‘সমস্যা সৃষ্টিকারী’ ব্যক্তির তকমা দিয়েছে চীন।

অন্যদিকে তাইওয়ানের প্রধান বিরোধী দল কুওমিনটাং তাইওয়ানের স্বাধীনতার পক্ষে থাকলেও চীনের সঙ্গে বন্ধুত্ব ও সদ্ভাব রাখার পক্ষে।

এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতা অনেকাংশে নির্ভর করছে চীন এবং তাইওয়ানের পারস্পরিক সম্পর্কের ওপর।

 

রয়টার্স/ বিবিসি

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...