ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) চার ব্রোকারেজ হাউজের ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের ইনভেস্টরস প্রোটেকশন ফান্ড থেকে আনুপাতিক হারে অর্থ দেওয়া শুরু করেছে। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিনের নির্দেশ এই অর্থ দেওয়া হচ্ছে।
ব্রোকারেজ হাউজগুলো হলো- ক্রেস্ট সিকিউরিটিজ, বাঙ্কো সিকিউরিটিজ লিমিটেড, তামহা সিকিউরিটিজ লিমিটেড ও শাহ মোহাম্মদ সগীর অ্যান্ড কোম্পানি লিমিটেড। এই চার ব্রোকারেজ হাউজের মালিকপক্ষ বিনিয়োগকারীদের অর্থ লোপাট করে লাপাত্তা হয়ে যায়।
ব্রোকারেজ হাউজ কর্তৃপক্ষের প্রতারণার শিকার হয়ে বিনিয়োগকারীরা নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন ও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের দারস্থ হন।
এই চার ব্রোকারেজ হাউজের চার হাজার ৫৮১ জন ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারী চলতি বছরের ১ অক্টোবরের মধ্যে ডিএসইতে অভিযোগ দাখিল করেন। এই বিনিয়োগকারীদের ইনভেস্টরস প্রোটেকশন ফান্ড থেকে ২৫ কোটি টাকা দেওয়া হবে। এসব বিনিয়োগকারীকে নিজ নিজ বিও হিসাবে উল্লিখিত ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে আনুপাতিক হারে প্রাপ্য অর্থ প্রদান করা হচ্ছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা খাইরুল বাশার আবু তাহের মোহাম্মদের তত্ত্বাবধানে সোমবার (১১ ডিসেম্বর) দুজন বিনিয়োগকারীর হাতে দুটি চেক হস্তান্তরের মাধ্যমে এই কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
চেক হস্তান্তর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিএসইসির কমিশনার মো. আব্দুল হালিম, চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হাফিজ মুহম্মদ হাসান বাবু, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. এটিএম তারিকুজ্জামান, প্রধান রেগুলেটরি কর্মকর্তা খায়রুল বাসার আবু তাহের মোহাম্মদ, প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা সাত্বিক আহমেদ শাহসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
অনুষ্ঠানে ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. এটিএম তারিকুজ্জামান বলেন, আজ আমরা অত্যন্ত আনন্দিত যে আপনাদের হাতে কিছু টাকা তুলে দিতে পারছি। আমরা আশা করছি পর্যায়ক্রমে সব বিনিয়োগকারীকে পাওনা পরিশোধ করতে পারবো। আমি বিশ্বাস করি, এর মাধ্যমে বাজারে একটা ইতিবাচক বার্তা যাবে।
তিনি বলেন, আমরা সব পাওনা পরিশোধের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। বিনিয়োগকারীরা যেন এ ধরনের ঘটনায় ভবিষ্যতে ক্ষতিগ্রস্ত না হন সে বিষয়েও আমরা সতর্ক রয়েছি।
বিএসইসি কমিশনার মো. আব্দুল হালিম বলেন, অল্পকিছু হলেও ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের দিতে পারছি, এটা আনন্দের। তবে আইন-কানুন বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে আরও সক্রিয় হতে হবে। যেন কেউ কোনো বিনিয়োগকারীর টাকা আত্মসাৎ করতে না পারে। বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা দিতে পারলে পুঁজিবাজারে আস্থা বাড়বে। এই চারটি প্রতিষ্ঠানে টাকা আত্মসাতের পর নতুন করে কেউ আর আত্মসাৎ করতে পারেনি। এটা বন্ধ করতে নতুন আইন করতে হয়নি। আইনের যথাযথ প্রয়োগ করে, মনিটরিং জোরদার করা হয়েছে। যেন ভবিষ্যতে আর কেউ অর্থ আত্মসাৎ করতে না পারে।
ডিএসইর চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হাফিজ মোহাম্মদ হাসান বাবু বলেন, ডিএসইতে একটা যাত্রা শুরু হলো। বিনিয়োগকারীদের নিরাপত্তা দরকার আছে। অল্প পরিসরে হলেও আমরা প্রমাণ করতে পারলাম, আমরা বিনিয়োগকারীদের কথা চিন্তা করি, আমরা বিনিয়োগকারীবান্ধব। তাদের সঙ্গে নিয়ে চলতে চাই। আজকের এই চেক হস্তান্তর বাজারের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ আমরা শুধু বড় বড় বিনিয়োগকারীর কথা ভাবি না, ছোট ছোট বিনিয়োগকারীর কথাও চিন্তা করি।