দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) গতকাল রোববার প্রযুক্তিগত সমস্যা বা কারিগরি ত্রুটির ঘটনার কারণ খুঁজতে দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। একটি তদন্ত কমিটি করেছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। অপরটি করেছে ডিএসই নিজেরা।
বিএসইসির পক্ষ থেকে এ বিষয়ে তদন্তের ভার দেওয়া হয়েছে সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক আনোয়ারুল ইসলামকে। বিএসইসির শীর্ষ পর্যায়ের একটি সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। অন্যদিকে ডিএসইর পক্ষ থেকে গঠিত কমিটির প্রধান করা হয়েছে সংস্থাটির পরিচালক রুবাবা দৌলাকে। এ ছাড়া কমিটিতে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) একজন শিক্ষক ও বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির একজনকে সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে।
গতকাল ডিএসইর কারিগরি ত্রুটির কারণে শেয়ার কেনাবেচাসংক্রান্ত লেনদেন নিষ্পত্তিতে জটিলতায় পড়ে ৬০টির বেশি ব্রোকারেজ হাউস। পরে বিকল্প ব্যবস্থায় গতকাল দিবাগত রাত তিনটার পর এসব প্রতিষ্ঠানের লেনদেন নিষ্পত্তি করা হয়।
সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা যায়, গতকাল লেনদেন শেষে শেয়ার কেনাবেচাসংক্রান্ত আদেশের স্বয়ংক্রিয় ডেটা তৈরির ব্যবস্থায় ত্রুটি দেখা দেয়। এতে কিছু প্রতিষ্ঠানের ডেটা ফাইল ভেঙে গিয়েছিল। সে কারণে ওই সব প্রতিষ্ঠানের লেনদেন নিষ্পত্তিতে জটিলতা তৈরি হয়।
নিয়ম অনুযায়ী, প্রতিদিন লেনদেন শেষে লেনদেন নিষ্পত্তির জন্য শেয়ার কেনাবেচাসংক্রান্ত ডেটা বা তথ্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে ব্রোকারেজ হাউসগুলোয় সরবরাহ করে ডিএসই। সেই অনুযায়ী শেয়ার সংরক্ষণকারী প্রতিষ্ঠান সেন্ট্রাল ডিপজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেড বা সিডিবিএলের মাধ্যমে লেনদেন নিষ্পন্ন করে ব্রোকারেজ হাউসগুলো। কিন্তু গতকাল লেনদেন শেষে ডিএসইতে কারিগরি ত্রুটি দেখা দেওয়ায় লেনদেন নিষ্পত্তিতে সমস্যায় পড়ে ৬০টির বেশি ব্রোকারেজ হাউস।
এদিকে লেনদেন যন্ত্রের কারিগরি ত্রুটির কারণ কী, তা এখনো খুঁজে বের করতে পারেনি ডিএসই। কারিগরি ত্রুটির কারণে যাতে আজ সোমবারের লেনদেন কোনোভাবে বাধাগ্রস্ত না হয়, সে জন্য বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে সংস্থাটির পক্ষ থেকে। ফলে গতকাল কোনো ধরনের বিপত্তি ছাড়াই লেনদেন শেষ হয়।
কেন বারবার ডিএসইতে কারিগরি ত্রুটি ও তার কারণে লেনদেন বিঘ্নের ঘটনা ঘটছে, এ নিয়ে শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টদের মধ্যে বড় প্রশ্ন। এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থাও। এ কারণে একাধিক দফায় তদন্তেরও উদ্যোগ নেয় সংস্থাটি। কিন্তু কিছুতেই কিছু যেন হচ্ছে না।