ডিসেম্বর ১৩, ২০২৪

বিজ প্রতিবেদক : দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তারিক আমিন ভূঁইয়ার পদত্যাগের প্রকৃত কারণ সুষ্ঠ তদন্তের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক‌্য পরিষদ। একইসঙ্গে পুঁজিবাজারের স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে বারবার ডিএসইর এমডির পদত্যাগের প্রতিকার চেয়েছেন বিনিয়োগকারীরা।

সোমবার (২৯ আগস্ট) সকালে আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের কাছে প্রেরিত একটি চিঠিতে এ দাবি জানানো হয়।

এ বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব, দূর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান, ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্সের (ডিজিএফআই) মহাপরিচালক, ও জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দার (এনএসআই) মহাপরিচালককে অবহিত করা হয়েছে।

এ সময় বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক‌্য পরিষদের সহ-সভাপতি মহসিন মিয়া, প্রচার সম্পাদক পারভেজ আলীসহ অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, ডিএসইর বর্তমান এমডি তারিক আমিন ভূঁইয়া আইটি সেক্টরের একজন অভিজ্ঞ ব্যক্তিত্ব। আইটি সেক্টরের দূর্নীতিরোধে ডিএসইর এমডির নেওয়া কিছু পদক্ষেপের কারণে কিছু কর্মকর্তা ও স্বতন্ত্র পরিচালকরা অখুশি ছিলেন। আমরা খোঁজ খবর নিয়ে এ বিষয়টা জানতে পেরেছি। এতে করে শেয়ার লেনদেনের গোপন তথ্য তাদের কাছে পাচার করতে পারছিলেন না কিছু অসাধু কর্মকর্তারা। ফলে এমডির ওপর স্বতন্ত্র পরিচালকরা ও কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ক্ষিপ্ত হন। এছাড়া ডিএসইর শীর্ষ কর্মকর্তাদের একটি অংশ দীর্ঘ সময় ধরে এমডিকে অসহযোগিতা করে আসছিলেন। যেটা তিনি পদত্যাগ পত্রেও উল্লেখ করেছেন। আইটি সেক্টরের উন্নয়নের মাধ্যমে পুঁজিবাজারের অনিয়ম ও দূর্নীতিরোধ করা বিনিয়োগকারীদের জন্য সবচেয়ে বড় কল্যাণজনক কাজ। আইটি উন্নয়নের মাধ্যমে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্নদ্রষ্টা প্রধানমন্ত্রীর আইটি বিষয়ক উপদেষ্টা ও বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র সজীব ওয়াজেদ জয় দিন-রাত শ্রম দিয়ে যাচ্ছেন। ঠিক এমন সময় আইটি’র উন্নয়নের মাধ্যমে পুঁজিবাজারের উন্নয়ন, কারসাজিরোধ ও ‘ফাইভ পি’ ফর্মূলা বাস্তবায়ন করতে যাওয়া একজন অভিজ্ঞ ব্যক্তিকে অপমান ও অপদস্ত করে পদত্যাগে বাধ্য করা হলো। তাই আমরা ডিএসইর এমডির পদত্যাগের আসল কারণ জানতে চাই ও এর সুষ্ঠ তদন্ত ও প্রতিকার দাবি করছি।

চিঠিতে আরো উল্লেখ করা হয়, ডিএসই বারবারই বিভিন্ন অনিয়ম ও দূর্নীতির সাথে জড়িয়ে পড়েছে। ইতিপূর্বে বেশ কয়েকটি সিকিউরিটিজ হাউজের মালিক- ডিএসইর কতিপয় দূর্নীতিবাজ কর্মচারী ও কর্মকর্তার সহায়তায় বিনিয়োগকারীদের বিপুল অংকের টাকা নিয়ে পুঁজিবাজার থেকে চম্পট দিয়েছিল। এই দূর্নীতির দায় ডিএসইর পরিচালকবৃন্দ ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কোনভাবেই এড়াতে পারেন না। আজও বহু বিনিয়োগকারী টাকা হারিয়ে দিনের পর দিন ডিএসইর দ্বারে দ্বারে ঘুরে জুতার তলা ক্ষয় করেছেন। যে সকল হাউজগুলো টাকা আত্মসাৎ করেছিল ডিএসই তাদেরকে কোন শাস্তির আওতায় না এনে বরং তাদের সাথে আতাত করে বিনিয়োগকারীদের নিঃস্ব করেছে। উপরোন্ত পুঁজি হারানো বিনিয়োগকারীরা তাদের সাথে যোগাযোগ করলে অধিকাংশ সময়ই উল্টো লাঞ্ছনার শিকার হতে হয়েছে। ডিএসইর ভিতরে একটি শক্তিশালী দূর্নীতিবাজ চক্র লুকিয়ে রয়েছে, যাদের কারণে ইতিপূর্বে অধিকাংশ ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাদের মেয়াদ পূর্ণ করতে পারেনি বরং তাদের অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সাপোর্ট না দেওয়ার কারণে ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের চলে যেতে হয়েছে যেটা বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় নিউজ হয়েছিল। বারবার ডিএসইর এমডির পদত্যাগ পুঁজিবাজারের স্থিতিশীলতার অন্তরায় বলে আমরা মনে করি। তাই ডিএসইর এমডির পদত্যাগের কারণ সুষ্ঠ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।


শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...