আন্ডারওয়ার্ল্ডের মাফিয়াদের সঙ্গে বলিউডের সম্পর্ক বহু পুরোনো। নব্বইয়ের দশকে যখন মুম্বাইজুড়ে রমরমা ছিল অন্ধকার জগতের কুখ্যাত ব্যক্তিত্বদের, তখন নাম শুনলেই শিউরে ওঠা মাফিয়াদের অনেকেই ছিলেন বলি সুন্দরীদের প্রেমিক। নায়ক-প্রযোজকদের সঙ্গেও অপরাধজগতের বন্ধুত্বের কানাঘুষা শোনা যেতো সবসময়ই।
সম্প্রতি বলিউড প্রযোজক মহাবীর জৈন ফাঁস করলেন নব্বইয়ের দশকের বলিউডের অন্দরের অজানা কাহিনি। ‘রাম সেতু’ প্রযোজক অভিনেতা আমির খানের ভূয়সী প্রশংসা করে জানান, নিজের জীবনের ঝুঁকি রয়েছে জানা সত্ত্বেও কোনোদিন মাফিয়াদের আয়োজিত কোনো পার্টিতে পা দেননি আমির।
বলিউড হাঙ্গামাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মহাবীর জৈন বলেন, ‘নব্বইয়ের দশকে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে আন্ডারওয়ার্ল্ডের রাজত্ব ছিল। প্রত্যেক বলি তারকাকে ডনদের আমন্ত্রণ গ্রহণ করে মধ্যপ্রাচ্যে ছুটতে হতো। কিন্তু আমির ভাই (খান) নিজের জীবনের বাজি রেখেও কোনোদিন সেইসব পার্টির শোভা বাড়াননি। ওনার নিজস্ব আদর্শ রয়েছে, যেখানে তিনি স্থির থেকেছেন।’
‘গুড লাক জেরি’ প্রযোজক আরও জানান, নিজের আদর্শ সম্পর্কে এতটাই সচেতন আমির যে অনেক নামিদামি ব্র্যান্ডের প্রচার অভিযানে যোগ দিতে অস্বীকার করেছেন তিনি। মহাবীর জৈন বলেন, ‘সত্যমেব জয়তে’ শো-এর অংশ হওয়ার পর এই বদল এসেছিল আমিরের।
তিনি জানান, প্রায় তিন বছর ধরে ৪-৫টি ব্র্যান্ডের প্রচার করেননি আমির, যা তিনি আগে করতেন। কারণ তিনি মনে করতেন সত্যমেব জয়তে খুব সংবেদনশীল একটা শো এবং তা চলাকালীন বিজ্ঞাপন বিরতিতে তার এমন কোনো বিজ্ঞাপন দেখানো হবে যা হাসি-ঠাট্টায় ভরা, সেগুলো ওই শো-এর গুরুত্ব কমিয়ে দিবে। তাই সে কারণে অনেক কাজই হাতছাড়া করেছিলেন তিনি।
মহাবীর জৈন বলেন, ‘নাম-যশ-প্রভাব-প্রতিপত্তির পিছনে কোনোদিন দৌড়াননি আমির। বলিউডে রাজত্ব করবার ইঁদুর দৌড় থেকে বরাবর নিজেকে দূরে সরিয়ে রেখেছেন তিনি। শুধু নিজের সেরাটা দিতেই আগ্রহী ছিলেন এই নায়ক।’
প্রসঙ্গত, ‘লাল সিং চড্ডা’র ব্যর্থতার পর আপাতত ছবির কাজ থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রেখেছেন আমির। নতুন কোনও চিত্রনাট্য নিয়ে এখন ভাবনা-চিন্তা করছেন না মিস্টার পারফেকশনিস্ট। আপাতত পরিবারের সঙ্গেই সময় কাটাচ্ছেন। সম্প্রতি এক ইভেন্টে আমির জানান, ‘মানসিকভাবে প্রস্তুত হলে তবেই নতুন ছবির কাজে হাত দিবেন, আপাতত পরিবারকেই সময় দিতে চান।’