জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে চুমু খাওয়ার চেষ্টা করে তীব্র বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন ক্রোয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী। খোদ নিজ দেশের সাবেক এক প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি নিয়ে কটাক্ষ করে এক্সে (সাবেক টুইটার) টুইট করেছেন। আর এ ঘটনায় শেষ পর্যন্ত ক্ষমা চাইতে হয়েছে ক্রোয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী গর্ডান গ্রিলিক-রাডম্যানকে। ঘটনাটি গত ২ নভেম্বরের।
তবে আকষ্মিক এ ঘটনায় কিছুটা বিব্রত হলেও হাসিমুখে পরিস্থিতি সামাল দেন জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্নালেনা বায়েরবক।
খবর আনন্দবাজারের।
পলিটিকোকে উধৃত করে আনন্দবাজার লিখেছে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ)-এর পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের একটি বৈঠক শেষ হওয়ার পর সকলে যখন ছবি তোলার জন্য দাঁড়িয়ে ছিলেন, সেই সময় জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্নালেনা বায়েরবককে (৪২) হঠাৎ চুম্বন করেন ক্রোয়েশিয়ার পরাষ্ট্রমন্ত্রী গর্ডান গ্রিলিক-রাডম্যান।
ঘটনার আকস্মিকতায় মাথা নীচে নামিয়ে নেন জার্মান মন্ত্রী। পরে তাঁকে হাসতেও দেখা যায়। এই বিষয়ে জার্মান মন্ত্রীকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “আজ আমরা চুম্বন নিয়ে কথা বলতে আসিনি।”
ওই ঘটনার ছবি ও ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে তা নিয়ে জার্মানি এবং ক্রোয়েশিয়া উভয় দেশেই তুমুল সমালোচনা শুরু হয়।
জার্মান ট্যাবলয়েড সংবাদপত্র বিল্ড এটিকে একটি ‘চুমু-হামলা’ হিসেবে উল্লেখ করেছে। ক্রোয়েশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরাও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আচরণের নিন্দা করেছেন।
বিশিষ্ট ক্রোয়েট নারী অধিকার কর্মী এবং সাবেক আইনপ্রণেতা রাদা বোরিচ স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, এটি সম্পূর্ণ অনুপযুক্ত অঙ্গভঙ্গি।
তিনি বলেন, মনে হচ্ছে মন্ত্রী প্রোটোকল জানেন না। কারণ ‘উষ্ণ অভিবাদন’ এমন লোকদের সঙ্গে হওয়া উচিত যাদের সঙ্গে আপনার এমন সম্পর্ক রয়েছে, যা চুম্বনের মাধ্যমে শুভেচ্ছা জানানোর অনুমতি দেয়। কিন্তু এটি স্পষ্ট যে, এখানে এ ধরনের কোনো সম্পর্ক নেই।
ক্রোয়েশিয়ার প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী জাডরাঙ্কা কসোর অবশ্য রাডম্যানের সমালোচনা করে এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে লেখেন, “জোর করে মহিলাকে চুম্বন করাও কিন্তু অপরাধ, নয় কি?”
দেশে-বিদেশে তোপের মুখে শেষ পর্যন্ত গত শনিবার ক্ষমা চান ক্রোয়েট পররাষ্ট্রমন্ত্রী। স্থানীয় দৈনিক সংবাদপত্র ভেচের্নজি লিস্টকে তিনি বলেছেন, আমরা মন্ত্রীরা সবসময় একে অপরকে আন্তরিকভাবে অভিবাদন জানাই। কিন্তু কেউ যদি এই ঘটনায় খারাপ কিছু দেখে থাকেন, তাহলে তার কাছে আমি ক্ষমাপ্রার্থী।
তবে, যাকে চুমু দেওয়ার চেষ্টা করে বিপাকে পড়েছেন ক্রোয়েট মন্ত্রী, সেই আনালেনা বেয়ারবক এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। আজারবাইজানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হলে চুমুকাণ্ডের বিষয়ে জার্মান মন্ত্রীকে প্রশ্ন করা হয়েছিল। জবাবে তিনি বলেন, আমরা আজ চুমু নিয়ে কথা না বলি।
প্রসঙ্গত, কিছু দিন আগেই বিশ্বকাপজয়ী স্পেনীয় মহিলা ফুটবলার জেনি হারমোসোকে চুম্বন করার দায়ে তিন বছরের জন্য নির্বাসিত করা হয় সে দেশেরই ফুটবল কর্তা লুইস রুবিয়ালেসকে। স্পেন বিশ্বকাপ জেতার পরে দলের সব ফুটবলার ও সাপোর্ট স্টাফদের প্রকাশ্যে চুম্বন করেছিলেন রুবিয়ালেস। ফুটবলার হারমোসো অভিযোগ করেন, জোর করে তাঁর ঠোঁটে চুমু খেয়েছিলেন রুবিয়ালেস। প্রতিবাদ করেছিলেন তিনি। এই ঘটনার পরে রুবিয়ালেসের সমালোচনা শুরু হয়েছিল। তাঁকে সাসপেন্ড করেছিল ফিফা। এর পর ইস্তফা দেন রুবিয়ালেস।