নভেম্বর ১৫, ২০২৪

চলতি মাসেই ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের উপর এই নিয়ে ১৫ বার জোরালো হামলা চালালো রাশিয়া৷ সোমবার ভোরে বিশাল সংখ্যায় ড্রোন ও ক্রুজ মিসাইল নিক্ষেপ করা হয়েছে৷ ইউক্রেনের সেনাবাহিনী ৪০টিরও বেশি লক্ষ্যবস্তু ধ্বংস করতে পেরেছে বলে জানিয়েছে৷ এদিকে হামলায় ৩৬টি ড্রোন ধ্বংস করা সম্ভব হলেও এক ব্যক্তি নিহত ও কয়েকজন আহত হয়েছে৷

কিয়েভ শহরের কর্তৃপক্ষের সূত্র অনুযায়ী, হামলায় তেমন বড় কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি৷ শহরের মেয়র টেলিগ্রাম চ্যানেলে এক বার্তায় ‘কিয়েভে আরও এক কঠিন রাত’-এর উল্লেখ করেন৷

কিয়েভ শহরের সামরিক প্রশাসনের প্রধান সেরহি পপকো বলেন, শত্রুপক্ষ শহরের বেসামরিক জনগণকে গভীর মনস্তাত্বিক উত্তেজনায় রাখতে এমন হামলা চালিয়ে যাচ্ছে৷ রাশিয়া অবশ্য এমন হামলা সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করছে না৷ রোববার ভোররাতে কমপক্ষে ৫৪টি হামলা চালানো হয়েছে বলে ইউক্রেনের বিমানবাহিনী মনে করছে, যার মধ্যে ৫২টি ধ্বংস করা সম্ভব হয়েছে৷

রাশিয়া-অধিকৃত জমি ফেরত পেতে ইউক্রেনের সেনাবাহিনী যে কোনো দিন বহু প্রতিক্ষিত পালটা অভিযান শুরু করবে বলে অনুমান করা হচ্ছে৷ তার আগে ইউক্রেনের সামরিক লক্ষ্যবস্তু যতটা সম্ভব অকেজো করে দিতে রাশিয়া হামলার মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছে বলে কিছু সামরিক বিশেষজ্ঞ মনে করছেন৷ তাছাড়া ইউক্রেন প্রকাশ্যে দায় স্বীকার না করলেও সম্প্রতি রাশিয়ার ভূখণ্ডে একাধিক হামলার জন্য মস্কো কিয়েভ-কে দোষ দিচ্ছে৷ সেই হামলার প্রতিশোধ হিসেবে সম্ভবত কিয়েভের উপর আকাশপথে হামলা বাড়ানো হচ্ছে৷

ইউক্রেনের প্রেসি়ডেন্ট ভোলোদোমির জেলেনস্কি রোববার যুদ্ধে রাশিয়ার পরাজয় এবং সে দেশের নেতৃত্বের পতনের পূর্বাভাস দিয়েছেন৷ দৈনিক ভিডিও বার্তায় তিনি কিয়েভসহ ইউক্রেনের বিভিন্ন অংশে মস্কোর স্বৈরাচারের অবসান ঘটবে বলে দাবি করেন৷ নিজের ঘরের বদলে প্রেসিডেন্টের দফতরের সামনে খোলা আকাশের নীচে তিনি সন্ধ্যার আলোর নীচে সেই ভিডিও রেকর্ড করেন৷

জেলেনস্কি বলেন, ইরানে তৈরি শাহিদ ড্রোনের মতো অস্ত্র রাশিয়ার শাসকদের বাঁচাতে পারবে না৷ জীবন ও সংস্কৃতির প্রতি রাশিয়ার ঘৃণা সে দেশর পতন ঘটাবে বলে তিনি মন্তব্য করেন৷ এর আগে তিনি ইরানের উপর আগামী ৫০ বছরের জন্য নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার প্রক্রিয়া শুরু করেন৷ ইউক্রেনের সংসদের চূড়ান্ত অনুমোদন পেলে সেই প্রস্তাব আইনে পরিণত হবে৷ রাশিয়ার সঙ্গে ইরানের সামরিক ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়ে যাবার পর ইউক্রেন এমন সিদ্ধান্ত নিচ্ছে৷

ব্রিটেনের গুপ্তচর সংস্থার সূত্র অনুযায়ী ইউক্রেন যুদ্ধের স্বার্থে রুশ নাগরিকদের উপর আরও আত্মত্যাগ করার জন্য চাপ বাড়ানো হচ্ছে৷ রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যম ও ব্যবসায়ীক গোষ্ঠীগুলি রাশিয়ার অর্থনীতি মন্ত্রণালয়ের উদ্দেশ্যে শ্রমিকদের সপ্তাহে পাঁচ দিনের বদলে ছয় দিন কাজ করার নিয়ম চালু করার আবেদন জানিয়েছে৷ সম্ভবত বাড়তি মজুরি ছাড়াই যুদ্ধের অর্থনৈতিক দাবি মানতে অদূর ভবিষ্যতে এমন পদক্ষেপ কার্যকর করা হতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে৷ সূত্র: ডিডাব্লিউ, রয়টার্স, ডিপিএ

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...