ভাড়াটে সেনাবাহিনী ওয়াগনার গ্রুপের সেনাদের বিদ্রোহ নিয়ে নতুন করে কথা বলেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। সোমবার (২৬ জুন) জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া টিভি ভাষণে দীর্ঘ বক্তব্য দিয়েছেন তিনি।
আর এই বক্তব্যে বিদ্রোহী ওয়াগনার সেনাদের তিনটি সুযোগ দেওয়ার কথা বলেছেন প্রেসিডেন্ট পুতিন। তিনি জানিয়েছেন, যেসব সেনা বিদ্রোহ করেছিল— তারা চাইলে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে মূল সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে পারবেন, পরিবারের কাছে ফিরে যেতে পারবেন অথবা বেলারুশে চলে যেতে পারবেন।
দীর্ঘ বক্তব্যে পুতিন বলেছেন, ‘আমরা জানি ওয়াগনারের সেনা ও কমান্ডারদের বেশিরভাগেই রাশিয়ার দেশপ্রেমিক। তারা জনগণ ও রাষ্ট্রের প্রতি নিজেদের নিবেদিত করেছে। ইউক্রেনে সাহসী যুদ্ধের মাধ্যমে এটি প্রমাণও করেছে তারা।’
তিনি আরও বলেছেন, ‘প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে অথবা অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর চুক্তি করে আপনারা চাইলে রাশিয়াকে সেবা দিয়ে যেতে পারেন অথবা আপনারা আপনাদের বন্ধু ও পরিবারের কাছে ফিরে যেতে পারেন।’
‘যারাই চান তারা বেলারুশে যেতে পারবেন। আমি যে কথা দিয়েছি সেটি পূরণ হবে। আমি আবারও বলছি, কোনটি বেঁছে নেবেন সেটি আপনাদের ব্যাপার।’
পুতিন জানিয়েছেন, ওয়াগনার সেনাদের বিদ্রোহে যেন বড় ধরনের কোনো রক্ষপাত না হয় সেজন্য তিনি প্রথম থেকেই প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছিলেন।
এছাড়া রুশ প্রেসিডেন্ট দাবি করেছেন ইউক্রেন এবং পশ্চিমারা চেয়েছিল, রাশিয়ানরা রাশিয়ানদের মারবে। কিন্তু তা সফল হয়নি। তিনি বলেছেন, ‘ইউক্রেন-পশ্চিমারা চেয়েছিল রাশিয়ানরা রাশিয়ানদের মারবে। তারা তাদের হাত ঘষে, যুদ্ধের সম্মুখভাগে কথিত পাল্টা আক্রমণে ব্যর্থ হওয়ার প্রতিশোধ নেওয়ার স্বপ্ন দেখেছিল। কিন্তু তারা ভুল হিসেব কষেছিল।’
ওয়াগনার গ্রুপের প্রধান ইয়েভগিনি প্রিগোজিনের নাম সরাসরি উচ্চারণ করেননি পুতিন। তবে তিনি জানিয়েছেন, বিদ্রোহী নেতারা দেশের সঙ্গে বেঈমানি করেছেন, নিজ সেনাদের ভুল পথে চালিত করেছেন এবং মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছেন।
এদিকে গত শনিবার বিদ্রোহ ঘোষণা করে ওয়াগনারের প্রায় ২৫ হাজার সেনা রাজধানী মস্কোর দিকে এগুনো শুরু করে। তবে এদিন রাতের বেলা হঠাৎ করেই এই বিদ্রোহ বন্ধ ঘোষণা করেন ওয়াগনার প্রধান। গতকাল তিনি এক অডিও বার্তায় দাবি করেন, প্রেসিডেন্ট পুতিনকে ক্ষমতাচ্যুত করার কোনো ইচ্ছে ছিল না তার। মূলত সামরিক কর্মকর্তাদের সরিয়ে দিতে চেয়েছিলেন তিনি।