চলমান অর্থনৈতিক সংকট এবং লাগামহীন দ্রব্যমূল্যের কারণে দেশের ৪ কোটি মানুষ খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থানের মতো মৌলিক চাহিদা মেটাচ্ছে ঋণ করে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এমন অবস্থার জন্য অর্থনৈতিক সংকট এবং লাগামহীন বাজার ব্যবস্থাকেই দায়ী। এই অবস্থায় তাল সামলানোর বেশি চাপে মধ্যবিত্ত শ্রেণি।
সম্প্রতি প্রথমবারের মতো প্রকাশিত বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) খাদ্য নিরাপত্তা জরিপে সংকটের এমন চিত্র উঠে এসেছে।
বিবিএসের প্রতিবেদন বলছে, দেশের মোট জনসংখ্যার চার ভাগের এক ভাগ মানুষ ঋণ করে তাদের মৌলিক চাহিদা মেটাচ্ছেন। এতে গ্রামের ২৮ শতাংশ এবং শহরের ২৪ শতাংশ ও সিটি করপোরেশনের ১৫ শতাংশ মানুষ রয়েছেন।
সংস্থাটি বলছে, ২২ শতাংশ পরিবার মাঝারি বা তীব্র খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত থাকলেও সবচেয়ে বেশি ২৬ দশমিক ১৩ শতাংশ কৃষক পরিবারের সমস্যা খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা।
বিআইআইসিসির গবেষণা পরিচালক মাহফুজ কবীর বলেন, অর্থনৈতিক চাপ ও মূল্যস্ফীতির কারণে তাদের প্রকৃত আয় কমে গেছে। এ সময়ে কর্মসংস্থান হলেও তা গুণগত নয়। ফলে পর্যাপ্ত আয়-উপার্জন না থাকায় মানুষ ঋণ করছেন।
বিশ্বব্যাংকের পরামর্শক ড. জাহিদ হোসেন বলেন, এই তথ্য থেকে বোঝা যাচ্ছে দেশের অর্থনীতি কতটা ভঙ্গুর। প্রয়োজন মেটাতে ঋণ করে চলছেন অনেকে। যারা দরিদ্রসীমার ওপরে আছেন, তাদেরও যে আয় বেশি সেটা কিন্তু নয়। তারাও আরামদায়ক পরিস্থিতিতে নেই।
এটা বাংলাদেশের জন্য রেড অ্যালার্ম জানিয়ে বিআইআইসিসির গবেষণা পরিচালক মাহফুজ কবীর বলেন, যদি দীর্ঘদিন ধরে এই অবস্থায় থাকেন, তবে খাদ্য নিরাপত্তাহীন মানুষগুলো জনসম্পদের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়াবেন।
২০২২ সালের জুনের ১৫ থেকে ২৫ তারিখ পর্যন্ত প্রায় ৩০ হাজার খানার ওপর এই জরিপ চালায় সংস্থাটি।