ডিসেম্বর ২৩, ২০২৪

আবারও দু’টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে উত্তর কোরিয়া। সোমবার (২৭ মার্চ) সকালে দেশটি তার পূর্ব উপকূল থেকে সাগরে দু’টি স্বল্প-পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে। এর দুইদিন আগে অবশ্য পারমাণবিক ক্ষমতাসম্পন্ন নতুন একটি অ্যাটাক ড্রোন পরীক্ষা করেছিল পূর্ব এশিয়ার এই দেশটি।

সোমবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উত্তর কোরিয়া সোমবার সকালে তার পূর্ব উপকূল থেকে সাগরে দু’টি স্বল্প-পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে বলে দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনী জানিয়েছে।

সাম্প্রতিক দিনগুলোতে উত্তর কোরিয়া একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে। এছাড়া মার্কিন একটি বিমানবাহী রণতরীর মঙ্গলবার দক্ষিণ কোরিয়ায় পৌঁছানোর কথা রয়েছে এবং এর মধ্যেই সর্বশেষ ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের এই ঘটনা ঘটল।

দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনীর জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ (জেসিএস) জানিয়েছে, সোমবার সকাল ৭:৪৭ মিনিটে উত্তর কোরিয়ার নর্থ হোয়াংহাই প্রদেশ থেকে দু’টি স্বল্প-পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয় এবং পরে সেগুলো প্রায় ৩৭০ কিলোমিটার (২৩০ মাইল) আকাশে ওড়ে।

জাপান সরকারের মতে, নিক্ষেপ করা ওই দু’টি ক্ষেপণাস্ত্রই জাপানের একচেটিয়া অর্থনৈতিক অঞ্চলের বাইরে পড়েছে বলে মনে হচ্ছে।

এদিকে উত্তর কোরিয়ার এই পদক্ষেপকে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের রেজুলেশন লঙ্ঘনকারী গুরুতর উস্কানি হিসেবে উল্লেখ করেছে দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনী। একইসঙ্গে ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের ‘কঠোর নিন্দা’ জানানোর পাশাপাশি এবং এই ধরনের কর্মকাণ্ড অবিলম্বে বন্ধ করার আহ্বানও জানিয়েছে দেশটি।

জেসিএস এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘আমরা উত্তর কোরিয়ার বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের ওপর কঠোর নজর রাখব এবং যেকোনও উস্কানির অপ্রতিরোধ্য জবাব দিতে নিজেদের সক্ষমতার ভিত্তিতে দৃঢ় প্রস্তুতি বজায় রাখব।’

অন্যদিকে এই ঘটনায় জাপান সরকারও উত্তর কোরিয়ার কাছে ‘তীব্র প্রতিবাদ’ জানিয়েছে। টোকিও বলেছে, পিয়ংইয়ংয়ের এই ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ জাপান, সমগ্র এই অঞ্চল এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা ও শান্তির জন্য হুমকিস্বরূপ।

রয়টার্স বলছে, মার্কিন বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস নিমিৎজ এবং তার বহরের অন্য জাহাজগুলোর মঙ্গলবার দক্ষিণ কোরিয়ার দক্ষিণ-পূর্ব বন্দর শহর বুসানের নৌ ঘাঁটিতে পৌঁছানোর কথা রয়েছে। আর এর আগেই ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের এই ঘটনা ঘটল।

অবশ্য বন্দরে পৌঁছানোর আগেই মার্কিন এই বিমানবাহী রণতরীটি সোমবার কোরীয় উপদ্বীপের দক্ষিণ উপকূলে দক্ষিণ কোরিয়ার বাহিনীর সাথে যৌথ সামুদ্রিক মহড়া করবে। দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এই তথ্য জানিয়েছে বলে উল্লেখ করেছে রয়টার্স।

মূলত উত্তর কোরিয়া সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে তার সামরিক পরীক্ষা বাড়িয়েছে। গত বুধবার একাধিক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে পিয়ংইয়ং। দেশটির দাবি, কৌশলগত পারমাণবিক হামলার অনুশীলনের লক্ষ্যেই ক্ষেপণাস্ত্রগুলো নিক্ষেপ করা হয়েছিল।

এছাড়া গত শুক্রবার উত্তর কোরিয়া একটি নতুন পারমাণবিক-সক্ষমতা সম্পন্ন আন্ডারওয়াটার অ্যাটাক ড্রোন পরীক্ষা করে বলে জানিয়েছে দেশটি। উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন সতর্ক করে বলেছেন, দক্ষিণ কোরিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ সামরিক মহড়া বন্ধ করা উচিত।

অবশ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে এই ধরনের সামরিক মহড়াকে উত্তর কোরিয়া তাদের ওপর আক্রমণের মহড়া হিসাবে দেখে থাকে। এ কারণে নিজেদের সামরিক শক্তি আরও আধুনিকরণের ঘোষণাও দিয়েছে পিয়ংইয়ং।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...