উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ার সীমান্তে উত্তর কোরিয়ার ১৮০টি সামরিক বিমানের আনাগোনা লক্ষ্য করার পর সতর্কতামূলক প্রস্তুতি নেয়ার কথা জানিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া।
স্থানীয় সময় শুক্রবার (৪ নভেম্বর) সকাল ১১টা থেকে বিকেল তিনটার মধ্যে ‘ট্যাকটিক্যাল অ্যাকশন লাইনের’ উত্তরে এসব বিমান দেখা যায় বলে জানিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার জয়েন্ট চিফ অব স্টাফ।
এরপরই এফ-৩৫ বিমানসহ ৮০টি যুদ্ধবিমান মোতায়েন করে দক্ষিণ কোরিয়া। একই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে যৌথ মহড়ায় অংশ নিচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়ার ২৪০টি যুদ্ধবিমান।
দুই কোরিয়ার মধ্যে অবস্থিত সামরিক সীমান্তরেখাকে বলা হয় মিলিটারি ডিমার্কেশন লাইন। এই রেখার উত্তরে অবস্থিত ট্যাকটিক্যাল অ্যাকশন লাইনটি একটি অদৃশ্য রেখা।
মিলিটারি ডিমার্কেশন লাইন থেকে ট্যাকটিক্যাল অ্যাকশন লাইনের দুরত্ব ঠিক কত তা জানা না গেলেও, এ দুরত্ব ২০ থেকে ৫০ কিলোমিটারের মধ্যে হতে পারে বলে জানিয়েছে স্থানীয় গণমাধ্যম।
এর আগে বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর) রাতভর উপকূলজুড়ে ৮০ রাউন্ডেরও বেশি আর্টিলারি বর্ষণ ও একাধিক মিসাইল উৎক্ষেপণ করে উত্তর কোরিয়া। এগুলোর মধ্যে একটি আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক মিসাইলও ছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বুধবারও (২ নভেম্বর) কমপক্ষে ২৩টি ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করে উত্তর কোরিয়া। একদিনে সর্বোচ্চ সংখ্যক মিসাইল উৎক্ষেপণের রেকর্ড এটি।
গত সপ্তাহজুড়ে উত্তর কোরিয়ার এই সিরিজ ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সামরিক মহড়ার মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে বলে জানিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া। তবে ‘উসকানিমূলক’ এ মহড়া বন্ধের দাবি জানিয়েছে উত্তর কোরিয়া।
এক বিবৃতিতে উত্তর কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলে, যুক্তরাষ্ট্রের উচিৎ এসব ‘উসকানিমূলক’ মহড়া বন্ধ করা। ‘ক্রমাগত উসকানির জবাবে ক্রমাগত পাল্টা জবাব দেয়া হবে’ বলে সতর্ক করে দেয় তারা।
এদিকে শুক্রবার পেন্টাগন জানিয়েছে, দক্ষিণ কোরিয়ার সাথে মহড়া আপাতত ৫ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে।
এর আগে উত্তর কোরিয়ার ক্ষমতাসীন ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সেক্রেটারি পাক জং চন বলেন, মহড়ার মেয়াদ বাড়ানোর মাধ্যমে পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রণের বাইরে ‘ঠেলে’ দিচ্ছে ওয়াশিংটন ও সিউল।
এদিকে, এই পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে শুক্রবার এক বৈঠকে বসছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। বর্তমানে জাতিসংঘের রেজোল্যুশন অনুযায়ী উত্তর কোরিয়াকে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করা থেকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।