নভেম্বর ১৫, ২০২৪

ওয়েবসাইট হোস্টিং ও ক্লাউড সার্ভিসকে ডিজিটাল ইন্ডাস্ট্রির ‘মেরুদণ্ড’ উল্লেখ করে এ খাতকে কর অব্যাহতির আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব)।

২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে গণমাধ্যমে পাঠানো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়ায় এ দাবি জানিয়েছেন ই-ক্যাবের সভাপতি শমি কায়সার।

প্রস্তাবিত বাজেটে স্মার্ট বাংলাদেশ সংকল্পকে প্রাধান্য দেওয়ায় সাধুবাদ জানিয়ে ই-ক্যাব জানিয়েছে, স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য প্রয়োজন স্মার্ট অর্থনীতি ও স্মার্ট বাণিজ্য। দেশের সব ট্র্যাডিশনাল ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে ই-কমার্সে রূপান্তর করার জন্য প্রয়োজন তথ্যপ্রযুক্তি অবকাঠামো। এজন্য আইটি ও সফটওয়্যার খাতকে ২০৩১ সাল পর্যন্ত কর অব্যাহতি দিতে ই-ক্যাবসহ আইসিটি সংগঠনগুলো দাবি জানিয়ে আসছিল, যা এবারের বাজেটে ৩ বছরের জন্যে প্রস্তাবিত হয়েছে। বিশেষ করে ই-ক্যাব প্রস্তাবিত ই-লার্নিং ও ই অ্যাপ্লিকেশনের ওপর কর অব্যাহতি রাখায় এ খাতের উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা রাখবে। তবে পুরো ডিজিটাল ইন্ড্রাস্ট্রির ব্যাকবোন ও গুরুত্বপূর্ণ অংশ ওয়েবসাইট হোস্টিং ও ক্লাউড সার্ভিসকেও কর অব্যাহতির আওতায় নিয়ে আসার দাবি জানায় সংগঠনটি।

বাজেটে ই-ক্যাবের প্রস্তাবনাগুলো কী ছিল, তা তুলে ধরে এতে আরও বলা হয়, ডিজিটাল কমার্স প্রতিষ্ঠানসমূহের কার্যক্রমে সচ্ছতা, দায়বদ্ধতা প্রতিষ্ঠাকল্পে বিজনেস আইডেন্টিটি প্ল্যাটফর্ম চালু করা (ডিবিআইডি) ই-ক্যাবের জোরালো প্রস্তাবনা ছিল। এটি চালু হলেও ডিজিটাল কমার্স সেক্টরের পৃথক কোনো কর্তৃপক্ষ না থাকায় ডিবিআইডি গ্রহণে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোকে ভোগান্তিতে পোহাতে হচ্ছে। এছাড়া ডিবিআইডির কার্যকারিতাও এখনো স্পষ্ট হয়নি। তাছাড়া ভোক্তা অধিকার রক্ষায় ই-ক্যাবের প্রস্তাবিত সেন্ট্রাল কম্পলায়েন্স ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের পাইলটিং পরবর্তী ব্যাপক জনসচেতনতা তৈরি প্রয়োজন।

ই-কমার্সের গুরুত্বপূর্ণ অংশ স্মার্ট লজিস্টিকস উল্লেখ করে বাজেট প্রতিক্রিয়ায় বলা হয়েছে, এ বিষয়ে সরকারের জাতীয় লজিস্টিক নীতি প্রণয়নে ই-ক্যাব সার্বিকভাবে সহযোগিতা করেছে। তবে এ নীতিমালার বাস্তবায়নে স্মার্ট লজিস্টিকস প্রতিষ্ঠানসমূহকে ন্যূনতম পাঁচ বছর কর অব্যাহতি দেওয়া প্রয়োজন। গ্রামীণ পর্যায়ে ও ক্রস বর্ডার ই-কমার্স সম্প্রসারণে স্মার্ট পোস্ট অফিসের পাশাপাশি স্মার্ট লজিস্টিকস প্রতিষ্ঠানসমূহকে ডাক মাশুল থেকেও অব্যাহতি দেওয়া প্রয়োজন। প্রস্তাবিত বাজেটে লজিস্টিক খাতকে অগ্রাধিকার খাত ঘোষণা করায় এ প্রতিষ্ঠানসমূহের ওয়্যারহাউজ ও ট্রাস্পোর্টেশনের ওপর প্রযোজ্য ভ্যাট মওকুফ করার আহ্বান জানানো হয়।

এদিকে, প্রস্তাবিত বাজেটে ক্যাশলেস পেমেন্টকে বিভিন্নভাবে উৎসাহিত করা হলেও পেমেন্ট গ্রহণে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানসমূহকে পেমেন্ট চার্জ দিতে হয় জানিয়ে ই-ক্যাব বলছে, ডিজিটাল পেমেন্টকে উৎসাহিত করতে এ সেক্টরে পেমেন্ট চার্জ সমমানের ন্যূনতম দুই শতাংশ ক্যাশ ইনসেটিভ (প্রণোদনা) দেওয়ার দাবি জানানা হয় এ বাজেট প্রতিক্রিয়ায়। এছাড়া শিক্ষা ও চিকিৎসা খাতে ক্যাশলেস পদক্ষেপের ওপর বিশেষ দৃষ্টি দিতে হবে, যা সামগ্রিক পর্যায়ে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ সহজ করবে।

ই-ক্যাব আরও জানিয়েছে, ই-কমার্স দেশের সবচেয়ে ক্রমবর্ধমান খাত। গত পাঁচ বছরে এ খাতে প্রায় দুই লাখ নারী ও তরুণ উদ্যোক্তা তৈরি হয়েছে। পাশাপাশি পাঁচ লাখেরও বেশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নে স্মার্ট অর্থনীতির সংকল্পে ই-কমার্স খাতে আরও উৎকর্ষতা আনার জন্য ই-ক্যাবের প্রস্তাবিত দাবিসমূহ সরকারের বিশেষ বিবেচনায় নেওয়ার অনুরোধও জানানো হয়।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...