সেপ্টেম্বর ২০, ২০২৪

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, ইলিশ শুধু আমাদের জাতীয় সম্পদই নয়, এখন তা কূটনীতিরও অংশে পরিণত হয়েছে। কূটনীতির অংশ হিসেবে ২০১৯-২০ অর্থবছর থেকে চলতি অর্থবছর পর্যন্ত চার বছরে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে পাঁচ হাজার ৫৪১ মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানি হয়েছে।

আজ বুধবার (১১ অক্টোবর) সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রাণিসম্পদমন্ত্রী বলেন, ‘ইলিশ সম্পদের উন্নয়নে সরকার সমন্বিত কার্যক্রম বাস্তবায়ন করায় ইলিশের উৎপাদন আশাতীতভাবে বেড়েছে। বিগত ২০০২-০৩ অর্থবছরে ইলিশের উৎপাদন উদ্বেগজনকভাবে কমে ১.৯৯ লাখ মেট্রিক টনে পরিণত হয়েছিল।

মন্ত্রী বলেন, পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে দুর্গাপূজায় সীমিত পরিসরে ইলিশ রপ্তানি হয়ে থাকে, যা প্রতিবেশী দেশের কাছে আমাদের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করছে এবং দুই দেশের বাণিজ্যিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নে সহায়ক ভূমিকা রাখছে।

তিনি বলেন, ২০১৯-২০ থেকে ২০২২-২৩ অর্থবছর পর্যন্ত পাঁচ হাজার ৫৪১ মেট্রিক টন ইলিশ ভারতে রপ্তানি করা হয়েছে, যা মোট ইলিশ উৎপাদনের মাত্র দশমিক পাঁচ ভাগেরও কম। এতে রপ্তানি আয় হয়েছে ৪৩৯ হাজার কোটি টাকা। সর্বশেষ ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় তিন হাজার ৯৫০ মেট্রিক টন ইলিশ ভারতে রপ্তানির জন্য অনুমোদন দিয়েছে, তার মধ্যে ২০২৩ সালের ১০ অক্টোবর পর্যন্ত ৬০৯ মেট্রিক টন ইলিশ ভারতে রপ্তানি হয়েছে, যা থেকে রপ্তানি আয় হয়েছে ৬২ লাখ মার্কিন ডলার (প্রায় ৬৮ কোটি ২০ লাখ টাকা)।

প্রাণিসম্পদমন্ত্রী বলেন, সর্বশেষ ২০২২ সালে মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানের আওতায় দুই হাজার ৬২টি মোবাইল কোর্ট, ১০ হাজার ৮২১টি অভিযানের মাধ্যমে ৩১.৪১ মেট্রিক টন ইলিশ, ৯১৯.৮৫ লাখ মিটার নিষিদ্ধ জাল জব্দ এবং দুই হাজার ৯০৮টি মামলা দায়েরের মাধ্যমে দুই হাজার ১০৭ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে জেল ও ৪৭.৩২ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। এছাড়া জব্দকৃত মালামাল নিলামে বিক্রয় করে ২২.১১ লাখ টাকা সরকারি কোষাগারে জমা করা হয়েছে।

তিনি জানান, মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান সফলভাবে বাস্তবায়ন হওয়ায় বিগত বছর ইলিশ আহরণ নিষিদ্ধ করার ২২ দিনে প্রায় ৫২ শতাংশ মা ইলিশ ডিম ছাড়তে পেরেছে। ফলে গত বছর প্রায় চার লাখ পাঁচ হাজার ৫১৫ কেজি ডিম উৎপাদিত হয়েছে, যা থেকে প্রায় ৪০ হাজার ২৭৬ কোটি জাটকা ইলিশ যুক্ত হয়েছে।

ভারতে প্রতি কেজি ইলিশের রফতানি মূল্য ১১০০ টাকা নির্ধারণ করা হলেও দেশের বাজারে দাম বেশি। ইলিশের দাম কমাতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বিত উদ্যোগ নেয়া যায় কি না – এ প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যেখানে উৎপাদন প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত, সেখানে আমাদের কোনো ব্যর্থতা আছে বলে মনে করি না।’

এসময় উপস্থিত ছিলেন- মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নাহিদ রশীদ, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খন্দকার মাহবুবুল হকসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

আগামী ১২ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানের সময় কেউ যাতে ইলিশ আহরণ করতে না পারে, সেজন্য জল, স্থল ও আকাশপথে পর্যবেক্ষণ চালানো হবে বলে জানান মন্ত্রী।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *