পুঁজিবাজারে ইনডেক্স মুভার কোম্পানিগুলোসহ অন্যান্য কোম্পানি শিগগিরই ফ্লোর প্রাইস থেকে বের হয়ে আসবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম। তিনি বলেন, পুঁজিবাজার আমাদের নজরদারিতে রয়েছে। আজকে সূচক ৬ হাজার ৩০০ পয়েন্ট অতিক্রম করেছে। লেনদেন হয়েছে এক হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি। আপনারা আরো ভালো করে ট্রেড করেন। আমার মনে হচ্ছে শিগগিরই ইনডেক্স মুভার কোম্পানিগুলোসহ অন্যান্য কোম্পানি ফ্লোর প্রাইস থেকে বের হয়ে আসবে। এটার জন্য সবার সহযোগিতা প্রয়োজন।
মঙ্গলবার (২৩ মে) সন্ধ্যায় রাজধানীর মতিঝিলে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সদস্যভুক্ত ব্রোকারেজ হাউজ গিবসন সিকিউরিটিজের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গিবসন সিকিউরিটিজের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী শিকদার ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) গোলাম মোস্তফা ভুঁইয়া উপস্থিত ছিলেন।
শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, প্রশ্ন করা হয় ফ্লোর প্রাইস কখন উঠানো হবে? কিন্তু ফ্লো প্রাইস তো আমরাই চাই না। যারা পুঁজিবাজারে ফ্লোর প্রাইস নিয়ে এসেছে, তাদেরকেই এটা উঠাতে হবে। আমরা উঠব না। আমরা বিনিয়োগকারীর সম্পূর্ণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই এই পদক্ষেপ নিয়েছি। আমরা বাজারে আবারো ১৯৯৬ এবং ২০১০ এর মতো কিছুই দেখতে চাই না। এর পরেও যদি আবার পুঁজিবাজার নিয়ে কেউ খেলা করে তাহলে আমরা আবারও ফ্লোর প্রাইস আরোপ করবো।
তিনি বলেন, ব্রোকারেজ হাউজগুলোকে একটু মার্কেটিং করতে হবে। সেটা হচ্ছে এফডিআরের চেয়ে বেশি সিকিউর্ড গভমেন্ট ট্রেজারি বন্ড। যেটা এখন মার্কেটে ট্রেড হচ্ছে। কিন্তু ব্রোকারেজ হাউজগুলো সেটা কেনাবেচা করছেন না। আপনারা যদি ট্রেজারি বন্ড কেনেন, তাহলে সেটার রিটার্ণ ৭ থেকে ১১ শতাংশ। সরকারি বন্ড কেনাবেচা না করা বোকামি। ব্যাংকের এফডিআরের চেয়ে ট্রেজারি বন্ড অধিক নির্ভরযোগ্য। লেনদেন বাড়াতে হলে ট্রেজারি বন্ডের লেনদেন করতে হবে। নতুন প্রোডাক্ট, নতুন আইটেড বাজারে না আনলে লেনদেন বাড়বে না। আমাদের অর্থনীতির সঙ্গে পুঁজিবাজার বড় হচ্ছে। তবে যতটা ভেবেছি ততটা হচ্ছে না। আমরা চেষ্টা করছি।
বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, আমাদেরকেও সামনের দিকে এগোতে হবে। সেখানের ক্যাপিটাল মার্কেটের মিসিং কম্পোনেন্টগুলোকে অ্যাড করে মার্কেটকে বড় করতে হবে। অনেকেই বলেন, আমারা সেকেন্ডারি মার্কেটকে কেন ভালো করছি না। আসলে সেকেন্ডারি মার্কেটকে ভালো করতে হলে প্রাইমারি মার্কেটকে শক্তিশালী করতে হবে। আমাদের পুঁজিবাজারে যদি ভালো ভালো কোম্পানি না আসে তাহলে এটা সম্ভব নয়। আমরা সারাক্ষণ চেষ্টা করে যাচ্ছি পুঁজিবাজারে ভালো বা সরকারি কোম্পানি আনতে। এখন আমরা যত গভর্নেন্স ও কমপ্লায়েন্স করি এখন আরো কোম্পানি আসতে চায় না।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক আবু নাসের, ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এম সাইফুর রহমান মজুমদার, বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) প্রেসিডেন্ট ছায়েদুর রহমান, ব্রোকার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিবিএ) প্রেসিডেন্ট রিচার্ড ডি’ রোজারিও। এ সময় বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাউজের বিনিয়োগকারী উপস্থিত ছিলেন।