বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া বিশ্ব ইজতেমায় রোববার আখেরি মোনাজাতের আগমুহূর্ত পর্যন্ত একজন পুলিশ সদস্যসহ ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ইজতেমা ময়দানে ১৩ জন, ময়দানে আসার পথে ৮ জন মৃত্যুবরণ করেন।
তারা হলেন- রাজবাড়ী জেলার পাংশা থানার সানোয়ার হোসেন (৬০), চট্টগ্রামের আনোয়ারা এলাকার জলিলের মিয়ার ছেলে আলম (৫৬), নরসিংদীর নুরুল ইসলামের ছেলে শাহনেওয়াজ (৬০), সিরাজগঞ্জ জেলার ওসমান গনির ছেলে আল মাহমুদ (৭০), শেরপুর জেলা সদরের জুগনিবাগ গ্রামের মৃত সমশের আলীর ছেলে নওশের আলী (৬৫), ভোলার পরাগগঞ্জ থানার সামানদার গ্রামের বেলায়েত হোসেনের ছেলে আব্দুল কাদের (৫৫), নেত্রকোনা সদরের কালিয়াঝুড়ি এলাকার হোসেন আহম্মদের ছেলে স্বাধীন (৪৫), নেত্রকোনা সদরের কুনিয়া কুমরি বাজার গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে আবদুস সাত্তার (৭০), একই জেলার বুড়িঝুড়ি গ্রামের স্বল্ফদুগিয়া গ্রামের আব্দুস ছোবাহানের ছেলে এখলাস মিয়া (৬৮), ভোলা জেলার গোলি গ্রামের নজির আহমেদের ছেলে শাহ আলম (৬০), জামালপুর জেলার তুলশীপুর এলাকার পাকুল্লা গ্রামের হযরত আলীর ছেলে মতিউর রহমান (৬০), টঙ্গীর বসির মিয়ার ছেলে আব্দুল জব্বার (৫৫)। আরেকজনের পরিচয় জানা যায়নি।
এদিকে ময়দানে আসার সময় মারা যাওয়া ৮ জন হলেন- ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল থানার ধামাউরা গ্রামের ইউনুছ মিয়া (৬০), চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর থানার চৌহদ্দীটোলা গ্রামের জামান মিয়া (৪০), পুলিশ সদস্য হাসানুজ্জামান হাসান (৩০), শেরপুরের আমেলা খাতুন (৬০), ঢাকার মিরপুরের বাসিন্দা মোশাররফ আহমেদের ছেলে মোবাশ্বের আহমেদ (৬৮) ও আরেকজনের পরিচয় পাওয়া যায়নি।
এদিকে রোববার আখেরি মোনাজাতে অংশগ্রহণ করতে আসা দুই মুসল্লি মৃত্যুবরণ করেন। তারা হলেন- নরসিংদী জেলার দক্ষিণ সাদারচর গ্রামের কাজল মিয়ার ছেলে মো. সোহেল (৩৫) ও একই এলাকার মনির হোসেনের ছেলে মো. জনি (১৬)। সকাল পৌনে ৭টায় টঙ্গী-কালীগঞ্জ সড়কের শিলমুন এলাকায় কার্ভাডভ্যান ও অটোরিকশার সংঘর্ষে তারা মারা যান।
বিশ্ব ইজতেমার মিডিয়া সমন্বয়ক মো. হাবিবুল্লাহ রায়হান মৃত্যুর সংবাদগুলো নিশ্চিত করেন।
এদিকে আখেরি মোনাজাত উপলক্ষে গাজীপুর পুলিশ প্রশাসন বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করে। গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মাহবুব আলম জানান, আখেরি মোনাজাত উপলক্ষে পুরো ময়দানকে নিরাপত্তা চাদরে ঢেকে ফেলা হয়। এছাড়াও ৬ হাজার পুলিশসহ র্যাব, সাদা পোশাকে গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যসহ প্রায় ১৫ হাজার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়। পাশাপাশি আকাশ পথে হেলিকপ্টার ও নদীপথে স্পিডবোটে সার্বক্ষণিক টহল দেয় র্যাব সদস্যরা।
এছাড়া শুক্রবার থেকে রোববার আখেরি মোনাজাতের পূর্বমুহূর্ত পর্যন্ত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত সাড়ে ২২ হাজার মুসল্লিকে চিকিৎসা সেবা প্রদান করেছে টঙ্গী শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতাল ও সরকারি সেবাদান কেন্দ্রগুলো। এদের মধ্যে ৩৮ জনকে ভর্তি ও ৬৩ জনকে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
ইজতেমা ময়দানের উত্তরপাশে অলিম্পিয়া স্কুল মাঠে স্থাপিত র্যাব ক্যাম্প ১ হাজার ২৩০ জন, জহিরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতাল সাড়ে ৩ হাজার, টঙ্গী ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ২ হাজার ৬শসহ বিভিন্ন বিনামূল্যের চিকিৎসা কেন্দ্রগুলোতে প্রায় ১৫ হাজার মুসল্লিকে সর্দি-কাশি, জ্বর, পেটেরপীড়া, উচ্চরক্তচাপজনিত কারণে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।