শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ার ইস্যুর প্রস্তাব বাতিল করে দিয়েছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। গত মঙ্গলবার বিএসইসির কমিশন সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আজ ডিএসই ওয়েবসাইটে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
জানা যায়, কোম্পানির উদ্যোক্তা-পরিচালকদের কাছে নতুন করে শেয়ার ইস্যু করে মূলধন সংগ্রহের উদ্যোগ নিয়েছে আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ। চলতি বছরের ৮ এপ্রিল কোম্পানিটিকে এই প্রক্রিয়ায় মূলধন বৃদ্ধির অনুমোদনও দেয় বিএসইসির বিগত কমিশন। আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ তাদের বর্তমান উদ্যোক্তা-পরিচালকদের বিপরীতে প্রায় ৯ কোটি ৯০ লাখ শেয়ার ইস্যু করে ২০০ কোটি টাকা মূলধন সংগ্রহের অনুমোদন নেয়। নতুন করে সংগ্রহ করা এই অর্থ ঋণ পরিশোধে ব্যবহার করার কথা ছিল কোম্পানিটির।
তবে নতুন শেয়ার ছেড়ে মূলধন বৃদ্ধির অনুমোদন-সংক্রান্ত চিঠিতে আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজকে তিন মাস সময় দেওয়া হয়। নির্ধারিত এই সময়ের মধ্যে এই অর্থ জমা দিতে বলা হয় উদ্যোক্তাদের। কিন্তু সেই শর্ত পালনে ব্যর্থ হয় কোম্পানিটি। তিন মাসের মধ্যে অর্থ জমা না দিয়ে সময় বাড়ানোর আবেদন করে কোম্পানিটি। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ে অর্থ উত্তোলন করতে না পারায় শেয়ার ইস্যুর প্রস্তাবকেই বাতিল করে দিয়েছে বিএসইসির নতুন কমিশন।
সূত্র বলছে, বিগত কমিশনের সময় বেশ কিছু কোম্পানির উদ্যোক্তারা বাজারমূল্যের চেয়ে কম দামে নিজেদের নামে নতুন শেয়ার ইস্যুর সুবিধা হাতিয়ে নেয়। এদের মধ্যে অন্যতম আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ। কোম্পানিটিকে বাজারমূল্যের প্রায় পাঁচ ভাগের এক ভাগ মূল্যে উদ্যোক্তা-পরিচালকদের কাছে নতুন শেয়ার ইস্যুর অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। গত ৮ এপ্রিল যেদিন বিএসইসির পক্ষ থেকে এই অনুমোদন দেওয়া হয়, সেদিন প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) কোম্পানিটির শেয়ারের বাজারমূল্য ছিল ১১০ টাকার বেশি। অথচ কোম্পানির উদ্যোক্তারা মাত্র ২২ টাকায় নিজেদের মধ্যে নতুন শেয়ার ইস্যুর অনুমোদন পায়, যার মধ্যে ১০ টাকা অভিহিত মূল্য আর ১২ টাকা অধিমূল্য বা প্রিমিয়াম। এত কম দামে শেয়ার ইস্যুতে কারসাজির আশঙ্কা থেকে যায়।
বাজার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, মূলত এসব উদ্যোক্তা বেনামে শেয়ার কিনে বাজারে প্রথমে শেয়ারের মূল্যবৃদ্ধি ঘটায়। এরপর বাজারমূল্যের চেয়ে কয়েক গুণ কম দামে নতুন শেয়ার ইস্যু করে। পরবর্তী সময়ে সেসব শেয়ার বিক্রি করেও বিপুল মুনাফা তুলে নেয় বাজার থেকে। মূলত শেয়ারের দাম বাড়িয়ে বাড়তি মুনাফা করতেই এ ধরনের সুবিধা পেয়েছিল কিছু কোম্পানি।