ইউরোপ-আমেরিকার সংবাদ মাধ্যম থেকে শুরু করে পাড়ার চায়ের দোকান, যেখানেই কান পাতা হয়, সেখানেই শোনা যায় লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনা কাতার বিশ্বকাপের ফেভারিট। তবে সেটা স্রেফ সাধারণ মানুষের কথা। খোদ মেসি জানালেন, তেমনটা যদি নিজেদের বিশ্বাসও হয়, তাহলে বড় ভুলই করে বসবে আর্জেন্টিনা।
আর্জেন্টিনা নিজেদের শেষ ম্যাচটা হেরেছে তিন বছরেরও কিছু বেশি সময় আগে। ২০১৯ কোপা আমেরিকার সেমিফাইনালে ব্রাজিলের কাছে ২-০ গোলে হারের পর থেকে আর কোনো ম্যাচে হার নেই লিওনেল স্ক্যালোনির দলের। ৩৫ ম্যাচ অপরাজিত আছে লা আলবিসেলেস্তেরা। আর দুটো ম্যাচ জিতলেই সবচেয়ে বেশি ম্যাচে অপরাজিত থাকার রেকর্ডটাও নিজেদের করে নেবে মেসির দল।
এত ম্যাচ অপরাজিত থেকেও অবশ্য ফেভারিটের খাতায় নাম লেখাত না আর্জেন্টিনা, যদি না গেল বছর কোপা আমেরিকা শিরোপাটা ঘরে না তুলতো। ব্রাজিলের মাটিতে ফাইনালে তাদেরই হারিয়ে শিরোপাটা জিতেছিল মেসির দল। ২৮ বছরের শিরোপাখরা কেটে যায় তাতে। এরপর থেকেই মূলত বিশ্বজয়ের স্বপ্নটা আবারও মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে আলবিসেলেস্তেদের।
সেই শিরোপা জয় নিশ্চিত হয়ে যাওয়ার পর মাঠেই হাঁটু গেড়ে বসে পড়েছিলেন মেসি। মার্কোস আকুনইয়া, জিওভানি লো চেলসোরা চার পাশ থেকে এসে জড়িয়ে ধরেছিলেন অধিনায়ককে। দুই হাত মুখে টেনে নিয়ে কেঁদেই ফেলেছিলেন মেসি। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে সেই দিনের কথাই আবার রোমন্থন করলেন তিনি।
বললেন, ‘এত কিছুর পর অবশেষে আর্জেন্টিনা জাতীয় দলের হয়ে একটা দারুণ মুহূর্ত এলো! অনেক বছর পর, এতগুলো হতাশা পেরিয়ে অবশেষে এসেছে এই মুহূর্তটা। সে কারণেই আমি কোপা আমেরিকা জেতার পর কেঁদে ফেলেছিলাম।’
এরপর থেকেই বিশ্বকাপের স্বপ্নটা আর্জেন্টাইনদের বুকে দানা বাঁধতে থাকে ধীরে ধীরে। চলতি বছর জুনে যখন লা ফিনালিসিমায় ইতালিকে আর্জেন্টিনা হারাল ৩-০ গোলে, এরপর থেকে তো প্রত্যাশার পারদটা আকাশই ছুঁয়ে ফেলেছে রীতিমতো!
তবে মেসি জানালেন, সেসবে নিজেরাও গা ভাসিয়ে দিলে চলবে না। আর্জেন্টিনা অধিনায়ক সম্প্রতি হোর্হে ভালদানোকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বললেন, ‘আমি মনে করি আমরা একটা ভালো মুহূর্তে আছি এখন। তবে মানুষের পাগলামিতে আমাদের গা ভাসিয়ে দেওয়াটা চলবে না। আমাদের বিশ্বাস করা চলবে না যে আমরা বিশ্বকাপের ফেভারিট। আমাদের বাস্তববাদী হতে হবে, ধাপে ধাপে এগোতে হবে।’
মেসিদের বিশ্বকাপ মিশন শুরু হবে আগামী ২২ সেপ্টেম্বর। বিশ্বকাপের ‘সি’ গ্রুপে আর্জেন্টিনা সেদিন মুখোমুখি হবে সৌদি আরবের। এরপর ২৭ নভেম্বর মেক্সিকো আর ১ নভেম্বর পোল্যান্ডের বিপক্ষে খেলবেন মেসিরা।