নভেম্বর ১৫, ২০২৪

ভুটানি রেফারির ম্যাচ শেষের বাঁশি। কমলাপুর স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে দর্শকের উল্লাস। ডাগআউট থেকে কোচিং স্টাফরা ছুটছেন মাঠে। শামসুন্নাহাররাও ছুটছেন মাঠজুড়ে। নারীদের অনূর্ধ্ব-২০ সাফ ফুটবলে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ।

গত সেপ্টেম্বরে কাঠমান্ডুতে সাবিনারা স্বাগতিক নেপালকে হারিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার সেরা হয়েছিল। সিনিয়র নারী সাফের সেই টুর্নামেন্টের পর ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়েছিল অনূর্ধ্ব-১৫ সাফ। টুর্নামেন্টে বাংলাদেশকে পরাজিত করে নেপাল চ্যাম্পিয়ন হয়। পাঁচ মাসের মধ্যে সাফ পর্যায়ে বাংলাদেশ-নেপালের তৃতীয় শিরোপা লড়াই। অ-১৫ পর্যায়ে বাংলাদেশ ব্যর্থ হলেও অ-২০ টুর্নামেন্টে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ।

নারী ফুটবলে বাংলাদেশ দল দক্ষিণ এশিয়ার বড় নাম। সেটি এখন প্রতিষ্ঠিতও। ২০১৭ সাল থেকে সাফের বয়স ভিত্তিক নারী টুর্নামেন্টের সবকটিতেই ফাইনাল খেলেছে বাংলাদেশ। এটি দক্ষিণ এশিয়ায় নারীদের বয়স ভিত্তিক পর্যায়ে চতুর্থ শিরোপা।

কমলাপুরের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোস্তফা কামাল স্টেডিয়াম বাংলাদেশের নারী ফুটবলের জন্য পয়মন্ত ভেন্যু। বয়স ভিত্তিক সাফে এটি নারীদের তৃতীয় শিরোপা জয়ের ভেন্যু। এবারের অ-২০ টুর্নামেন্টে শুরু হয়েছিল নেপালকে হারিয়ে। ফাইনালে সেই নেপালের বিপক্ষে ৩-০ গোলে জিতেছে বাংলাদেশ।

প্রথমার্ধে বাংলাদেশ ২-০ গোলে এগিয়ে ছিল। দ্বিতীয়ার্ধে আরও একটি গোল করে বাংলাদেশ। ৮৬ মিনিটে শাহেদা আক্তার রিপা বক্সের একটু সামনে থেকে দুর্দান্ত ফ্রি কিক নেন। ক্রসবারের সামনে থাকা উন্নতি খাতুন টোকা দিয়ে বল জালে পাঠান। বাংলাদেশ আরেকবার উল্লাসে মাতে।

দ্বিতীয়ার্ধে নেপাল গোল পরিশোধের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছে। হিমালয়ের দেশটি গোলরক্ষক পরিবর্তন করেছে। গোলরক্ষক পরিবর্তন করেও বাংলাদেশের গোল রুখতে পারেনি নেপাল। বিগত তিন ম্যাচের মতো এই ম্যাচেও বাংলাদেশের গোলরক্ষক রুপনা চাকমা তিনটি সেভ করেন।

ম্যাচের মূল টার্নিং পয়েন্ট ছিল প্রথমার্ধের শেষ পাঁচ মিনিট। ঐ পাঁচ মিনিটে বাংলাদেশ দুই গোল পায়। ৪২ মিনিটে শাহেদা আক্তার রিপা ও ইনজুরি সময়ে অধিনায়ক শামসুন্নাহার আরেকটি গোল করেন।

বাংলাদেশ ম্যাচের শুরু থেকে আক্রমণ করছিল। সফরকারী নেপাল বাংলাদেশের আক্রমণ ভালোভাবেই রুখে যাচ্ছিল। ৪২ মিনিটে নেপাল স্বাগতিকদের গোল বঞ্চিত করতে পারেনি। বুদ্ধিদীপ্ত গোল করেন শাহেদা আক্তার রিপা। বাংলাদেশের সংঘবদ্ধ আক্রমণ ক্লিয়ার করতে গিয়ে নেপালের ডিফেন্ডার কুমারী তামাং রিপার পায়ে বল তুলে দেন। বক্সের মধ্যে বল পেয়ে রিপা আড়াআড়ি শটে গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন।

মিনিট তিনেক পর বাংলাদেশকে আরেকবার আনন্দের উপলক্ষ্য এনে দেন অধিনায়ক শামসুন্নাহার। আফিদার বাড়ানো বল নেপালী ডিফেন্ডাররা ঠিকমতো ক্লিয়ার করতে পারেননি। বাংলাদেশের অধিনায়ক সুযোগ সন্ধানী ফরোয়ার্ডের মতো বল নিয়ে জোরালো শটে গোল করেন।

ম্যাচের শুরুটাও ছিল বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রণে। ২ মিনিটে বাংলাদেশের অধিনায়ক শামসুন্নাহারকে বাড়ানো বল ঠেকাতে নেপালের গোলরক্ষক পোস্ট ছেড়ে বেরিয়ে আসেন। গোলরক্ষকের পায়ে লেগে বল আকলিমার কাছে যায়। গোলরক্ষকের মাথার উপর দিয়ে পাঠানো বল পোস্টের উপর দিয়ে যায়। ঐ মিনিটেই বাংলাদেশ কর্ণার আদায় করে। দশ মিনিটের মধ্যে কয়েকটি কর্ণার আদায় করে স্বাগতিক দল।

১৫ মিনিটের মধ্যে চোট পেয়ে নেপালের ফুটবলারকে সাইডলাইনে যেতে হয়। কয়েক মিনিট শুশ্রূষার পরও সুস্থ না হওয়ায় খেলোয়াড় বদল করতে বাধ্য হন নেপালী কোচ। ২২ মিনিটে প্রথম কর্নার পায় নেপাল। ৩৬ মিনিটে নেপাল ভালো আক্রমণ করে। বাম প্রান্ত থেকে নেপালের সেই আমিশা কারকির শট পোস্টের একটু পাশ দিয়ে যায়।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...