নভেম্বর ১৫, ২০২৪

সপ্তাহ ব্যবধানে আবারও অস্থির নিত্যপণ্যের বাজার। চাল-ডাল, মাছ-মাংস ও সবজিসহ প্রায় প্রতিটি পণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী। এতে হাঁসফাঁস অবস্থা সাধারণ ভোক্তাদের। তাদের দাবি, শুধু আশ্বাস দিলেই চলবে না, দাম কমাতে সরকারকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে।

আজ শুক্রবার (১৯ জানুয়ারি) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, সপ্তাহ ব্যবধানে আরও বেড়েছে চালের দাম। গত ৩ সপ্তাহে কেজিতে ৬ থেকে ৮ টাকা পর্যন্ত বেড়ে প্রতি কেজি ২৮-চাল ৫৫ থেকে ৫৭ টাকা, নাজিরশাইল ৭৮ থেকে ৮৪ টাকা, পাইজাম ৫৩ থেকে ৫৪ টাকা, চিনিগুঁড়া চাল ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা ও মিনিকেট ৭০ থেকে ৭২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

রোজার এখনও বাকি মাস দুয়েক। এর মধ্যেই বাড়তে শুরু করেছে আটা-ময়দা, ডাল-ছোলা ও চিনির দাম। সপ্তাহ ব্যবধানে কেজিতে ১-২ টাকা দাম বেড়ে বাজারে খোলা আটা ৫০ থেকে ৫২ টাকা ও প্যাকেটজাত আটা বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা কেজিতে। আর খোলা ময়দা ৬২ থেকে ৭০ টাকা এবং প্যাকেটজাত ময়দা ৭০ থেকে ৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে, কেজিতে ১৫ থেকে ২০ টাকা বেড়ে মুগডাল বিক্রি হচ্ছে ১৭০ টাকায়, আর ৫ টাকা বেড়ে মসুরির ডাল বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকায়। এছাড়া ৫ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি ছোলা বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়।

আর আমদানি শুল্ক অর্ধেক কমানোর পরও বাজারে বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে চিনি। প্রতি কেজি খোলা চিনি বিক্রি হচ্ছে ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকায়। আর প্যাকেটজাত চিনি তো বাজার থেকেই উধাও।

অস্থির বাজারে স্বস্তি নেই শীতকালীন সবজিতেও। সপ্তাহ ব্যবধানে কেজিতে ৫ থেকে ১৫ টাকা বেড়েছে প্রায় প্রতিটি সবজির দাম। বিক্রেতাদের দাবি, বাজারে সবজির সরবরাহ কমায় দাম বেড়েছে। প্রতি কেজি মুলা ২৫ থেকে ৩০ টাকা, ঢ্যাঁড়শ ৮০ টাকা, শালগম ৩০ টাকা, করলা ৬০ থেকে ৭০ টাকা, শসা ৩০ টাকা, লতি ৮০ টাকা, শিম ৪০ থেকে ৫০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, পেঁপে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা ও গাজর ৩০ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া প্রতি কেজি বেগুন জাতভেদে ৬০ থেকে ৮০ টাকা, পটোল ৭০ থেকে ৮০ টাকা, পুরান আলু ৭০ টাকা, টমেটো ৫০ টাকা, কহি ৫০ টাকা, কাঁচা টমেটো ২০ টাকা ও পেঁয়াজের কলি বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। আর প্রতি পিস লাউ ৮০ থেকে ১০০ টাকা, আকারভেদে ফুলকপি ৪০ থেকে ৪৫ টাকা, বাঁধাকপি ৩৫ থেকে ৪০ টাকা ও ব্রকলি ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে দাম কমেছে নতুন আলুর। বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকায়।

এদিকে, পাইকারি ও খুচরা উভয় পর্যায়ে কমেছে কাঁচা মরিচের দাম। বাজারে খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকায়; আর পাইকারি পর্যায়ে বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকায়।

এছাড়া বাজারে লালশাকের আঁটি ১৫ টাকা, পুঁইশাক ২৫ টাকা, পালংশাক ১০ টাকা ও লাউ শাক ৩০ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বরাবরের মতো স্বস্তির খবর নেই মাছের বাজারেও। সপ্তাহ ব্যবধানে কেজিতে সামান্য বাড়লেও তা সাধ্যের বাইরে বলছেন ক্রেতারা। আকারভেদে প্রতি কেজি রুই ৩৮০ থেকে ৪৫০ টাকা, কাতলা ৪০০ থেকে ৪৮০ টাকা, চাষের শিং ৫৫০ টাকা, চাষের মাগুর ৫০০ টাকা, চাষের কৈ ২২০ থেকে ২৫০ টাকা, কোরাল ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা, টেংরা ৫৫০ থেকে ৭০০ টাকা, চাষের পাঙাশ ২০০ থেকে ২২০ টাকা ও তেলাপিয়া ২১০ থেকে ২৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া প্রতি কেজি বোয়াল ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, আইড় ৮৫০ থেকে ৯০০ টাকা, বাইম ১ হাজার টাকা, দেশি কৈ ১ হাজার ৩০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৭০০ টাকা, শিং ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা, শোল ৯০০ থেকে ১ হাজার টাকা ও নদীর পাঙাশ বিক্রি হচ্ছে ৯০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায়।

সপ্তাহ ব্যবধানে বেড়ে গেছে গরু ও মুরগির মাংসের দাম। প্রতি কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে লাল লেয়ারের দাম। তবে কিছুটা কমেছে সোনালি মুরগির দাম। আর গরুর মাংসের দাম বেড়েছে ৫০ টাকা পর্যন্ত।

বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ২০০ থেকে ২১০ টাকা, সোনালি মুরগি ২৯০ থেকে ৩০০ টাকা, দেশি মুরগি ৫০০ থেকে ৫৮০ টাকা, সাদা লেয়ার ২৩০ টাকা ও লাল লেয়ার বিক্রি হচ্ছে ২৯০ টাকায়। আর প্রতি কেজি হাঁস বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকায়।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...