নভেম্বর ১৬, ২০২৪

অশ্লীল চলচ্চিত্র নির্মাণ ও পাইরেসি বন্ধে একটা টাস্কফোর্স গঠন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন টাস্কফোর্স গঠন হলে এগুলো বন্ধ হবে।

বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার-২০২১’ দেওয়া অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, এক সময় ছিল অশ্লীল সিনেমা বা শুধু অনুকরণ করা; সেগুলো না করে ভালো জিনিসটা শিক্ষা নেওয়া আর মন্দ জিনিসটাকে পরিহার করা। সমাজের জন্য কোনটা ভালো সেটা বিবেচনায় আনা। যে যখনই যে চলচ্চিত্র নির্মাণ করবেন সে বিষয়টা দেখা দরকার।

তিনি বলেন, চলচ্চিত্র এমন একটা গণমাধ্যম, যা দেশের মানুষের মন-মানসিকতা বললে আরও উন্নতমানের করে দিতে পারে।

শেখ হাসিনা বলেন, সিনেমাগুলো যেন জীবনধর্মী হয়। সেগুলো কিন্তু মানুষকে বেশি আকর্ষণ করে। কারণ মানুষ তার জীবনের প্রতিচ্ছবি সেখান থেকে পায়। একটা সিনেমা পারে একটা মানুষের জীবন পাল্টে দিতে বা একটা সমাজকে পাল্টে দিতে। সিনেমা, নাটক সব ক্ষেত্রেই কিন্তু এর একটা অবদান রয়েছে। মানুষের চিন্তা-চেতনার উৎকর্ষ ঘটাতে পারে। অন্যায় অপরাধ থেকে দূরে রাখতে পারে।

ভালো সিনেমাগুলোর দর্শকপ্রিয়তার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিগত দিনে আমাদের অনেকগুলো সিনেমা তৈরি হয়েছে যেগুলো সত্যিই আন্তর্জাতিকমান সম্পন্ন। মানুষও কিন্তু সেগুলো লুফে নিয়েছে। সেভাবে আমাদের সবার কাজ করা দরকার।

সিনেমায় অনুদান বাড়ানোর নির্দেশনা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনুদান ভালো থাকলে আমি মনে করি আরও ভালো সিনেমা হবে।

ভালো শিশু চলচ্চিত্র নির্মাণের আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, শিশু চলচ্চিত্রে আমরা পিছিয়ে আছি। শিশুদের জন্য ভালো চলচ্চিত্র নির্মাণ করা দরকার। শিশু চলচ্চিত্র যারা করবে তাদের ভালো অনুদান দেওয়া দরকার।

অনেক কথা বলার পরও কিছু মানুষ বলে তারা কথা বলতে পারে না মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেক সময় অনেকে কথা বলে, টকশো হয়, সারাদিন অনেক কথা। তো অনেক কথা বলার পরে কেউ কেউ বলবে আমরা কথা বলতে পারি না। অথচ বাংলাদেশে এখন ২ হাজার ৪৫৫টি পত্রিকা, ১৭০টি অনলাইন নিউজপোর্টাল, ১৪টি আইপি টিভি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সেখানে সবাইতো মন ভরে কথা বলছে। কথা বলতে পারলো না কোথায়। কে মুখটা বন্ধ করলো আমি জানি না।

শেখ হাসিনা বলেন, আমি দেখলাম ঘণ্টার পর ঘণ্টা অনেক কথা বললো, সরকারকে নানা রকম সমালোচনা করলো। সব কথা শেষ করে তারপর বললো আমি কথা বলতে পারি না।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন- তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হাসানুল হক ইনু, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার।

এর আগে চলচ্চিত্র শিল্পে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা গুণী শিল্পীদের হাতে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী। ২০২১ সালের সিনেমা থেকে এ বছর ২৭ ক্যাটাগরিতে ৩৪টি পুরস্কার দেওয়া হয়।

এবারের আসরে চলচ্চিত্র শিল্পে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে আজীবন সম্মাননা পেয়েছেন প্রখ্যাত অভিনয়শিল্পী ডলি জহুর ও ইলিয়াস কাঞ্চন।

এবার যৌথভাবে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র নির্বাচিত হয়েছে ‘লাল মোরগের ঝুঁটি’ ও ‘নোনাজলের কাব্য’। শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র পরিচালক হয়েছেন রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিত (নোনাজলের কাব্য)।

সেরা স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র বিভাগে পুরস্কার জিতেছে আকা রেজা গালিব পরিচালিত ‘ধর’ ও সেরা তথ্যচিত্র বিভাগে পুরস্কার পেয়েছে ‘বধ্যভূমিতে একদিন’।

যৌথভাবে শ্রেষ্ঠ অভিনেতার পুরস্কার জিতেছেন মো. সিয়াম আহমেদ (মৃধা বনাম মৃধা) ও মীর সাব্বির মাহমুদ (রাতজাগা ফুল) এবং যৌথভাবে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী নির্বাচিত হয়েছেন আজমেরী হক বাঁধন (রেহানা মরিয়ম নূর) ও তাসনোভা তামান্না (নোনাজলের কাব্য)।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...