সব মন্ত্রণালয়, বিভাগ, অধিদপ্তর ও দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পদের বিপরীতে ৫ লাখ ৩ হাজার ৩৩৩টি শূন্য পদ রয়েছে বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।
বুধবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদের অধিবেশনে নোয়াখালী-৩ আসনের সংসদ সদস্য মো. মামুনুর রশীদ কিরণের এক প্রশ্নের লিখিত জবাবে মন্ত্রী এ তথ্য জানান।
ফরহাদ হোসেন বলেন, জনপ্রশাসন থেকে সর্বশেষ প্রকাশিত ‘স্ট্যাটিস্টিকস অব গভর্নমেন্ট সার্ভেন্ট ২০২২’ মোতাবেক সব মন্ত্রণালয়, বিভাগ, অধিদপ্তর ও দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পদের বিপরীতে ৫ লাখ ৩ হাজার ৩৩৩টি শূন্য পদ রয়েছে।
তিনি বলেন, সরকারের শূন্য পদ পূরণ একটি চলমান প্রক্রিয়া। শূন্য পদগুলো পূরণে সুনির্দিষ্ট বিধি মোতাবেক পদ পূরণের নিয়মিত কার্যক্রম চলমান রয়েছে। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়-বিভাগ এবং এর অধীন দপ্তর-সংস্থাগুলোর চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে সরকারি কর্মকমিশনের মাধ্যমে নবম (পূর্বতন প্রথম শ্রেণি) ও ১০ থেকে ১২ গ্রেডের (পূর্বতন দ্বিতীয় শ্রেণি) শূন্য পদে জনবল নিয়োগ করা হয়ে থাকে।
জনপ্রশাসনমন্ত্রী তার লিখিত বক্তব্যে জানান, রুলস অব বিজনেস, ১৯৯৬ এর রুল ২৫ (১) অনুযায়ী প্রণীত মন্ত্রণালয়-বিভাগসমূহের ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসের কার্যাবলী সম্পর্কিত মাসিক প্রতিবেদনে প্রধানমন্ত্রী সরকারের শূন্য পদগুলো পূরণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার সুপারিশ অনুমোদন করেছেন, যা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগে পাঠানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মোতাবেক মন্ত্রণালয়-বিভাগগুলোতে নিয়োগ কার্যক্রম চলমান আছে।
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পঁচাত্তরের পর এবার সবচেয়ে অবাধ-সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়েছে। এবারের নির্বাচনে সবচেয়ে বড় কথা হলো— জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোটকেন্দ্রে গেছে এবং ভোট দিয়েছে। তাদের ভোটের অধিকার তারা ফিরে পেয়েছে, সেটা তারা এবার যথাযথভাবে প্রয়োগ করতে পেরেছে।
রাজধানীর গণভবনে বুধবার গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময়সভায় তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমি মনে করি, বাংলাদেশে পঁচাত্তর সালের পর থেকে যতগুলো নির্বাচন হয়েছে, সব থেকে অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু একটা নির্বাচন এবারের নির্বাচন।
শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের সামনের যাত্রাপথ এত সহজ না। অনেক বাধাবিঘ্ন অতিক্রম করতে হয়। অনেক চক্রান্ত এই বাংলাদেশটাকে ঘিরে আছে। বাংলাদেশের মানুষ আজকে আর্থিকভাবে সচ্ছলতা পেয়েছে। বাংলাদেশের মানুষের আজকে পেটে ভাত আছে। তারা চিকিৎসা পাচ্ছে। কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে ৩০ প্রকার ওষুধ বিনামূল্যে দিচ্ছি। আজকে বিদেশ থেকে পুরনো কাপড় এনে পরতে হয় না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কাজেই ভাত-কাপড়ের ব্যবস্থা যেমন করা হয়েছে, চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি, শিক্ষার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। এভাবে মানুষের কল্যাণে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
ফসল উৎপাদন বাড়ানোর তাগিদ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্বব্যাপী খাদ্যপণ্যের দাম বেড়েছে, অনেক টাকা দিয়ে আমাদের কিনে আনতে হয়— সার, বীজ, গম, জ্বালানি তেল, ভোজ্য তেল, গ্যাস; অনেক কিছুই আমাদের বিদেশ থেকে কিনতে হয়। প্রত্যেকটা জিনিসের দাম যেমন বেড়ে গেছে, সেই সঙ্গে সঙ্গে পরিবহণ খরচ বেড়ে গেছে ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের কারণে।
তিনি বলেন, আমি জানি যে যারা নির্দিষ্ট আয়ের মানুষ তাদের জন্য একটু কষ্ট হচ্ছে। সবাই যদি আমরা অনাবাদি জমিগুলো চাষ করে ফেলি, তা হলে আর এই খাদ্যের অভাব থাকবে না। বরং আমরা আরও উদ্বৃত্ত করতে পারব, মানুষকে দিতেও পারব। যেখানে যত পতিত জমি আছে, সব আমাদের চাষের আওতায় আনতে হবে। তার জন্য যতটুকু সহযোগিতা করা দরকার আমরা করব। সেই সঙ্গে সঙ্গে আমরা সমবায় করে, সমবায়ের মাধ্যমে বাজারজাতের ব্যবস্থা হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, খাদ্যশস্য সংরক্ষণের ব্যবস্থা করার পরিকল্পনা আমাদের আছে। প্রত্যেক জেলায় জেলায় খাদ্যশস্য যাতে সংরক্ষণ করা যায়; যখন উদ্বৃত্ত হবে সেটি সংরক্ষণ করা, প্রক্রিয়াজাত করা—সেভাবে আমরা কাজ করার ব্যবস্থা নিয়েছি ইতোমধ্যে।
এ সময় তিনি বিদ্যুৎ ও পানি ব্যবহারে সাশ্রয়ী হওয়ার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
চেয়ারম্যান-মেম্বারদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আমরা অনেক প্রকল্প দিই, কাজ করি। সেই কাজগুলো যাতে যথাযথভাবে হয়। মানুষ যেন গালি না দেয়। কাজ দেখে যেন মানুষ আস্থা-বিশ্বাস আনতে পারে। এ আস্থা-বিশ্বাস সব থেকে বেশি দরকার।