২০২৩ সালে বিভিন্ন রাজনৈতিক সংঘাতে দেশে কমপক্ষে ৪৫ জনের প্রাণহানি এবং আরও ৬ হাজার ৯৭৮ জন আহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন খবর পর্যালোচনা করে এসব তথ্য পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। আজ রোববার বেলা সাড়ে ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে '২০২৩ সালে মানবাধিকার পরিস্থিতির বিষয় ভিত্তিক বিবরণ' শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে আইন ও সালিশ কেন্দ্রের দেয়া পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, ২০২৩ সালে বিভিন্ন রাজনৈতিক সংঘাতে নিহত হয়েছেন ৪৫ জন, আহত হয়েছেন প্রায় ৭ হাজার, গ্রেফতারের সংখ্যা বিশ হাজারের উপরে।
এসময় বিভিন্নভাবে ২৯০ জন সাংবাদিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন ২০ জন, গত বছর এ সংখ্যা ছিলো ১৯ জন। এবছর কারা হেফাজতে মারা গেছে ১০৫ জন কারাবন্দি, যা গতবছর ছিলো ৬৫ জন। এই বছর গুম ও অপহরণের শিকার হয়েছেন ৯ জন।
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর হাতে এবছর ৩০ জন বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন, যা গত বছর ছিলো ২৩ জন। সারাদেশের গণপিটুনিতে নিহত হয়েছেন ৫১ জন, ২০২২ সালে এই সংখ্যা ছিল ৩৬ জন।
২০২৩ সালে সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে ২১টি। ধর্ষণ ও সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ৫৭৩টি। এর মধ্যে হত্যা করা হয়েছেন ৩৩ নারীকে, আত্মহত্যা করেছেন পাঁচজন। যৌন হারানির শিকার হয়েছেন ১৪২ নারী। যৌতুক ও পারিবারিক নির্যাতনের শিকার হয়েছে ৫০৭ জন নারী। এর মধ্যে মারা গেছেন ২৯২ জন।
এবছর নির্যাতনের শিকার হয়েছে ৩২ জন গৃহকর্মী। শারীরিক নির্যাতন, ধর্ষণসহ বিভিন্ন কারণে কমপক্ষে ৪৮৪ জন নিহত হয়েছে। বিভিন্নভাবে নির্যাতিত হয়েছে ১০১২ শিশু।
পুলিশ সদর দপ্তরের প্রতিবেদন উপস্থাপন করে আসক জানায়, গত ২৮ অক্টোবর থেকে ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত সারাদেশে ২৪১টি যানবাহন ভাঙচুর করা হয়েছে। একই সময়ে ৩৭৬টি যানবাহনে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। শুধু রাজধানীতে ১২৩টি যানবাহনে আগুন দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া তিনটি ট্রেনে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ট্রেন লাইন কেটে যাত্রীবাহী ট্রেনকে দুর্ঘটনায় ফেলার ঘটনাও ঘটেছে। এ ঘটনায় ১ জন নিহত এবং কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের চেয়ারপারসন অ্যাডভোকেট জেড আই খান পান্না, কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক ফারুখ ফয়সল। এছাড়াও অনুষ্ঠানে আসক-এর নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাধারণ সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সূত্র একাত্তর টিভি