ভূমিকস্পে তুরস্ক-সিরিয়া ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। নানা প্রতিকূলতার মধ্যে গত এক সপ্তাহ ধরে উদ্ধার কাজ চলছে। এরই মধ্যে মৃত্যের সংখ্যা ৩৩ হাজার ছাড়িয়েছে।
এদিকে ১২৮ ঘণ্টা পর তুরস্কে ভূমিকম্পের ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে উদ্ধার করা হয় এক শিশুকে। দু’মাস বয়সি ওই শিশু টানা ১২৮ ঘণ্টা ধ্বংসস্তূপের নিচেই চাপা পড়েছিল। সে বেঁচে থাকবে, আশা করেননি কেউ। কিন্তু এত মৃত্যুর মাঝে যেন সজোরে প্রাণের ঘোষণা করেছে এই শিশু। জীবিত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করা গেছে। ধ্বংসস্তূপ সরতেই শিশুর কান্নার শব্দ পেয়ে আনন্দে হাততালি দিয়ে উঠে উদ্ধারকারীরা।
তুরস্কের হাতায় প্রদেশে বাড়িঘরের ধ্বংসাবশেষ সরিয়ে দু’মাসের ওই শিশুকে উদ্ধার করা হয়েছে শনিবার। তাকে উদ্ধারের সময় চারপাশে ভিড় জমে গিয়েছিল। উৎসাহী জনতা শিশুটিকে জীবিত দেখে উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়ে।
গত সোমবার সকালে তীব্র ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছিল তুরস্ক এবং সিরিয়া। তার পর অন্তত ১০০ বার জোরালো আফটার শকে কাঁপে দুই দেশের মাটি। পরিসংখ্যান বলছে, ভূমিকম্পে সিরিয়া এবং তুরস্কে মৃতের সংখ্যা ৩৩ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। তা আরও বাড়তে পারে। দেশের নানা প্রান্তে ভেঙে পড়েছে অন্তত ৬ হাজার বাড়ি। তার ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও অনেক দেহ চাপা পড়ে থাকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। ভূমিকম্পের পাঁচ দিন পরেও চলছে উদ্ধারকাজ।
তুরস্ক এবং সিরিয়ায় প্রবল শীতে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন। তবে বিধ্বস্ত দেশ থেকে মাঝেমধ্যেই এমন আশ্চর্য খবর প্রকাশ্যে আসছে। তুরস্কের সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে এখনও পর্যন্ত এক দু’বছরের শিশুকন্যা, এক অন্তঃসত্ত্বা মহিলা এবং এক ৭০ বছর বয়সি বৃদ্ধাকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা গেছে।
সিরিয়া, তুরস্কের এই ভূমিকম্পকে শতাব্দীর সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক ও প্রাণঘাতী বলে মনে করছেন কেউ কেউ। বলা হচ্ছে, আগামী কয়েক দিনে এই ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়ে যেতে পারে ৫০ হাজার। ২০০৩ সালে ইরানে ভূমিকম্পের বলি হয়েছিলেন ৩১ হাজার মানুষ। এরই মধ্যে সেই নজিরও ভেঙে দিয়েছে তুরস্ক এবং সিরিয়া।