বান্দরবানের রুমা ও থানচিতে তিনটি ব্যাংকে হামলা চালিয়ে লুটের ঘটনাকে তুচ্ছ হিসেবে না দেখার কথা জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। আজ বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে নিজ দফতরে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, সবকিছু জেনে এসব ঘটনার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘কেন হঠাৎ করে তারা (কেএনএফ) এমন ঘটনা ঘটিয়েছে, তা আমাদের জানা ছিল না। তবে যে উদ্দেশ্যেই তারা এসব করুক না কেন; আমরা তাদের কাউকে ছাড় দেব না। আর এমন কিছু ঘটেনি, যাতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করতে হবে। আমরা দেখছি, ব্যবস্থা নিচ্ছি। আগে সবকিছু জেনে নিচ্ছি, তারপর সব ধরনের ব্যবস্থা নেব। এর পেছনে কারা আছেন, কোনো উদ্দেশ্য আছে কিনা? কোনো ধরনের নাশকতা কিংবা অন্য কোনো পরিকল্পনা আছে কিনা, সেগুলো দেখে সেই অনুসারে ব্যবস্থা নেব।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা এসবের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেব। গোয়েন্দা সংস্থাগুলো যেভাবে তথ্য দিচ্ছে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সেভাবেই কাজ করছে। কাজেই পহেলা বৈশাখ কিংবা অন্য কিছু নিয়ে নাশকতার কোনো তথ্য আমাদের কাছে এখনো আসেনি। আবার না আসলেও আমাদের যে সতর্কতা সেটা নেওয়া হচ্ছে।’
আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘আমরা হামলার কারণ বের করবো। আর যারাই দায়ী, তাদের চিহ্নিত করে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এর পিছনে ভূরাজনৈতিক বিষয় জড়িত আছে কিনা জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের কাছে এমন কোনো তথ্য নেই। অনেক কিছু হতে পারে। তবে তথ্য না জানিয়ে কিছু বলতে চাচ্ছি না। কেএনএফের আস্তানা র্যাব ও আর্মি নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছিল। পরে আমাদের সীমানা পার হয়ে তারা ভিন্ন কোনো দেশে আশ্রয় নেয়। সেখানেই তারা অবস্থান করছিল। এখন তারা কোথা থেকে এসেছে কীভাবে এসেছে, মাঝে মধ্যে তাদের প্রতিনিধিরা আমাদের সঙ্গে কথা বলেন। তারা শান্তি চায় বলেও জানিয়েছিল। কিন্তু হঠাৎ করে আক্রমণ ও ব্যাংক ডাকাতির ঘটনা আমাদের কাছে নতুন কিছু মনে হচ্ছে। তবে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মঙ্গলবার রাতে তারাবি নামাজের সময় বান্দরবানের রুমা শাখা সোনালী ব্যাংক ও আশেপাশের এলাকা ঘিরে ফেলে শতাধিক সশস্ত্র দুর্বৃত্ত। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মসজিদ থেকে ব্যাংক ম্যানেজার নেজাম উদ্দিনকে ধরে নিয়ে ব্যাংকের ভেতরে মারধর করে তারা। পরে তাকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। এ সময় ব্যাংকের নিরাপত্তায় নিয়োজিত ১০ পুলিশ ও ৪ আনসার সদস্যকে নিরস্ত্র করে ৮টি চাইনিজ অটোমেটিক রাইফেল, ২টি এসএমজি, ৪টি শটগান ও ৪১৫ রাউন্ড গুলি ছিনিয়ে নেওয়া হয়। এ সময় ২ পুলিশ সদস্য আহত হন।
মঙ্গলবারের এ ঘটনার ১৬ ঘণ্টা পর থানচিতে আরও দুটি ব্যাংকে ডাকাতি হয়। বুধবার বেলা ১টার পর থানচির সোনালী ব্যাংক ও কৃষি ব্যাংকে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, সোনালী ব্যাংক থেকে ১৫ লাখ টাকার বেশি লুট হয়েছে। তবে কৃষি ব্যাংক থেকে লুট হওয়া টাকার পরিমাণ প্রায় আড়াই লাখ। এ ঘটনার পর বান্দরবানে বিভিন্ন উপজেলায় সোনালী ব্যাংকের ৬টি শাখা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।