মানবাধিকার লঙ্ঘণের অভিযোগে হংকংয়ের ৪৯ জন সরকারি কর্মকর্তাদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা জারির সিদ্ধান্ত নিয়েছে ওয়াশিংটন। শিগগিরই এ ইস্যুতে পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত বছর থেকে হংকংয়ের স্বায়ত্তশাসন, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান এবং সেখানকার জনগণের স্বাধীনতা ও অধিকার দমনে তৎপরতা চালাচ্ছে চীন এবং এ ইস্যুতে বেইজিংয়ের সর্বশেষ সংযোজন আর্টিক্যাল ২৩ নামের জাতীয় নিরাপত্তা আইন, যা গত বছর পাস করেছে চীনা পার্লামেন্ট।
হংকংয়ের সরকারি কর্মকর্তা সেই আইন বাস্তবায়নের অজুহাতে সাধারণ জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার ও স্বায়ত্তশাসনের আকাঙ্ক্ষাকে নিষ্ঠুর ভাবে দমন করছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে।
‘গত বছর জনগণের অধিকার এবং স্বাধীনতার প্রতি হংকংয়ের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তার চুড়ান্ত দমনমূলক মনোভাব এবং কার্যক্রম যুক্তরাষ্ট্রের নজরে এসেছে। এসব তৎপরতার প্রতিক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হংকংয়ের সেই সব কর্মকর্তাদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা জারির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কারণ ওয়াশিংটন হংকংয়ে জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল,’ বলা হয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্রম মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে।
তবে নিষেধাজ্ঞার আওতায় হংকংয়ের কোন কোন কর্মকর্তার নাম রয়েছে, তা প্রকাশ করেনি মন্ত্রণালয়; তবে মার্কিন কর্মকর্তারা কয়েকজনের নাম রয়টার্সকে জানিয়েছেন। এর হলেন হংকংয়ের আইন ও বিচার বিষয়ক মন্ত্রী পল লাম, পুলিশ প্রাধান রেমন্ড সিউ, এবং বিচারক অ্যান্ড্রু চিওয়াং, অ্যান্ড্রু চ্যান, জনি চ্যান, এস্থার তোহ এবং আমান্ডা উডকক।
গত বছর নভেম্বরে হংকংয়ের কর্মকর্তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি সংক্রান্ত একটি বিল পাস হয়েছিল। সেই বিলে উল্লেখ ছিল যে হংকংয়ের বিচার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা জাতীয় নিরাপত্তা আইন আর্টিক্যাল ২৩’র অপব্যবহার করছেন।
তার ধারাবাহিকতাতেই সাম্প্রতিক এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্রে।
প্রসঙ্গত, চীনের বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চল হংকং একসময় ব্রিটেনের উপনিবেশ ছিল। ১৯৯৭ সালে এক চুক্তির ভিত্তিতে ব্রিটেন এই অঞ্চলকে চীনের কাছে হস্তান্তর করে। তবে সেই চুক্তিতে উল্লেখ ছিল যে হংকং সব সময় স্বায়ত্বশাসিত অঞ্চলের মর্জাদা পাবে এবং সেখানার প্রশাসনে বেইজিং ‘অযাচিত’ হস্তক্ষেপ করতে পারবে না।
ওয়াশিংটনের কাছে বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে হংকংয়ের। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রতি বছর পার্লামেন্ট কংগ্রেসে ‘হংকং রিপোর্ট’ নামের একটি বার্ষিক প্রতিবেদন জমা দেয়। হংকংয়ের সার্বিক রাজনৈতিক-প্রশানিসক-সামাজিক তথ্যের সমন্বয়ে প্রস্তুত করা হয় সেই প্রতিবেদন।
সূত্র : রয়টার্স