ঢাকার বেইলি রোডে বহুতল ভবনে অগ্নিকাণ্ডে কমপক্ষে ৪৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। দিবাগত রাত ২টার দিকে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন।
৩৩টি মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ এবং ১০টি শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে রাখা হয়েছে। আর ভবনটি থেকে ১১৭ জনকে উদ্ধারের কথা জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
বৃহস্পতিবার রাত ৯টা ৫০ মিনিটের দিকে ভবনটির দ্বিতীয় তলায় ‘‘কাচ্চি ভাই’’ নামের একটি খাবারের দোকানে আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিটের চেষ্টায় রাত ১১টা ৫০ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দ্বিতীয় তলায় আগুনের সূত্রপাত। দ্রুতই আগুন উপরের তলাগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে। ভেতরে থাকা লোকজন আতঙ্কে উপরে উঠে যায়। ভবন থেকে তাড়াহুড়ো করে নামতে গিয়ে কয়েকজন আহত হন। তাদের মধ্যে ১২ জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
জানা গেছে, ৭ম তলা বিশিষ্ট ভবনটির নিচতলায় স্যামসাং মোবাইলের শোরুম, ২য় তলায় কাচ্চি ভাই রেস্টুরেন্ট, ৩য় তলায় পাঞ্জাবির শোরুম, ৪র্থ তলায় খান রেস্টুরেন্ট এবং বাকি ফ্লোরগুলোতেও রেস্টুরেন্ট। মূলত ২য় তলার কাচ্চি ভাই রেস্টুরেন্ট থেকে আগুনের সূত্রপাত। কাচ্চি ভাই রেস্টুরেন্টে রাতের খাবার খেতে খেতে হঠাৎ বিকট শব্দে বিস্ফোরণের শব্দ পাই, এরপর চারদিক অন্ধকারাছন্ন হয়ে পড়ে।
এমনটিই জানিয়েছেন রেস্টুরেন্টে খেতে যাওয়া লোকমান নামের এক ব্যক্তি। তিনি বলেন, ‘রাত আনুমানিক ৯টা ৪৫ মিনিটের দিকে বিকট শব্দে বিস্ফোরণের পর আগুন ধরে যায়। এরপর দৌড়ে বাইরে বের হয়ে আসি।’
এ ঘটনায় লাফিয়ে পড়ে অর্ধশতাধিক আহত হয়েছেন। তাদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে জরুরি বিভাগে নিয়ে আসা হয়েছে।
রাত সাড়ে ১১টায় দেখা যায়, ‘আমরা এখনো উপরে, আমাদের বাঁচান’- এমন চিৎকার করছেন আটকাপড়া অনেকে। তাদের উদ্ধারে নানামুখী চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ফায়ার সার্ভিস। পরে ফায়ার সার্ভিসের টার্ন টেবল লেডার (টিটিএল) ব্যবহার করে তৃতীয় তলায় পৌঁছান উদ্ধারকারীরা। এরপর ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা তৃতীয় তলার কাঁচ ভেঙে আটকেপড়াদের উদ্ধার করতে অভিযান শুরু করেন। একে একে নামিয়ে আনা হয় তাদের। তাদের চোখে-মুখে আতঙ্কের ছাপ।