দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বিদায়ী সপ্তাহে লেনদেনের পরিমাণ আগের সপ্তাহের তুলনায় কমেছে। গেল সপ্তায় লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৭৬২ কোটি ৩ টাকা। শেয়াবাজারে মূলধন পরিমাণ কমেছে ৪৮৩ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। সব ধরনের সূচক পতন হয়েছে। বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দর অপরিবর্তিত রয়েছে। কোম্পানিগুলোর শেয়ার দর উত্থানের তুলনায় পতন বেশি ছিল। অপরদিকে সিএসইতে সূচক ও লেনদেনের সঙ্গে বাজার মূলধনও বেড়েছে গত সপ্তাহে।
সূত্র মতে, গেল সপ্তায় ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৭৬১ কোটি ৩ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ২ হাজার ৫৪০ কোটি ১০ লাখ টাকা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে লেনদেন কমেছে ৭৭৮ কোটি ৭ লাখ টাকা বা ৩০ দশমিক ৬৩ শতাংশ। ডিএসইতে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে ৩৫২ কোটি ৪০ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে গড়ে লেনদেন হয়েছিল ৫০৮ কোটি ২ লাখ টাকা। গেল সপ্তাহে ডিএসইতে তালিকাভুক্ত ৪০০টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়। এর মধ্যে শেয়ার দর বেড়েছে ৫৮টির, দর কমেছে ৬৩টির ও অপরিবর্তিত রয়েছে ২৬১টি কোম্পানির। লেনদন হয়নি ১৮টি কোম্পানির শেয়ার।
সপ্তাহে ডিএসইর সব ধরনের সূচক পতনে লেনদেন শেষ হয়। এক সপ্তাহে ব্যবধানে প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৪ দশমিক ৯৪ পয়েন্ট কমে দাঁড়ায় ৬ হাজার ২১৫ দশমিক ৩০ পয়েন্টে। এছাড়া ডিএসই৩০ সূচক দশমিক ৭৪ পয়েন্ট এবং শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস ৩ দশমিক ৬০ পয়েন্ট কমে দাঁড়ায় যথাক্রমে ২ হাজার ২১৮ দশমিক শূন্য ২ পয়েন্টে এবং ১ হাজার ৩৫৩ দশমিক ২৫ পয়েন্টে।
এদিকে গেল সপ্তাহের শেষে ডিএসইর পিই রেশিও অবস্থান করে ১৪ দশমিক ৩৫ পয়েন্টে। যা আগের সপ্তাহের শেষে একই পয়েন্ট ছিল। পুঁজিবাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, পুঁজিবাজারে কোনো কোম্পানির মূল্য আয় অনুপাত (পিই রেশিও) ১৫ পয়েন্ট ছাড়ালেই তা বিনিয়োগের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। অন্যদিকে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনও (বিএসইসি) মার্জিন ঋণের যোগ্যতা হিসেবে সর্বোচ্চ ৪০ পিই রেশিও বেঁধে দিয়েছে। এ হিসেবে ৪০ পর্যন্ত পিইধারীর শেয়ার বিনিয়োগের জন্য নিরাপদ বলে জানায় বিএসইসি। সেই হিসেবে গত বৃহস্পতিবার ডিএসইর পিই দাঁড়িয়েছে ১৪ দশমিক ৩৫ পয়েন্টে। পিই রেশিও হিসাবে বিনিয়োগ নিরাপদ অবস্থানে রয়েছে।
এদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বিদায়ী সপ্তাহে লেনদেনের পরিমাণ আগের সপ্তাহের তুলনায় বেড়েছে ১২ দশমিক ২৭ শতাংশ। শেয়ারবাজার মূলধন পরিমাণ বেড়েছে ৩০৮ কোটি ৩ লাখ টাকা। বেড়েছে সব ধরনের সূচক।
সিএসইর সূত্র মতে, বিদায়ী সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস গত বৃহস্পতিবার মূলধন দাঁড়ায় ৭ লাখ ৪৮ হাজার ৮০৮ কোটি ৯ লাখ টাকায়। এর আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছিল ৭ লাখ ৪৮ হাজার ৫০০ কোটি ৬ লাখ টাকায়। এক সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন বেড়েছে ৩০৮ কোটি ৩ লাখ টাকা।
গত সপ্তাহে লেনদেন হয়েছে ৬৪ কোটি ১৪ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ৫৭ কোটি ১৩ লাখ টাকা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে লেনদেন বেড়েছে ৭ কোটি ১ লাখ টাকা বা ১২ দমমিক ২৭ শতাংশ। তালিকাভুক্ত ২৭৬টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়। এর মধ্যে শেয়ার দর বেড়েছে ৪২টির, দর কমেছে ৪৫টির ও অপরিবর্তিত রয়েছে ১৮৯টি কোম্পানির। যা কোম্পানিগুলো শেয়ার দর পতন তুলনায় উত্থান ১ দশমিক শূন্য ৭ গুন বেশি হয়েছে।
সব ধরনের সূচক উত্থানে লেনদেন শেষ হয়েছে। এক সপ্তাহে ব্যবধানে প্রধান সূচক সিএএসপিআই দশমিক ১২ শতাংশ বেড়ে দাঁড়ায় ১৮ হাজার ৩৭৪ দশমিক ৪৭ পয়েন্টে। এছাড়া সিএসই৫০ সূচক দশমিক ২১ শতাংশ, সিএসই৩০ সূচক দশমিক ২২ শতাংশ, সিএসইসিএক্স সূচক দশমিক ১২ শতাংশ এবং সিএসআই সূচক দশমিক ১৪ শতাংশ বেড়ে দাঁড়ায় যথাক্রমে ১ হাজার ৩২৩ দশমিক ৩০ পয়েন্টে, ১৩ হাজার ৩৬৪ দশমিক ১৩ পয়েন্টে, ১১ হাজার ১৪ দশমিক ৪৯ পয়েন্টে এবং ১ হাজার ১৫৮ দশমিক ৪৯ পয়েন্টে।