ঈদের দিন থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টিপাত এবং উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জের প্রধান নদীগুলোর পানি বৃদ্ধি পেয়ে নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে। তাহিরপুর উপজেলায় দুটি স্থানে সড়ক ডুবে গিয়ে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এতে টাঙ্গুয়ার হাওরসহ জেলার বিভিন্ন পর্যটন স্পটে বেড়াতে আসা পর্যটকেরা বিপাকে পড়েছেন।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ১৭৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে।
শনিবার (১ জুলাই) সুরমা নদীর ছাতক পয়েন্টে পানি বেড়ে বিপৎসীমার ৭৫ সেন্টিমিটার ওপরে প্রবাহিত হয়। এ ছাড়া সুনামগঞ্জে পৌর শহরের ষোলঘর পয়েন্টে বিপৎসীমার মাত্র ২৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এ ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় ভারতের চেরাপুঞ্জিতে ২২০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
সুনামগঞ্জের হাওর পানিতে ভরপুর থাকার ফলে আতঙ্কে দিন কাটছে স্থানীয়দের। পাহাড়ি ঢল এবং বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির আশঙ্কা বয়েছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
এ দিকে আজ ভোর থেকে দেখা গেছে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার শখক্তিয়ার খলা সড়কসহ দুটি স্থানে পাহাড়ি ঢলের পানিতে সড়ক ডুবে গিয়ে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে অনেকে নৌকা দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছেন। অনেক পর্যটন স্পটে পৌঁছনো সম্ভব হচ্ছে না বিধায় পর্যটক ফিরে যাচ্ছেন।
চট্টগ্রাম থেকে কলেজপড়ুয়া ২০ জনের একটা দল এসেছিলেন টাঙ্গুয়ার হাওর দেখতে। সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় ফিরে গেছেন তারা। এ সময় রাজিব ফাহিম নামে এক পর্যটক বলেন, অনেক দূর থেকে আমরা দীর্ঘদিন পরিকল্পনা করে আজ এসেছিলাম। কিন্তু এতো বৃষ্টি যে, শহরেই বসে ছিলাম অনেক সময়। এখানে এসে দেখি সড়ক ডুবে গেছে। এ অবস্থায় কোনো ঝুঁকি নিতে চাইনি বলে চলে যাচ্ছি। বেঁচে থাকলে আবার আসবো।
ঢাকা থেকে স্বপরিবারে এসেছেন হিমেল লাকি। এই পরিবার শিশুদের নিয়ে বিপাকে পরেছেন। হিমেল বলেন, ঈদের ছুটি পেয়ে এসেছিলাম। কিন্তু এই পানির মধ্যে কিভাবে কি করবো বুঝতে পারছি না! আগে জানলে আমরা এই ভয়াবহ অবস্থায় আসতাম না।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ শামসুদ্দোহা বলেন, উজানের ঢল আর বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় এ পরিস্থির সৃষ্টি হয়েছে। নদ-নদীর পানি ক্রমশ বাড়ছে।