সুইজারল্যান্ড থেকে আরও দুই কার্গো বা ৬৭ লাখ ২০ হাজার এমএমবিটিইউ তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) কিনবে সরকার। এতে খরচ হবে এক হাজার ১২৬ কোটি ৪৩ লাখ ২২ হাজার ১০১ টাকা।
বুধবার (১২ এপ্রিল) দুপুরে ভার্চ্যুয়ালি অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এ সংক্রান্ত দুটি প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. সাঈদ মাহবুব খান সাংবাদিকদের অনুমোদিত প্রস্তাবগুলোর বিষয়ে বিস্তারিত জানান।
তিনি জানান, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের অধীন পেট্রোবাংলা কর্তৃক সুইজারল্যান্ডের টোটাল ইঞ্জিনিয়ারিং গ্যাস অ্যান্ড পাওয়ার লিমিটেড থেকে ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৬৪ কোটি ২৭ লাখ ৪৩ হাজার ৮৪১ টাকা।
তিনি জানান, অপর এক প্রস্তাবে সুইজারল্যান্ডের টোটাল ইঞ্জিনিয়ারিং গ্যাস অ্যান্ড পাওয়ার লিমিটেডের কাছ থেকে ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি সর্বমোট ৫৬২ কোটি ১৫ লাখ ৭৮ হাজার ২৬০ টাকায় আমদানির অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
এর আগে ৫ এপ্রিল অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় সুইজারল্যান্ডের এই প্রতিষ্ঠান থেকে ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে ব্যয় ধরা হয় ৬২৪ কোটি ৪০ লাখ ২৪ হাজার ২৬ টাকা।
এছাড়া ৯ মার্চ অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় সুইজারল্যান্ডের এই প্রতিষ্ঠান থেকে ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়। তাতে ব্যয় ধরা হয় ৬১৮ কোটি ২১ লাখ ১৯ হাজার ৪১৯ টাকা। এই এলএনজি জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের অধীন পেট্রোবাংলার মাধ্যমে আমদানি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এদিকে চলতি বছরের ২৩ মার্চ অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় যুক্তরাষ্ট্রের এক্সিলারেট এনার্জি এলপি থেকে ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি আমদানির অনুমোদন দেয়া হয়। এতে ব্যয় ধরা হয় ৫৭৮ কোটি ৬৫ লাখ ২৫ হাজার ১২২ টাকা।
তার আগে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি জাপানের জেরা কোম্পানি থেকে এক কার্গো এলএনজি আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়। সে সময় ব্যয় ধরা হয় ৬৯০ কোটি ৪২ লাখ ৯ হাজার ৩১২ টাকা। মাস্টার সেল অ্যান্ড পার্চেজ অ্যাগ্রিমেন্ট বা মিলিত বিক্রয়-ক্রয় চুক্তিতে (এমএসপিএ) স্বাক্ষর করা প্রতিষ্ঠান থেকে থেকে কোটেশন সংগ্রহ করে ওই এলএনজি আমদানি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজি আমদানিতে খরচ ধরা হয় ১৬ দশমিক ৫০ ডলার।
চলতি বছরের ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হওয়া সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় স্পট মার্কেট থেকে এক কার্গো এলএনজি আমদানির অনুমোদন দেয়া হয়। মাস্টার সেল অ্যান্ড পার্চেজ এগ্রিমেন্ট বা মিলিত বিক্রয়-ক্রয় চুক্তিতে (এমএসপিএ) সই করা প্রতিষ্ঠান থেকে থেকে কোটেশন সংগ্রহ করে ওই এলএনজি আমদানির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
তার আগে ২০২১ সালের ২৩ জুন অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় চার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে মাস্টার সেল অ্যান্ড পার্চেজ অ্যাগ্রিমেন্ট বা মিলিত বিক্রয়-ক্রয় চুক্তির অনুমোদন দেওয়া হয়।
চলতি বছরের আগে পেট্রোবাংলা খোলাবাজার থেকে সর্বশেষ এলএনজি কিনেছিল গত বছরের মে মাসে। তখন প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজির দাম পড়েছিল ২৬ ডলার ৪ সেন্ট।
এদিকে গ্যাস সংকটের কারণে গত কয়েক বছর বাসাবাড়ির পাশাপাশি শিল্পেও নতুন সংযোগ বন্ধ রাখেছে সরকার। প্রাকৃতিক গ্যাসের সংকট বিবেচনায় ২০১৮ সালের ২৫ এপ্রিল এলএনজি আমদানি শুরু করে সরকার। সামিট এলএনজি ও যুক্তরাষ্ট্রের এক্সিলারেট এনার্জির স্থাপন করা ভাসমান টার্মিনালের (এফএসআরইউ) মাধ্যমে আমদানি করা এলএনজি সরবরাহ করা হচ্ছে।