এপ্রিল ১৯, ২০২৪

সংকট কাটাতে ধারাবাহিকভাবে রিজার্ভ থেকে ডলার বাজারে ছাড়ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে ব্যাপকহারে চাপ বাড়ছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে। এসবের মধ্যে চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে প্রবাসীরা ডলার পাঠিয়েছে ১ হাজার ৬০৩ কোটি। এরমধ্যে ঢাকা বিভাগের প্রবাসীরা রেমিট্যান্স পাঠিয়েছে ৭৬৫ কোটি ৩২ লাখ ডলার।

সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে (জুলাই-মার্চ) প্রবাসীরা মোট ১ হাজার ৬০৩ কোটি ডলার পাঠিয়েছে। এরমধ্যে ঢাকা বিভাগের প্রবাসীরা সর্বোচ্চ ৭৬৫ কোটি ৩২ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছে। মার্চ মাসে মোট রেমিট্যান্স আসে ২০১ কোটি ৭৬ লাখ ডলার। এই মাসে ঢাকা বিভাগের প্রবাসীরা পাঠায় ৯৬ কোটি ডলারের কিছুটা বেশি।

চলতি বছরের মার্চ মাসে ঢাকা জেলার প্রবাসীরা পাঠায় ৬৬ কোটি ১৮ লাখ ডলার, টাঙ্গলাইের প্রবাসীরা ৩ কোটি ৩২ লাখ, গাজীপুরের ২ কোটি ৭৩ লাখ, কিশোরগঞ্জ ২ কোটি ৮৩ লাখ, মুন্সিগঞ্জ ৩ কোটি ৮০ লাখ, নারায়নগঞ্জ ২ কোটি ৯৬ লাখ, নরসিংদী ৪ কোটি ১৮ লাখ, মাদারীপুর ২ কোটি ৪৯ লাখ, শরিয়তপুর ২ কোটি ৪১ লাখ, ফরিদপুর ১ কোটি ৮৯ লাখ, মানিকগঞ্জ ১ কোটি ৬৯ লাখ, গোপালগঞ্জ ৮১ লাখ এবং রাজবাড়ীর প্রবাসীরা ৭২ লাখ ডলারের রেমিট্যান্সের পাঠিয়েছেন।

রমজান ও ঈদের কারণে আগের চেয়ে বেশি আয় পাঠাচ্ছেন প্রবাসীরা। আবার জাকাতের তহবিলও আসছে। এ ছাড়া ডলার-সংকটের কারণে অনেক ব্যাংক বেশি দামে প্রবাসী আয় নিয়ে আসছে। এর প্রভাব পড়েছে প্রবাসী আয় আসার চিত্রে। ব্যাংকগুলো এখন প্রবাসী আয় সর্বোচ্চ ১০৭ টাকা দাম দিতে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্মকর্তারা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, এই নয় মাসে বরিশাল বিভাগের প্রবাসীরা ৩৮ কোটি ৮৪ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছে। চট্টগ্রাম বিভাগের প্রবাসীরা ৪৩৬ কোটি ৩ লাখ, খুলনা বিভাগের ৭০ কোটি ১৩ লাখ, ময়মনসিংহ বিভাগের ২৯ কোটি ৩৫ লাখ, রাজশাহী বিভাগের ৫৬ কোটি ৮৭ লাখ, রংপুর বিভাগের ২৬ কোটি ২৭ লাখ এবং সিলেট বিভাগের প্রবাসীরা ১৭৯ কোটি ৯৫ লাখ ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন।

বিদায়ী ২০২১-২০২২ অর্থবছরে মোট রেমিট্যান্স এসেছিল ২ হাজার ১০৩ কোটি ১৭ লাখ মার্কিন ডলার। এর আগে ২০২০-২১ অর্থবছরে রেমিট্যান্স আহরণের পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৪৭৭ কোটি ৭৭ লাখ মার্কিন ডলার।

রেমিট্যান্স বাড়াতে বাংলাদেশ ব্যাংক বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। বৈধপথে রেমিট্যান্স পাঠাতে বিভিন্নভাবে উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সর্বশেষ সেবার বিনিময়ে দেশে রেমিট্যান্স আয় আনতে ফরম সি পূরণ করার শর্ত শিথিল করেছে। পাশাপাশি সেবা খাতের উদ্যোক্তা ও রপ্তানিকারকদের ঘোষণা ছাড়াই ২০ হাজার মার্কিন ডলার বা সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা দেশে আনার সুযোগ দেওয়া হয়েছে।

রেমিট্যান্স বাড়াতে যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে সেগুলোর মধ্যে বৈধ উপায়ে ওয়েজ আর্নার্স রেমিট্যান্সের বিপরীতে আড়াই শতাংশ নগদ প্রণোদনা, রেমিট্যান্স প্রেরণকারীদের সিআইপি সম্মাননা দেওয়া, রেমিট্যান্স বিতরণ প্রক্রিয়া সম্প্রসারণ ও সহজ করার পাশাপাশি অনাবাসী বাংলাদেশিদের জন্য বিনিয়োগ ও গৃহায়ন অর্থায়ন সুবিধা দেওয়া, ফিনটেক পদ্ধতির আওতায় আন্তর্জাতিক মানি ট্রান্সফার অপারেটরকে বাংলাদেশের ব্যাংকের সঙ্গে ড্রয়িং ব্যবস্থা স্থাপনে উদ্বুদ্ধ করা এবং রেমিট্যান্স পাঠাতে ব্যাংক বা এক্সচেঞ্জ হাউসগুলোর চার্জ ফি মওকুফ করা হয়েছে।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *