প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ইউক্রেনের যুদ্ধ আর স্যাংশানের কারণে আজকে আমাদের যথেষ্ট সমস্যা মোকাবিলা করতে হচ্ছে। সে জন্য আমরা বলেছি, কৃচ্ছ্রতা সাধন করতে হবে সবাইকে। কৃচ্ছ্রতা সাধন করেই আমাদের চেষ্টা করতে হবে। এরসঙ্গে সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে দেশজ উৎপাদন বাড়াতে হবে। পাশাপাশি মানবসেবার ব্রত নিয়ে সরকারি কর্মকর্তাদের নিজ দায়িত্ব পালন করতে হবে।
বুধবার (২ নভেম্বর) ঢাকার শাহবাগে বিসিএস প্রশাসন একাডেমিতে ১২৪, ১২৫ এবং ১২৬তম আইন ও প্রশাসন প্রশিক্ষণ কোর্সের সমাপনী এবং সনদ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
করোনাভাইরাস মহামারির অভিঘাতে বিশ্বজুড়ে সংকট তৈরি হলেও তা মোকাবিলা করেও দেশের অর্থনীতিকে সচল রাখতে সরকার সক্ষম হয়েছে। দেশকে গড়ে তুলতে হলে যোগাযোগ ব্যবস্থা, বিদ্যুৎ এবং উৎপাদন বাড়ানোকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘উৎপাদন বৃদ্ধিটা সব থেকে প্রয়োজন। এখনকার যুগে আমি মনে করি সব থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে পড়েছে। একদিকে কোভিড-১৯ মহামারির যে অভিঘাত, সেই সঙ্গে সঙ্গে এসেছে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ। তার সঙ্গে হলো আমেরিকা প্রদত্ত স্যাংশান এবং কাউন্টার স্যাংশান। ইউরোপের দেয়া স্যাংশান, যার ফলে আজকে প্রত্যেকটা জিনিস যেগুলো আমাদের আমদানি করতে হয়, সবকিছুর দাম বেড়ে গেছে।
তিনি বলেন, ‘এটা শুধু বাংলাদেশ না, উন্নত দেশগুলোও হিমশিম খাচ্ছে। আমি জানি, উন্নত দেশগুলোর অবস্থা, এমনকি আমেরিকা, ইউরোপ, ইংল্যান্ডসহ প্রত্যেকটা দেশ এখন অর্থনৈতিক মন্দার কবলে। বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারছে না, খাদ্যের দাম অতিরিক্ত বেড়ে গেছে, সেখানে সব জায়গায় রেশনিং করে দেয়া। এমন একটা অস্বাভাবিক পরিস্থিতি। এ পরিস্থতি থেকে উত্তরণে উৎপাদন বাড়ানোর ওপর সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই পরিস্থিতিতে আমাদের কী করণীয়, আমি বহু আগে থেকে বলে যাচ্ছি, এক ইঞ্চি জমি যেন খালি না থাকে। কারণ আমাদের খাদ্য আমাদের উৎপাদন করতে হবে। খাদ্য আমাদের প্রক্রিয়াজাতকরণের জন্য আমার ইন্ডাস্ট্রিয়ালাইজেশন দরকার। আমাদের দেশের মানুষের খাদ্যের নিরাপত্তা, পুষ্টির নিরাপত্তা, সেগুলো নিশ্চিত করতে হবে, এটা আমাদের নিজেদের করতে হবে।
সরকারপ্রধান বলেন, ‘এটা সবসময় মনে রাখতে হবে। বাইরে থেকে নিয়ে আসা…এটা অত্যন্ত কঠিন একটা সময় আমাদের পার করতে হচ্ছে। কাজেই সেই অবস্থায় আমরা যদি নিজেরা দাঁড়াতে পারি, সেটা হবে আমাদের জন্য সব থেকে ভালো।’