বিজ ডেস্ক
চলতি বিশ্বকাপে দ্বিতীয় জয়ের খোঁজে রোববার (৩০ অক্টোবর) জিম্বাবুয়েকে ১৫১ রানের লক্ষ্য ছুড়ে দিয়েছে বাংলাদেশ। মাঝারি লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নামা ক্রেইগ আরভিনের দল পাওয়ার প্লে’তে ৪ উইকেট হারিয়ে বসেছে। তাসকিন আহমেদ ও মুস্তাফিজুর রহমান নিয়েছে ২টি করে উইকেট।
১৫১ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে শুরুর ওভারেই ওয়েসলে মাধেভেরেকে হারিয়ে বসে জিম্বাবুয়ে। তৃতীয় বলে তাসকিনের বলে থার্ড ম্যানে মুস্তাফিজের তালুবন্দি হন এই ওপেনার। খানিক পর নিজের দ্বিতীয় ওভারে ক্রেইগ আরভিনকে উইকেটের পেছনে আউট করেন তাসকিন।
৮ রান করে জিম্বাবুয়ে দলপতি ফেরার পর মিল্টন শুম্বা ও শন উইলিয়ামস মিলে রান যোগ করতে থাকেন। তবে পাওয়ার প্লে শেষ হওয়ার ঠিক আগে জোড়া আঘাত হানেন মুস্তাফিজ। দারুন এক ক্যাচে শুম্বাকে প্যাভিলিয়নের পথ দেখান সাকিব। একই ওভারের পঞ্চম বলে সিকান্দার রাজাকেও বিদায় করেন ফিজ।
শেষ ওভারে জিম্বাবুয়ের প্রয়োজন ১৬ রান। শেষ ওভার করার জন্য সাকিব আল হাসান বল তুলে দিলেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের হাতে। প্রথম বলে দিলেন ১ রান। দ্বিতীয় বলে ব্রাড ইভান্স ছক্কা হাঁকাতে গেলেন। কিন্তু বাউন্ডারি লাইনে দাঁড়িয়ে বলটি তালুবন্দী করে নিলেন আফিফ হোসেন ধ্রুব। ৪ বলে প্রয়োজন পড়ে ১৫ রান। তৃতীয় বলটি উইকেটরক্ষকের পেছন দিয়ে বাউন্ডারি মেরে দেন ব্রাড ইভান্স। চতুর্থ বলে দিলেন ছক্কা। ২ বলে জিম্বাবুয়ের প্রয়োজন পড়ে ৫ রান। পঞ্চম বলে ডাউন দ্য উইকেটে খেলতে গিয়ে মিস করেন ইভান্স। বল ধরে স্ট্যাম্প ভেঙে দিতে মোটেও বিলম্ব করেননি নুরুল হাসান সোহান। ১ বলে প্রয়োজন ৫ রান।
শেষ বলে জিম্বাবুয়ের ব্যাটার ব্লেসিং মুজারাবানি। শেষ বলেও উইকেট পেলেন মোসাদ্দেক। এবারও স্ট্যাম্পিং। আউট ধরে নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে জিম্বাবুয়ের খেলোয়াড়রাও মাঠ ছেড়ে উঠে যায়। কিন্তু রিপ্লাইতে দেখা যায়, বল স্ট্যাম্পে আসার আগেই বল ধরে ফেললেন নুরুল হাসান সোহান। থার্ড আম্পায়ার রিভিউ করে দিলেন নটআউট এবং ঘোষণা করলেন নো বল। ফলে এক রান যোগ হওয়ার পাশাপাশি দু’দলকে আবারও মাঠে নামিয়ে আনা হয় এবং ফ্রি-হিট দিয়ে শেষ বলটি করতে বলা হয়। শেষ বলে মুজারাবানি কোনো রান করতে পারেননি।
এর আগে পাওয়ার প্লে’র সুবিধা কাজে লাগাতে পারেননি বাংলাদেশ। ২ ব্যাটারকে হারালেও সাকিব-শান্তর প্রতিরোধে আশা জাগে স্কোরবোর্ডে সম্মানজনক সংগ্রহের। সঙ্গে ৪৫ বলে হাফ সেঞ্চুরি পাওয়া শান্ত’র ৫৫ বলে ৭১ রান দলকে দেড়শোর পথে নিতে বড়ো ভুমিকা রেখেছে। শেষের দিকে আফিফ হোসেনের ৩১ রানের ক্যামিওতে বাংলাদেশ পায় ৩ উইকেটে ১৫৪ রানের পুঁজি।
এদিন টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিলেও অধিনায়কের সিদ্ধান্তের প্রতিদান দিতে পারেননি সৌম্য সরকার। রানের খাতা খোলার আগেই ব্লেসিং মুজারাবানিকে সামলাতে পারেননি এই ব্যাটার। সঙ্গী হারালেও লিটন দাসকে সঙ্গে নিয়ে রান তুলতে থাকেন শান্ত।
তবে পাওয়ার প্লে শেষ হওয়ার ঠিক আগে স্কুপ করতে গিয়ে ১২ বলে ১৪ রানের ইনিংস খেলে ফেরেন লিটন। ৬ ওভার পরও রান রেট ৬-৭ এ রেখেই স্কোরবোর্ডে রান যোগ করতে থাকেন সাকিব আল হাসান ও শান্ত। ১০ ওভারে দলীয় রান গিয়ে দাঁড়ায় ৬২। বিরতির পর এই জুটি হাত খুলতে শুরু করেন। বিশেষ করে শান্ত দ্রুত রান তোলার চেষ্টা করছেন।
কিন্তু ১৩তম ওভারে ৪ বলে এক রান আসায় ৫ম বলে দলকে চাপমুক্ত করতে গিয়ে ৩০ গজে আউট হন সাকিব। শন উইলিয়ামসকে উইকেট ছুঁড়ে দেয়ার আগে তিনি করেন ২০ বলে ২৩ রান। পরের ওভারে রাজার বিপক্ষে সিঙ্গেল নিয়ে ৪৫ বলে হাফ সেঞ্চুরি পুরণ করেন শান্ত।
এরপর ১০ বলে শান্ত যোগ করেন আরও ২১ রান। তবে ৭১ রানে রাজাকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে আউট হন তিনিও। শেষের দিকে মোসাদ্দেককে সাথে নিয়ে দ্রুত রান তুলতে থাকেন আফিফ। শেষ ওভারে ১০ বলে ৭ রান করে মোসাদ্দেক ফিরলেও আফিফ দলকে নিয়ে যান ১৫০’র ওপর।
এর আগে সোহান আউট হন এক রানে, রান আউটের ফাঁদে পড়ে। দেড়শ রানের বেলায় আফিফ ফেরেন লেগ বিফোর হয়ে। ১৯ বলে ২৯ রান করেন তিনি। শেষ ওভারে ৩ ব্যাটারকে হারিয়ে ৭ উইকেটে ১৫০ রানের পুঁজি পায় বাংলাদেশ। ২ উইকেট নেন মুজারাব্বানি।