ছাত্র-জনতার ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন। ভারতের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে বলা হয়েছে, হাসিনা যুক্তরাজ্যে যাবেন এবং সেখানে রাজনৈতিক আশ্রয় নেবেন।
তবে তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় দাবি করেছেন, শেখ হাসিনা কোথাও আশ্রয় চাননি। এছাড়া হাসিনা আর রাজনীতি করবেন না বলে আবারও জানিয়েছেন তিনি।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এমন মন্তব্য করেছেন বলে বুধবার (৭ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যমটি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে ভারতে চলে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘কোথাও আশ্রয় চাননি’ বলে তার ছেলে আজ এনডিটিভিকে স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ৭৬ বছর বয়সী হাসিনা যেভাবেই হোক অবসর নেওয়ার কথা ভাবছেন এবং এখন তিনি রাজনীতি থেকে অবসর নেবেন ও নিজের পরিবারের সদস্যদের সাথে সময় কাটাবেন।
শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়ার বিষয়ে যুক্তরাজ্যের ‘নীরবতা’ এবং যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে হাসিনার ভিসা বাতিল নিয়ে একাধিক প্রতিবেদন সম্পর্কে জানতে চাইলে সজীব ওয়াজেদ বলেন, ‘তার (হাসিনার) আশ্রয় চাওয়ার প্রতিবেদনগুলো ভুল। তিনি কোথাও আশ্রয়ের জন্য অনুরোধ করেননি। তাই (তার আশ্রয়ের বিষয়ে) যুক্তরাজ্য বা যুক্তরাষ্ট্রের এখনও সাড়া না দেওয়ার প্রশ্নটি সত্য নয়।’
যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা বাতিলের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এ ধরনের কোনো আলোচনা হয়নি।
শেখ হাসিনা পদত্যাগের পর সজীব ওয়াজেদ জানিয়েছিলেন, তার মা রাজনীতি ছেড়ে দেবেন। এনডিটিভির সঙ্গে সাক্ষাৎকারে তিনি আজও তা পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘বাংলাদেশে তার (হাসিনার) রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে... আমার মা যেভাবেই হোক অবসর নেওয়ার পরিকল্পনা করছিলেন, এটিই তার শেষ মেয়াদ ছিল।’
তিনি আরও বলেন, তাদের পরিবার এখন একসাথে সময় কাটানোর পরিকল্পনা করছে - তবে সেটা কোথায় এবং কীভাবে তা নিয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি। তার ভাষায়, ‘আমি ওয়াশিংটনে আছি, আমার খালা লন্ডনে, আমার বোন দিল্লিতে থাকে, তাই আমরা জানি না, তিনি হয়তো এই জায়গাগুলোর মধ্যে ভ্রমণ করতে পারেন।’
প্রসঙ্গত, শেখ হাসিনাকে আশ্রয় না দেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে যুক্তরাজ্য। যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জানিয়েছেন, তাদের যে অভিবাসন আইন রয়েছে; সেখানে কোনো ব্যক্তির যুক্তরাজ্যে ভ্রমণ করে এসে রাজনৈতিক বা সাধারণ আশ্রয় নেওয়ার বিধান নেই।
এর বদলে শেখ হাসিনাকে এখন ভারতেই আশ্রয় নেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি রাজনৈতিক আশ্রয় চাইছেন; তিনি প্রথম নিরাপদ যে দেশে পৌঁছান সেখানেই চাওয়া উচিত।’
তিনি আরও বলেছেন, ‘যাদের আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা প্রয়োজন তারা প্রথম যে নিরাপদ দেশে যান সেখানেই এটি চাওয়া উচিত। এটি নিরাপত্তার সবচেয়ে ভালো পথ।’
তবে যুক্তরাজ্যের অনীহা সত্ত্বেও শেখ হাসিনা দেশটির কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে রাজনৈতিক আশ্রয় পাওয়ার আবেদন করতে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছে এনডিটিভি।