ইসরায়েলি বাহিনীর সামরিক অভিযানে বিপর্যস্ত লেবাননকে ‘যে কোনো পরিস্থিতিতে’ সমর্থনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ইরান। দেশটির সর্বোচ্চ আধ্যাত্মিক নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা আলী লারিজানি সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন।
শুক্রবার বৈরুত সফরে যান আলী লারিজানি। লেবাননের তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাতির সাথে বৈঠকও করেন তিনি। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের লারিজানি বলেন, “ইসরায়েল ও লেবাননের সশস্ত্র ইসলামী গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিশ্চিত করতে যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যরা কাজ করার সময় তেহরান ‘যেকোনো পরিস্থিতিতে’ লেবাননের পাশে থাকবে। ইরান লেবাননের জনগণ এবং সরকারের প্রতি সমর্থন দিচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন, “ইরান কোনোকিছুকে ব্যাহত করতে চায় না, বরং সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছে। হিজবুল্লাহ একটি জ্ঞানী আন্দোলন এবং লেবানিজরা একটি জ্ঞানী জাতি। তারা নিজেরাই জানে যে তাদের কী পদক্ষেপ নিতে হবে।”
এদিকে এ ধরনের আলোচনা সত্ত্বেও ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী লেবাননে বিমান অভিযান ও বোমাবর্ষণ অব্যাহত রেখেছে, শুক্রবার বৈরুতের দক্ষিণ শহরতলির ভবনগুলোতে বিমান হামলা চালানো হয়েছে।
ঘটনাস্থল থেকে ধারণ করা ভিডিওতে দেখা গেছে, প্রচণ্ড বিস্ফোরণ হচ্ছে এবং ভবনগুলো ধসে পড়ছে। দাহিয়েহ ও তাইয়ুনেহ এলাকাসহ অন্যান্য এলাকায় বড় ধরনের হামলা চালানো হচ্ছে।
নিজেদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স থেকে পোস্ট করা এক বিবৃতিতে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) বলেছে, বৈরুতের দাহিয়েহ সেকশনে “বেসামরিক জনগণের মধ্যে লুকিয়ে থাকা” হিজবুল্লাহদের ধ্বংস করার প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে ইসরায়েলি গোয়েন্দাদের নির্দেশে বিমান বাহিনীর যুদ্ধবিমানগুলো শুক্রবার দুই দফা হামলা চালিয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, এসব লক্ষ্যবস্তুর মধ্যে রয়েছে হিজবুল্লাহর যুদ্ধাস্ত্রের গুদাম, সদর দপ্তর ও অন্যান্য সন্ত্রাসী অবকাঠামো।
বৃহস্পতিবার বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েলের মধ্যে আন্তঃসীমান্ত লড়াইয়ে লেবাননের ৮৫০ কোটি ডলারের সরাসরি ও অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লেবাননের আবাসন সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রায় ১ লাখ আবাসন ইউনিট আংশিক বা পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে, যার পরিমাণ ২৮০ কোটি ডলার।