সম্প্রতি বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে মিয়ানমারের সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভ্যাশন আর্মি (আরসা) ও রোহিঙ্গা সলিডারিটি অরগানাইজেশনের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। সেই ধারাবাহিকতায় আসরা প্রধান আতাউল্লাহ আবু আম্মার জুনুনীসহ ২৮ শীর্ষ সন্ত্রাসীকে ধরিয়ে দিতে উখিয়ার বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পোস্টার টানানো হয়েছে। পোস্টারে বার্মিজ ভাষায় তাদের সন্ত্রাসী হিসেবে ধরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
শনিবার (২১ জানুয়ারি) সকাল থেকে উখিয়ার কুতুপালং ও বালুখালীর বিভিন্ন ক্যাম্পে এ ধরনের পোস্টার দেখতে পান সাধারণ রোহিঙ্গারা। এর আগে রাতে এসব পোস্টার লাগানো হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে কারা এ পোস্টার লাগিয়েছে তা নিশ্চিত করতে পারেননি কেউ।
পোস্টারে উল্লেখ থাকা ২৮ জন সন্ত্রাসী হলেন—আরসা প্রধান আতাউল্লাহ আবু আম্মার জুনুনী, হেদায়েত উল্লাহ ওরফে খালেদ, মৌভলী মোস্তাক (এফসিএন নং ০২৪৩৭৭), মৌলভী লাল মোহাম্মদ ওরফে বোরহান, নুর কামাল ওরফে সমি উদ্দিন (এফসিএন নং ১৩১৪৪১), ইব্রাহীম (এফসিএন নং ১৪০২১০), মৌলভী জাকারিয়া (এফসিএন নং ১২৮৬৫৫), কাউসার ওরফে সাবের, খায়রুল আমিন ওরফে ইব্রাহীম, আলী জোহর (এফসিএন নং ২৮৪৬৫২), হাফেজ ইউনূছ, সানাউল্লাহ, জুলাইয়ার (এফসিএন নং ১৩০৪৫১), শফিক (এফসিএন নং ৫০৫৯৭২), নুর মাহমুদ (এফসিএন নং ১৩৯৬৪৬), হাফেজ নুর মোহাম্মদ (এফসিএন নং ১২৮৯১৩), আব্দুর রহমান, হাসান, জাহিদ হোসেন ওরফে লালু, মাস্টার আব্দুর রহিম, জান্নাত উল্লাহ, মোহাম্মদ সলিম, মাহামুদুর রহমান, মোহাম্মদ জুবাইয়ের (এফসিএন নং ১১২৩৫৩) ও মোহাম্মদ আলম ওরফে মুসা।
পোস্টারে বার্মিজ ভাষায় যা লেখা—তারা সন্ত্রাসী। এ মানুষগুলোকে ধরিয়ে দেওয়ার আহ্বান। যদি কোনো ক্যাম্পে কেউ তাদের দেখতে পায় তাহলে সংশ্লিষ্টদের অবহিত করার জন্য বলা হলো।
রোহিঙ্গা নেতা মোহাম্মদ জাকারিয়া বলেন, সকাল থেকে বিভিন্ন ক্যাম্পের ব্লকে ব্লকে এ ধরনের পোস্টার দেখা যাচ্ছে। যেখানে সন্ত্রাসীদের অস্ত্রসহ ছবি প্রকাশ করা হয়েছে। সঙ্গে অনেকের ফ্যামিলি কাউন্টিন নম্বরও দেওয়া হয়েছে।
বালুখালী ক্যাম্পে-৮ এর ব্লক মাঝি মোহাম্মদ খলিল বলেন, তাদের গ্রেপ্তার করতে পারলে ক্যাম্পে শান্তি ফিরবে। আমরাও চেষ্টা করছি তাদের ধরিয়ে দিতে। ক্যাম্পের অর্ধেক অপরাধ এদের নিয়ন্ত্রণে চলে। বিভিন্ন সময় মহড়াতেও তাদের দেখেছি। আমরা সরকারকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করছি।
বালুখালী ক্যাম্পের মাঝি রহিম উদ্দিন বলেন, ১৮ ও ১৯ নং ক্যাম্পে এসব পোস্টার দেখা যাচ্ছে। আমরা সরকারকে সহযোগিতা করতে আগ্রহী। আমরা সন্ত্রাসীদের দেখতে পেলে প্রশাসনকে জানাব।
পোস্টার প্রকাশের বিষয়টি নিশ্চিত করে ৮-আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি আমির জাফর বলেন, বিভিন্ন ক্যাম্পে পোস্টার টানানো হয়েছে সেটা সঠিক। তবে তা আমরা প্রকাশ করিনি। পোস্টারে থাকা সন্ত্রাসীরা যদি কোনো মামলার আসামি হয় তাহলে তাদের যেকোনো উপায়ে গ্রেপ্তার করব।
তিনি বলেন, ক্যাম্পের বিভিন্ন স্থানে আমাদের নজরদারি রয়েছে। গোয়েন্দা তৎপরতাও রয়েছে। এমন কোনো খবর আসলে তাদের গ্রেপ্তার করা হবে।