এপ্রিল ২৪, ২০২৪

পবিত্র রমজান আসে নাজাত, রহমত আর মাগফিরাতের বার্তা নিয়ে। এ মাসে ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা ইবাদতে মশগুল হয়ে সান্নিধ্য পেতে চান প্রিয় স্রষ্টার। সারাদিন রোজা থাকা এবং তারাবির নামাজ আদায় এই মাসে যোগ হয় মুসলমানদের কার্যতালিকায়। এদিকে বয়স এবং নানা কারণে জয়েন্টের সমস্যায় ভুগে থাকেন অনেকে। সেক্ষেত্রে সারাদিন রোজা থাকার কারণে কিছুটা দুর্বলতা চলে আসতে পারে। আবার দীর্ঘ সময় নামাজ আদায় করতেও কিছুটা অসুবিধার সম্মুখীন হতে পারেন। এই সমস্যার সমাধানে সচেতন হতে হবে আপনাকেই।

জয়েন্ট পেইন হতে পারে নানা কারণে। অনেকক্ষেত্রে পারিবারিক ইতিহাস থাকলে এই রোগের ঝুঁকি থাকে। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে এই সমস্যা বাড়তে দেখা যায়। এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার বেশি ঝুঁকি থাকে নারীদের ক্ষেত্রে। হরমোনগত কারণে এটি হয়ে থাকে। বিশেষ করে নারীর মেনোটজের সময় বা এর পরে এই সমস্যা বেশি হয়। তবে পুরুষ রোগীর সংখ্যাও কম নয়। অতিরিক্ত ওজনও অনেক সময় জয়েন্টের ব্যথার জন্য দায়ী হতে পারে। জয়েন্টে আঘাত পাওয়ার পূর্ব ইতিহাস থাকলেও পরবর্তীতে ব্যথায় ভুগতে পারেন।

রমজান মাসে সঠিক খাবারের অভাবে এবং চলাফেরায় অবহেলার কারণে অনেকেই জয়েন্টের সমস্যায় ভুগে থাকেন। মানুষের শরীরে সাইনোভিয়াল ফ্লুইড শুকিয়ে গেলে জয়েন্ট শক্ত হয়ে যায়। যার কারণে জয়েন্টের মুভমেন্ট হয়ে যায় কষ্টকর ও বেদনাদায়ক। তাই এই সমস্যা সমাধানে পুষ্টিকর অর্গানিক খাবারের সঙ্গে রাখতে পারেন অর্গানিক ফাংশনাল ফুড। এটি কারকিউমিনযুক্ত হওয়ার কারণে তা স্বাস্থ্যকর উপায়ে শরীরের প্রদাহ কমাতে দ্রুত কাজ করে। দেখতে ওষুধ মনে হলেও এগুলো আসলে এক ধরনের খাবার। যা আপনার প্রতিদিনের গ্রহণকৃত খাবারের পাশাপাশি শরীরে বাড়তি উপকারিতা জোগাবে। অর্গানিক ফাংশনাল ফুড খেলে তা হাড়ের জয়েন্টের কার্টিলেজকে ভেঙে যাওয়া থেকে রক্ষা করবে। সেইসঙ্গে জয়েন্টের ক্ষয়রোধ করে জয়েন্টকে শক্ত ও মজবুত রাখতে কাজ করবে। এ ধরনের ফুড আপনি প্রসিদ্ধ কোনো সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান থেকে পেয়ে যেতে পারেন।

অনেকে বয়স হওয়ার আগেই নিজেকে বয়স্ক ভাবতে শুরু করেন। এমনটা করা যাবে না। শরীরে সমস্যা দেখা দিলে তা খাবার, ঘুম ও শরীরচর্চার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করতে হবে। রমজানে অলস শুয়ে-বসে থাকার অভ্যাস না করে বডি মুভমেন্ট বাড়াতে হবে। দিনভর শক্তি ধরে রাখতে চাইলে খেতে হবে পুষ্টিকর খাবার। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসময় সেহরি ও ইফতারে এড়িয়ে চলতে হবে অস্বাস্থ্যকর, ভাজাপোড়া জাতীয় খাবার। পুষ্টিকর ফল, শাক-সবজি, মাছ ও তরল খাবার রাখতে হবে তালিকায়। এসময় জয়েন্ট ভালো রাখতে এর উপযোগী খাবার খেতে হবে। নিয়মিত হাঁটা ও অন্যান্য শরীরচর্চা রমজানে সম্ভব না হলে যতটা সম্ভব কর্মক্ষম থাকতে হবে। এতে জয়েন্ট পেইনের ভোগান্তি থেকে মুক্তি পাওয়া সহজ হবে।

কিছু খাবার রয়েছে যা জয়েন্ট পেইন বাড়িয়ে দিতে কাজ করে। সে ধরনের খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অতিরিক্ত চিনি খাওয়ার কারণে তা বৃদ্ধি করতে পারে জয়েন্ট পেইন। চিনি বেশি খেয়ে ফেললে বেশি মাত্রায় সাইটোকাইন নিঃসরণ হয়। এ কারণেই বাড়ে জয়েন্টে ব্যথা, জ্বালা ও ফোলাভাব। তাই খাবারের তালিকা থেকে বাদ দিতে হবে অতিরিক্ত চিনি। এক্ষেত্রে আরেকটি ক্ষতিকর খাবার হতে পারে রেডমিট। কারণ এতে থাকে প্রচুর স্যাচুরেটেড ফ্যাট। আপনি যদি ইতিমধ্যে জয়েন্ট পেইনে ভুগে থাকেন তবে কম ফাইবার এবং উচ্চ চর্বিযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। এর পাশাপাশি এড়িয়ে চলতে হবে গ্লুটেনযুক্ত খাবার। গ্লুটেন হলো এক ধরনের আঠালো পদার্থ, যা বেক করার সময় খাবারকে ফেঁপে উঠতে সাহায্য করে। পাউরুটি, পাস্তা, রুটি, কেক, সস, চিপস, বিয়ার এ ধরনের খাবারে থাকে গ্লুটেন। স্নায়ুর তন্তুকে ক্ষতিগ্রস্ত করে অতিরিক্ত গ্লুটেনযুক্ত খাবার। ফলে পেশির নড়াচড়া করার শক্তি বাধাগ্রস্ত হয়। তাই সুস্থ থাকতে এ ধরনের খাবার এড়িয়ে চলাই উত্তম।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *