ফলমূলকে বিলাসি পণ্যে অন্তর্ভুক্ত করায় বছর ব্যবধানে দেশে খেজুরের দাম বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি। উচ্চশুল্কের কারণে আমদানি হচ্ছে চাহিদার তুলনায় নামমাত্র। এতে রমজানে পণ্যটির ভয়াবহ সংকট তৈরির আশঙ্কা আমদানিকারকদের। এ অবস্থায় বাজার ঠিক রাখতে শুল্ক কমানোর সঙ্গে এলসি জটিলতা দূর করার তাগিদ তাদের।
রমজান মাসে খেজুরের চাহিদা বেড়ে যায় অন্য মাসের চেয়ে অন্তত ১২ গুণ। চাহিদার সঙ্গে বাড়ে দামও। অথচ বছর ব্যবধানে এবার এই পণ্যটির দাম এখনই বেড়ে হয়েছে দ্বিগুণ।
রাজধানীর বাজারের সবচেয়ে কম দামি খেজুর হিসেবে পরিচিত জিহাদি ও দাবাস। বর্তমানে প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ২৪০ থেকে সাড়ে ৪০০ টাকায়। বছর ব্যবধানে দাম বেড়েছে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা। শুধু জিহাদি বা দাবাস নয়, সব খেজুরের দামই বেড়েছে।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতিকেজি দাবাস খেজুর ৪৫০ টাকা, জিহাদি খেজুর ২৪০ টাকা, আজওয়া খেজুর ৯০০ টাকা, বরই খেজুর ৪০০ টাকা, মরিয়ম খেজুর ৯০০ টাকা ও মেডজুল খেজুর বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৩০০ টাকা।
ক্রেতারা বলছেন, মাত্রাতিরিক্ত বেড়েছে খেজুরের দাম। যা সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে। রোজার আগেই আকাশচুম্বী এ দাম ভোগাবে পুরো রমজান জুড়েই।
এই দাম বৃদ্ধির জন্য খেজুর আমদানিকারকদের কারসাজিকে দায়ী করছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, পাইকারি পর্যায়ে দাম বাড়ায় এর প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারেও। এতে কমে গেছে বেচাবিক্রি।
তবে এই অভিযোগ মানতে নারাজ আমদানিকারকরা। তারা বলছেন, বিলাসপণ্য বলে এতে ২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক ও ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ, এরসঙ্গে রয়েছে আরডি, এআইটি ও এটি'র বোঝা।
দেশে খেজুরের বার্ষিক চাহিদা প্রায় ১ লাখ মেট্রিক টন। এরমধ্যে শুধু রমজানেই দরকার হয় ৫০ থেকে ৬০ হাজার মেট্রিক টন। এ বছর এখন পর্যন্ত ২৫ হাজার মেট্রিক টনের এলসি খুলতে পেরেছেন ব্যবসায়ীরা; আর আমদানি হয়েছে ১৫ হাজার মেট্রিক টন। পথে রয়েছে ১০ হাজার মেট্রিক টন।
এ অবস্থায় এলসি জটিলতা, শুল্ক বাধা দূর করা না হলে, আসন্ন রমজানে খেজুরের ভয়াবহ সংকট তৈরির আশঙ্কা আমদানিকারকদের।
বাংলাদেশ ফ্রেশ ফ্রুটস ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম বলেন, প্রতিকেজি খেজুর আমদানি করতে শুল্ক দিতে হচ্ছে ২৭৫ থেকে ২৮০ টাকা। পাশপাশি করা যাচ্ছে এলসি। এতে আমদানি কমায় দাম বাড়ছে।
শুল্ক কমাতে কয়েক দফায় ব্যবসায়ীরা দাবি জানালে পদক্ষেপ নেয়ার সুপারিশ করে গত নভেম্বরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে চিঠি দিয়েছিল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। তবে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি এনবিআর।