কয়েক দশক ধরে, পশ্চিম দুনিয়া, বিশেষত যুক্তরাষ্ট্র - নিজেকে নিজেই প্রশ্ন করে আসছে: কীভাবে উত্তর কোরিয়ার মতো সমস্যার সমাধান করা যায়?
উত্তর কোরিয়ার শীর্ষ নেতা কিম জং উন এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বন্ধুত্ব নতুন যুগের সূচনা করায়, পশ্চিমাদের কাছে এখন পিয়ংইয়ংয়ের সঙ্গে আলোচনা এখন আরও জরুরি হয়ে দেখা দিয়েছে। বলে মনে করায় এটি আগের চেয়ে আরও জরুরি হতে পারে। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে আলোচনা শুরুর প্রক্রিয়া ধারণার বাইরে।
উত্তর কোরিয়ার শীর্ষনেতা কিম জং উনের রাশিয়ার সফরের পর মস্কো এবং পিয়ংইয়ং যেসব চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে তার বিশদ বিবরণ খুব কম। তবে সবচেয়ে বড় উদ্বেগ রাশিয়ার প্রযুক্তি ভাগ করে নেওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে, বিশেষ করে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র বা পারমাণবিক সাবমেরিন ব্যবস্থা প্রযুক্তি।
উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে রাশিয়ার ব্যাপারে এখনও উপহাসমূলক মন্তব্য করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ওয়াশিংটন বলেছে, পুতিন এতটাই মরিয়া যে, তিনি একটি ফরিয়া জাতির কাছে সাহায্য ‘ভিক্ষা করছেন’ এবং তাকে ‘টুপি হাতে’ নিজের দেশ ভ্রমণ করতে হয়েছে।
কিন্তু উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে আমেরিকার অর্থনৈতিক যন্ত্রের বাক্সে বেশি কিছু অবশিষ্ট নেই। পররাষ্ট্র দপ্তরের একজন প্রতিবেদক যেমন রসিকতা করে বলেছেন, পিয়ংইয়ংয়ে একটি কোণার দোকান বা দুটি হতে পারে যেগুলিকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়নি। তাহলে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, যিনি চীনকে মোকাবেলায় জোট গঠনে ব্যস্ত রয়েছেন, কীভাবে উত্তর কোরিয়ার নেতাকে টেবিলে আনবেন?
গত বছরের মে মাসে সিউল সফরের সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে সাংবাদিকরা জিজ্ঞাসা করেছিলেন, কিমের জন্য তার কোনো বার্তা আছে কি না। তিনি উত্তর দিয়েছিলেন: ‘হ্যালো। কালচক্র।’
ইউনাইটেড স্টেটস ইনস্টিটিউট অব পিস-এর উত্তর-পূর্ব এশিয়া বিশেষজ্ঞ ফ্রাঙ্ক অম বলেছেন, ‘যদি বাইডেন সত্যিই আলোচনার জন্য উন্মুক্ত ছিলেন, যেমনটা পররাষ্ট্র দপ্তরকে উন্মুক্ত বলে মনে হয়, তাহলে এটি দেখানোর একটি মজার উপায় ছিল।’
বাইডেন সেই সুযোগ হারিয়েছেন উল্লেখ করে ফ্রাঙ্ক বলেন,‘গত সাত দশক ধরে উভয় পক্ষের ক্রমাগত ভুল এবং সুযোগ হাতছাড়া করার ফলে আমাদের আজকের এই জটিল পরিস্থিতির দিকে যেতে হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি আমেরিকা আন্তর্জাতিক চাপ মোকাবেলায় উত্তর কোরিয়া কতটা স্থিতিস্থাপক এবং দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিল তা অবমূল্যায়ন করেছে। বিভিন্ন প্রশাসনের অনেক লোক সম্ভবত উত্তর কোরিয়া ইস্যুটিকে তৃতীয়-স্তরের নিরাপত্তা উদ্বেগ হিসাবে চিহ্নিত করেছে এবং এতে সম্পূর্ণ মনোযোগ দেয়নি। এটির প্রয়োজন ছিল, এর কারণ হিসাবে বলা যায়, তারা হয় একে একটি ছোট দেশ হিসাবে বিবেচনা করেছে কিংবা তাদের মনে হয়েছে উত্তর কোরিয়া ক্রমাগত পতনের দ্বারপ্রান্তে যাচ্ছে।’