মশার কামড় সারাদেশেই এখন মূর্তিমান আতঙ্ক। দেশে যেহেতু এখন ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব চলছে, তাই মশা কামড় দিলে সেটি ডেঙ্গু ভাইরাসের বাহক অ্যাডিস এজিপ্টি মশা কিনা, সবাই সেই আতঙ্কে ভোগেন।
মশার কামড় থেকে বাঁচতে অনেকেই নানা ধরনের প্রাকৃতিক উপায় অবলম্বন করে থাকেন। এর মধ্যে অন্যতম একটি হলো, রসুন। অনেকেরই বিশ্বাস, রসুন খেলে মশা দূরে থাকে। রসুনের তীব্র গন্ধের কারণে মশা তাড়াতে এটিকে জাদুকরী খাবার হিসেবে অ্যাখ্যা দেওয়া হয়। কিন্তু আসলেই কী তাই? এ বিষয়ে গবেষণার ফল কী বলছে, চলুন জেনে নেওয়া যাক।
২০০৭ সালে দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমসের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, রসুন খেলে মশা দূরে থাকার দাবিটি বিজ্ঞানসম্মত নয়। গবেষকরা এ ধরনের কোনো প্রমাণ পাননি। ২০০৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব কানেকটিকাট হেলথ সেন্টারের একদল গবেষক এ বিষয়ে একটি গবেষণা প্রকাশ করেছিলেন। বিজ্ঞানীরা বেশ কিছুদিন একটি গ্রুপকে প্রচুর পরিমাণে রসুন খেতে দেন ও অপর গ্রুপের ওপর প্লাসিবো ইফেক্ট প্রয়োগ করেন এবং উভয় গ্রুপকে মশার সংস্পর্শে রাখেন। গবেষণার রেজাল্টে গবেষকরা উভয় গ্রুপের কাছে মশা ঘেষার সংখ্যা ও মশার কামড়ের সংখ্যা- দুই অবস্থার মধ্যে আলাদা কোনো পার্থক্য দেখতে পাননি।
গবেষকদের মতে, রসুনের অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টিফাঙ্গাল বৈশিষ্ট্য রয়েছে তা একটি পরিচিত সত্য, তবে এখনও কোনো বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই যে, রসুন খাওয়া মশা থেকে রক্ষা করতে পারে।
২০১০ সালে এবিসি নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, অনেকেই বিশ্বাস করেন যে, রসুনের শক্তিশালী পোকামাকড় প্রতিরোধী বৈশিষ্ট্য রয়েছে। কিন্তু মশা নিয়ন্ত্রণ বিশেষজ্ঞদের মতে, রসুনের এই ক্ষমতা খুব শক্তিশালী নয়। এ ব্যাপারে আমেরিকান মসকিউটো কন্ট্রোল অ্যাসোসিয়েশনের টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজার জো কনলন বলেন, ‘কেউ কেউ মনে করেন রসুন খেলে মশা দূরে থাকে কিন্তু গবেষণায় প্রমাণিত হয়নি যে, রসুন খাওয়ার ফলে মশা কামড়ানোর হার কমে যায়। যদিও বেশিরভাগ পৌরাণিক কাহিনির মতো, রসুনের গল্পেও সত্যের একটি উপাদান রয়েছে। যেমন: আপনি যদি আপনার ত্বকের কোনো অংশ রসুনের রস লাগান, তাহলে ত্বকের সেই অংশটি প্রায় ২০-৪০ মিনিটের জন্য মশাকে দূরে রাখতে পারে।’