ব্যাংকে না গিয়ে কার্ডের মাধ্যমে টাকা জমা ও তুলতে পারেন গ্রাহকেরা। দিন যত যাচ্ছে ব্যাংকের কার্ড তত জনপ্রিয় হচ্ছে। এর মাধ্যমে অনলাইন ও ক্যাশলেস লেনদেন খুব সহজেই করা যায়। ফলে কার্ডে গ্রাহক ও লেনদেনের পরিমাণও বাড়ছে।
চলতি বছরের মে মাসে বিভিন্ন ব্যাংকের কার্ডের বিপরীতে মোট ৪২ হাজার ১২১ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। একই মাসে ব্যাংকগুলোর ইস্যু করা মোট কার্ডের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩ কোটি ৮০ লাখ।
সম্প্রতি বাংলাদেশ প্রকাশিত ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের মে পর্যন্ত সময়ে ব্যাংকগুলোর ইস্যু করা মোট কার্ডের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩ কোটি ৮০ লাখ। গত বছরের একই সময়ে যা ছিল ৩ কোটি সাড়ে ৭ লাখ। এক বছর আগের তুলনায় বেড়েছে ৭২ লাখ বা সাড়ে ২৩ শতাংশ। এই মাসে বিভিন্ন ব্যাংকের এসব কার্ডের বিপরীতে মোট ৪২ হাজার ১২১ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। আগের বছরের একই মাসের তুলনায় যা ১৩ হাজার ৩৪৪ কোটি টাকা বেশি।
মোট কার্ডের মধ্যে ডেবিট কার্ড রয়েছে ৩ কোটি ১৭ লাখের বেশি। ক্রেডিট কার্ড রয়েছে ২২ লাখ ১৬ হাজার। আর প্রিপেইড কার্ড রয়েছে ৪০ লাখ ৩৭ হাজার। গত মে পর্যন্ত সারাদেশে এটিএম বুথের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজার ৬৫৮টি। এসব বুথের মাধ্যমে লেনদেনের পরিমাণ ছিল ২৯ হাজার ৮৩৮ কোটি টাকা।
এছাড়া প্রায় ১ লাখ ৬ হাজার ৮১৬ পয়েন্ট অব সেলসের (পিওএস) মাধ্যমে লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ৫৭৭ কোটি টাকা। আর ৩ হাজার ২১১টি ক্যাশ রিসাইকেলিং মেশিনের (সিআরএম) বিপরীতে লেনদেন হয়েছে ৮ হাজার ৪৩৭ কোটি টাকা। অপরদিকে ই-কমার্সে পরিশোধ হয়েছে ১ হাজার ২৭০ কোটি টাকা।
ডিজিটাল লেনদেনে আগ্রহী করতে বাংলাদেশ ব্যাংক বিভিন্ন ব্যবস্থা নিয়েছে। ক্যাশলেস লেনদেন আরও এগিয়ে নিতে কিউআর কোডভিত্তিক লেনদেন উৎসাহিত করা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্ল্যাটফর্ম ‘বাংলা কিউআর’ ব্যবহার করে এক ব্যাংক বা এমএফএস থেকে আরেক প্রতিষ্ঠানের গ্রাহক টাকা পরিশোধ করতে পারছেন। বিশেষ করে ফুটপাথ বা ভ্রাম্যমাণ দোকানিরা কিউআরে বিল নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন।
এদিকে দেশে ডিজিটাল ব্যাংক চালুর উদ্যোগ গ্রহণ করেছে সরকার। এ লক্ষ্যে ইতিমধ্যে আবেদন গ্রহণও শুরু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর সকল কাজ হবে প্রযুক্তি নির্ভর। ব্যাংকটি আমানত গ্রহণ, ঋণ দেয়া থেকে অন্যান্য সব কাজই করবে।
প্রচলিত ব্যাংকগুলোতে এখনো টাকা লেনদেন, হিসাব দেখার মতো কিছু সেবা ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে করা যায়। কিন্তু নতুন যে ব্যাংক চালুর কথা হচ্ছে, সেখানে সকল কাজ হবে প্রযুক্তি নির্ভর। ব্যাংকটি আমানত গ্রহণ, ঋণ দেয়া থেকে অন্যান্য সকল কাজই করবে। ডিজিটাল ব্যাংক ছোট আকারের ঋণ দিতে পারবে তবে বড় বা মাঝারি শিল্পে কোনো ঋণ দিতে পারবে না। বৈদেশিক বাণিজ্যের লেনদেনের জন্য ঋণপত্রও খুলতে পারবে না এসব ব্যাংক। প্রযুক্তিনির্ভর সেবা হওয়ায় এসব ব্যাংকের কোনো কোনো সেবা দিন-রাত ২৪ ঘণ্টাই পাওয়া যাবে।