পূর্ব আফ্রিকার দেশ বুরুন্ডিতে বিদ্রোহীদের হামলায় কমপক্ষে ২০ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে শিশু ও গর্ভবতী নারীরাও রয়েছেন। হামলায় আহত হয়েছেন আরও ৯ জন।
আফ্রিকার এই দেশটির পশ্চিমাঞ্চলে বন্দুকধারীরা হামলা চালানোর পর প্রাণহানির এই ঘটনা ঘটে। রোববার (২৪ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোর (ডিআরসি) সাথে বুরুন্ডির পশ্চিম সীমান্তের কাছে বন্দুকধারীদের হামলায় কমপক্ষে ২০ জন নিহত এবং নয়জন আহত হয়েছেন বলে একজন কর্মকর্তা সাংবাদিকদের বলেছেন।
শুক্রবার সন্ধ্যায় দেশটির ভুগিজো শহরে ওই অভিযানে নিহতদের মধ্যে ১২ শিশু, দুই গর্ভবতী নারী এবং একজন পুলিশ কর্মকর্তা রয়েছেন বলে শনিবার সরকারের মুখপাত্র জেরোম নিওনজিমা জানিয়েছেন।
রেড-তাবারা বিদ্রোহী গোষ্ঠী এই হামলার দায় স্বীকার করেছে। বুরুন্ডিয়ান কর্তৃপক্ষের কাছে তারা ‘সন্ত্রাসী’ গোষ্ঠী হিসাবে বিবেচিত। টাঙ্গানিকা হ্রদের কাছাকাছি শহরের নয়টি বাড়ি লক্ষ্য করে তারা হামলা চালায়। হামলায় আহত অন্তত নয়জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
রেড-তাবারা বিদ্রোহী গোষ্ঠী ২০১৫ সাল থেকে পূর্ব ডিআরসিতে অবস্থিত ঘাঁটি থেকে বুরুন্ডি সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে এই গোষ্ঠীটি নয়জন সৈন্য এবং একজন পুলিশ অফিসারকে হত্যা করার দাবি করেছে।
তবে গোষ্ঠীটি বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্যবস্তু করার কথা অস্বীকার করেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, হামলার সময় তারা গুলি ও বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের কয়েকজন অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের সাথে কথা বলার সময় বলেছেন, বিদ্রোহীরা বুরুন্ডিয়ান আর্মির ইউনিফর্ম পরা ছিল এবং সামরিক ও পুলিশ পালিয়ে যাওয়ার পরে বেসামরিক ব্যক্তিরা ‘অসহায় অবস্থার মধ্যে পড়ে যায়’।
প্রিসিল কানয়াঞ্জ নামে একজন কৃষক বলেছেন, ‘সীমান্ত পাহারাদার পুলিশের অবস্থানে আক্রমণ হওয়ার পরই আমরা বুঝতে পেরেছিলাম তারা আক্রমণকারী ছিল। পালানোর চেষ্টা করার সময় এখানে অনেক লোক গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন।’
ইনোসেন্ট হাজায়ান্দি নামে আরেকজন কৃষক ও হামলার প্রত্যক্ষদর্শী বলেছেন, নিরাপত্তা বাহিনী পালিয়ে গিয়েছিল।
দুটিসামরিক ও নিরাপত্তা সূত্র বার্তাসংস্থা এএফপিকে জানিয়েছে, ‘একটি সামরিক অবস্থান’ লক্ষ্য করে এই হামলাটি চালানো হয়। একজন সিনিয়র সামরিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে হামলায় ২০ জনের প্রাণহানির তথ্য নিশ্চিত করেছেন এএফপিকে।
উল্লেখ্য, ২০১১ সালে গঠিত হওয়া রেড-তারাবা গোষ্ঠীর ৫০০ থেকে ৮০০ যোদ্ধা রয়েছে বলে ধারণা করা হয় এবং ২০১৫ সাল থেকে বুরুন্ডিতে হওয়া অধিকাংশ মারাত্মক হামলার জন্য তারাই দায়ী।
গোষ্ঠীটি এক্সে দেওয়া এক বার্তায় ‘সারা দেশে কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে’।