জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর জানিয়েছে, সারা বিশ্বে ২০২৩ সালে রেকর্ড ১১ কোটি ৭০ লাখ ৩০ হাজার মানুষ জোরপূর্বকভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছে। বৈশ্বিক পর্যায়ে বড় ধরনের ইতিবাচক রাজনৈতিক পরিবর্তন ছাড়া এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে সতর্ক করেছে সংস্থাটি। খবর আরব নিউজের।
ইউএনএইচসিআর-এর হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডি বলেন, বাস্তুহারাদের মধ্যে রয়েছেন শরণার্থী, আশ্রয়প্রার্থী ও অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত মানুষ। সেই সঙ্গে রয়েছেন সেসব মানুষ যারা সংঘর্ষ, নিপীড়ন এবং বিভিন্ন ক্রমবর্ধমান জটিল সহিংসতার কারণে জোরপূর্বক বাসস্থান ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। এতে উদ্বেগ প্রকাশ করে সংস্থার প্রধান ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডি আরও বলেন, সংঘাত-সহিংসতা হচ্ছে বাস্তুচ্যুতির অন্যতম কারণ। মানুষে মানুষে ও জাতিগত সহিংসতা বেড়েই চলেছে। এতে বাস্তুচ্যুতের সংখ্যাও বেড়েই চলেছে। লাখ লাখ মানুষ বাড়ি ছাড়া হচ্ছে। যুদ্ধ, নিপীড়ন, বৈষম্য ও জলবায়ু পরিবর্তনের মতো কারণগুলোকেও দায়ী করেছেন জাতিসংঘের এই কর্মকর্তা।
জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতির বৈশ্বিক প্রবণতা সম্পর্কিত সবশেষ বার্ষিক প্রতিবেদনের বরাতে তিনি বলেন, গত ১২ বছরে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা বছর বছর বাড়ছে।
এর আগে, ২০২২ সালে বিশ্বজুড়ে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতের সংখ্যা হয়েছিল ১১ কোটি। ইউএনএইচসিআর জানিয়েছে, ইউক্রেনে রাশিয়ার চলমান যুদ্ধ, আফগানিস্তান সংকট এবং সুদানের গৃহযুদ্ধের কারণে সেই বছর শরণার্থীর মোট সংখ্যা কয়েক গুণ বেড়ে যায়। এদের অনেকে অভ্যন্তরীণভাবে নিজ দেশেও বাস্তুচ্যুত হয়েছে। সংস্থাটির বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২২ সালজুড়ে রেকর্ডসংখ্যক মানুষ বাস্তুহারা হয়। যুদ্ধ-সহিংসতায় নিজ দেশ ও ঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন প্রায় ১ কোটি ৯০ লাখ মানুষ। ইউএনএইচসিআর তার গ্লোবাল ট্রেন্ডস ইন ফোর্সড ডিসপ্লেসমেন্ট নামক বার্ষিক প্রতিবেদনে এসেছে, ২০২২ সালের শেষ নাগাদ ১০ কোটি ৮৪ লাখ লোক বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
২০২১ সালের তুলনায় এ সংখ্যা ১ কোটি ৯১ লাখ বেশি। ইউক্রেন ও সুদান সংঘাতে লাখ লাখ উদ্বাস্তু নতুন করে যোগ হওয়ায় বিশ্বজুড়ে ২০২২ সালে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতের সংখ্যা বেড়ে ১১ কোটিতে পৌঁছায়।