দক্ষিণ আমেরিকার দেশ কলম্বিয়ায় বিমান দুর্ঘটনার প্রায় তিন সপ্তাহ পর চার শিশুকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধারকৃত ওই চার শিশুর মধ্যে ১১ মাস বয়সী এক শিশুও রয়েছে। দক্ষিণ আমেরিকার এই দেশটির দক্ষিণাঞ্চলে ঘন জঙ্গলের ভেতর থেকে তাদের উদ্ধার করা হয়।
কলম্বিয়ায় প্রেসিডেন্টের বরাত দিয়ে বৃহস্পতিবার (১৮ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিমান দুর্ঘটনার দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় পর কলম্বিয়ার একটি আদিবাসী সম্প্রদায়ের চার শিশুকে দেশটির দক্ষিণের জঙ্গল থেকে জীবিত পাওয়া গেছে বলে বুধবার জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেট্রো। গত ১ মে এই বিমানটি ঘন জঙ্গলে বিধ্বস্ত হয়েছিল।
রয়টার্স বলছে, কলম্বিয়ার কাকুয়েটা প্রদেশের ঘন জঙ্গলে সামরিক বাহিনীর সদস্য, দমকলকর্মী এবং বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠিত দল শিশুদের উদ্ধার করে। উদ্ধারকৃত শিশুদের মধ্যে ১১ মাস বয়সী এক শিশুও রয়েছে।
বার্তাসংস্থাটি বলছে, সেসনা ২০৬ মডেলের এই বিমানটি গত ১ মে কলম্বিয়ার আমাজোনাস প্রদেশের আরাকুয়ারা থেকে সাতজন আরোহী নিয়ে গুয়াভিয়ার প্রদেশের সান জোসে দেল গুয়াভিয়ার শহরে যাচ্ছিল। মাঝ আকাশে থাকা অবস্থায় বিমানটির ইঞ্জিন ব্যর্থতার মুখে পড়ে এবং বিপদ বুঝতে পেরে বিমানটি থেকে থেকে মে-ডে সতর্কতা জারি করা হয়।
প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেট্রো টুইটারে দেওয়া এক বার্তায় বলেছেন, ‘আমাদের সেনাবাহিনীর কঠোর অনুসন্ধানের পর আমরা গুয়াভিয়ারে বিমান দুর্ঘটনায় নিখোঁজ চার শিশুকে জীবিত পেয়েছি।’
রয়টার্স বলছে, দুর্ঘটনার ফলে পাইলটসহ তিনজন প্রাপ্তবয়স্ক নিহত হয়েছিলেন এবং তাদের মৃতদেহ বিমানের ভেতরে পাওয়া যায়। আর ১৩, ৯ এবং ৪ বছর বয়সী তিন শিশুর সঙ্গে ১১ মাস বয়সী এক শিশুও এই দুর্ঘটনায় বেঁচে যায়।
এই উদ্ধার প্রচেষ্টার সমন্বয় করেছে কলম্বিয়ার বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ। তাদের প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, দুর্ঘটনার পর এই শিশুরা বিমান থেকে পালিয়ে গিয়েছিল এবং সাহায্যের খোঁজে জঙ্গলের ভেতরে ঘোরাঘুরি শুরু করে।
এছাড়া শিশুদের খোঁজ পাওয়ার আগে জঙ্গলে তাদের বেঁচে থাকার জন্য খেয়ে ফেলে দেওয়া ফলের অবশিষ্টাংশ এবং সেইসাথে জঙ্গলের গাছপালা দিয়ে তৈরি করা উন্নত আশ্রয়ও খুঁজে পেয়েছিল উদ্ধারকারীরা।
কলম্বিয়ার সেনাবাহিনী এবং বিমান বাহিনীর বিমান ও হেলিকপ্টার এই উদ্ধার অভিযানে অংশ নেয় বলেও জানিয়েছে রয়টার্স।